আপনজন ডেস্ক: ন্যাশনাল কাউন্সিল অফ এডুকেশনাল রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিং (এনসিইআরটি) স্কুল পাঠ্যক্রম সংশোধনের জন্য গঠিত সামাজিক বিজ্ঞানের জন্য একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটি সুপারিশ করেছে,সমস্ত শ্রেণির স্কুল পাঠ্যপুস্তকে দেশের নাম ‘ইন্ডিয়া’র এর পরিবর্তে ‘ভারত’ ব্যবহার করা উচিত। এনসিইআরটি কমিটির চেয়ারপার্সন সি আই আইজ্যাকের মতে, প্যানেল পাঠ্যপুস্তকে ‘ইন্ডিয়া’ নামের স্থানে ‘ভারত’ দিয়ে প্রতিস্থাপন করার, পাঠ্যসূচিতে ‘প্রাচীন ইতিহাস’ এর পরিবর্তে ‘ধ্রুপদী ইতিহাস’ অন্তর্ভুক্ত করার এবং সমস্ত বিষয়ের সিলেবাসে ভারতীয় জ্ঞান ব্যবস্থা (আইকেএস) অন্তর্ভুক্ত করার পরামর্শ দিয়েছে। এনসিইআরটি চেয়ারম্যান দীনেশ সাকলানি অবশ্য বলেছেন, প্যানেলের সুপারিশের বিষয়ে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।
আইজ্যাক বলেন, কমিটি সর্বসম্মতিক্রমে সুপারিশ করেছে সমস্ত শ্রেণির পাঠ্যপুস্তকে ‘ভারত’ নামটি ব্যবহার করা উচিত। আমরা পাঠ্যপুস্তকে প্রাচীন ইতিহাসের পরিবর্তে ধ্রুপদী ইতিহাস অন্তর্ভুক্ত করার ও সুপারিশ করেছি। তিনি বলেন, ভারত একটি প্রাচীন নাম। ভারত নামটি বিষ্ণু পুরাণের মতো প্রাচীন গ্রন্থগুলিতে ব্যবহৃত হয়েছে, যা ৭,০০০ বছরের পুরনো। উল্লেখ্য, সম্প্রতি ভারত নামটি নিয়ে প্রথম বিতর্ক সৃষ্টি হয় যখন কেন্দ্রীয় সরকার জি ২০ সম্মেলনের আমন্ত্রণ পত্রে ‘প্রেসিডেন্ট অফ ইন্ডিয়া’-র পরিবর্তে ‘প্রেসিডেন্ট অফ ভারত’ লেখা হয়েছিল। পরে নয়াদিল্লিতে শীর্ষ সম্মেলনের সময় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নামফলকে ইন্ডিয়া-র পরিবর্তে ‘ভারত’ লেখা ছিল। আইজ্যাক যিনি ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ হিস্টোরিকাল রিসার্চের সদস্যও তিনি বলেন, কমিটি পাঠ্যপুস্তকে বিভিন্ন যুদ্ধে ‘হিন্দু বিজয়’ তুলে ধরার সুপারিশ করেছে। তিনি বলেন, ‘বর্তমানে পাঠ্যপুস্তকে আমাদের ব্যর্থতার কথা বলা হয়েছে, কিন্তু মুঘল ও সুলতানদের বিরুদ্ধে আমাদের বিজয়ের কথা বলা হয়নি। ব্রিটিশরা ভারতীয় ইতিহাসকে তিনটি পর্যায়ে বিভক্ত করেছিল - প্রাচীন, মধ্যযুগীয় এবং আধুনিক, যাতে যথাক্রমে অন্ধকার যুগ, বৈজ্ঞানিক জ্ঞানের অজ্ঞতা এবং অগ্রগতিকে বোঝানো হযেছে। সুতরাং, আমরা পরামর্শ দিয়েছি যে মধ্যযুগীয় এবং আধুনিক যুগের পাশাপাশি স্কুলগুলিতে ভারতীয় ইতিহাসের ধ্রুপদী সময়কাল পড়ানো উচিত। এনসিইআরটি জাতীয় শিক্ষা নীতির ২০২০ এর সাথে সামঞ্জস্য রেখে স্কুল পাঠ্যপুস্তকের পাঠ্যক্রম সংশোধন করছে। এই ক্লাসগুলির পাঠ্যক্রম, পাঠ্যপুস্তক এবং শেখার উপাদানগুলি চূড়ান্ত করার জন্য কাউন্সিল সম্প্রতি ১৯ সদস্যের একটি জাতীয় সিলেবাস এবং শিক্ষণ উপাদান কমিটি (এনএসটিসি) গঠন করেছে। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন আইসিএইচআর চেয়ারপার্সন রঘুবেন্দ্র তানওয়ার, জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক বন্দনা মিশ্র, ডেকান কলেজ ডিমড ইউনিভার্সিটির প্রাক্তন উপাচার্য বসন্ত শিন্ডে এবং হরিয়ানার একটি সরকারি স্কুলে সমাজবিজ্ঞানের শিক্ষক মমতা যাদব।
All Rights Reserved © Copyright 2025 | Design & Developed by Webguys Direct