আপনজন ডেস্ক: হার্টে ব্লকেজ বা হৃৎস্পন্দনের গতিতে অসঙ্গতি ধরা পড়লে বুকের চামড়া কেটে হৃৎপিণ্ডের পাশে বসানো হয় পেসমেকার। তবে এখন থেকে কোনো কাটাছেঁড়া না করেই করা যাবে এই অস্ত্রোপচার। জীবন বাঁচাবে ২ ইঞ্চির ‘লিডলেস’ পেসমেকার। এই যন্ত্র ব্যবহারে মিলবে আরও বেশ কিছু সুবিধা।
মাত্র ইঞ্চি দুয়েক লম্বা যন্ত্রটি সটান গলার শিরা দিয়ে ঢুকিয়ে দেওয়া হবে হার্টে। বুকের চামড়া না কেটেই অস্ত্রোপচার করবেন চিকিৎসকেরা। এমনই বিরল অস্ত্রোপচার হয়েছে মুম্বাইয়ে। প্রথমবার ভারতে এমন পেসমেকার বসানো হয়েছে ৯২ বছরের এক মহিলার হার্টে। অস্ত্রোপচারের পরে তার শরীরেও কোনো জটিলতা দেখা যায়নি।
সাধারণত, হার্টে ব্লকেজ হলে বুকের চামড়া কেটে হৃৎপিণ্ডের পাশে বসানো হয় পেসমেকার। স্পন্দন উৎপাদনকারী যন্ত্রের সঙ্গে হৃৎপিণ্ডের সংযোগ রক্ষার জন্য থাকে একাধিক তার বা লিড। এই প্রথম বার এমন ধরনের পেসমেকার বসালেন চিকিৎসকেরা, যাতে কোনও তার বা লিডই নেই। বিশেষ পদ্ধতিতে গলার কাছে ছোট্ট একটি ছিদ্র করে তার মধ্যে দিয়েই সরাসরি ঢুকিয়ে দেওয়া হবে পেসমেকারটি। প্রয়োজন হবে না লিডের জটিলতার। অস্ত্রোপচারের পরেও কোনও রকম যন্ত্রণা অনুভব করবেন না রোগী।
এলিজাবেথ ফিজার্ডো নামে ওই মহিলার হার্টে ব্লকেজ ধরা পড়েছিল। হাঁটাচলা করার সময় শ্বাসকষ্ট হত তার। চিকিৎসকেরা পরীক্ষা করে দেখে পেসমেকার বসানোরই সিদ্ধান্ত নেন। তবে, নবতিপর মহিলার বুকের চামড়া কেটে পেসমেকার বসানোর ঝুঁকি অনেক। তাই ‘লিডলেস পেসমেকার’ বেছে নেন চিকিৎসকেরা। কারণ একমাত্র এই ধরনের পেসমেকারই কোনও রকম কাটাছেঁড়া ছাড়াই ‘মিনিমাল ইনভেসিভ’ পদ্ধতিতে হার্ট অবধি পৌঁছে দেওয়া সম্ভব।
মুম্বাইয়ের এসএল রাহেজা হাসপাতালে অস্ত্রোপচারটি হয়েছে। ওই হাসপাতালে ইন্ট্রাভেনশনাল অ্যান্ড স্ট্রাকচারাল কার্ডিয়োলজি বিভাগের ডিরেক্টর চিকিৎসক হরেশ মেহতা বলেন, ‘লিডলেস পেসমেকার রোগীদের পক্ষে অনেকটা বেশি নিরাপদ হবে, কারণ, আগেকার পেসমেকারগুলির মতো বুকের চামড়া কেটে অস্ত্রোপচার করে বসাতে হবে না এই যন্ত্র। কোনও লিড না থাকায় অধিকতর স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারবেন পেসমেকার ব্যবহারকারীরা। গাড়ি চালাতে, সাঁতার কাটতেও কোনও সমস্যা হবে না।’ তিনি আরও জানান, ব্যাটারিচালিত এই পেসমেকারের জটিলতা অনেক কম।
All Rights Reserved © Copyright 2025 | Design & Developed by Webguys Direct