আপনজন ডেস্ক: রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ চলছে তিন বছরের বেশি সময় ধরে। নানা আলোচনা, উদ্যোগের পরও যুদ্ধ আপাতত থামার কোনো ইঙ্গিতও পাওয়া যাচ্ছে না। এই যুদ্ধ শুরু করে রুশরা আন্তর্জাতিক ফুটবল থেকেও নিষিদ্ধ হয়েছে।
২০১৮ বিশ্বকাপের স্বাগতিকেরা নেই ২০২৬ বিশ্বকাপের বাছাইপর্বেও। তবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মনে করেন, ২০২৬ বিশ্বকাপ ফুটবলকে ‘টোপ’ বানিয়ে রাশিয়াকে যুদ্ধ থেকে বিরত করা যেতে পারে।
২০২২ সালে ইউক্রেনে হামলা শুরু করে রাশিয়া। তখন থেকেই রাশিয়ার জাতীয় ফুটবল দলকে আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা থেকে নিষিদ্ধ করেছে ফিফা ও উয়েফা। স্বাভাবিকভাবেই যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও মেক্সিকোতে হতে যাওয়া ২০২৬ বিশ্বকাপে থাকছে না রাশিয়া। ২০২৬ বিশ্বকাপ আয়োজনে গঠিত টাস্কফোর্সের প্রথম মিটিংয়ের পর সংবাদ সম্মেলনে কথাগুলো বলেন ট্রাম্প। সেখানে উপস্থিত ছিলেন ফিফা সভাপতি জিয়ান্নি ইনফান্তিনো। রাশিয়া যে ফুটবলে এখন নিষিদ্ধ, সেটি ট্রাম্প প্রথম জেনেছেন এই মিটিংয়েই। সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্প বলেন, ‘আমি এটা জানতাম না, সত্যি? (রাশিয়া নিষিদ্ধ)।’ ইনফান্তিনো বলেন, ‘হ্যাঁ, এটা সত্য। তারা আপাতত নিষিদ্ধ, তবে আমরা আশা করি, শান্তি ফিরে আসবে, যাতে রাশিয়াকে আবার ফুটবলে ফেরানো যায়।’ এরপর ট্রাম্প বলেন, ‘এটা তো সম্ভব। এটা তো একটা ভালো প্রণোদনা হতে পারে, তা–ই না? আমরা চাই, তারা থামুক। প্রতি সপ্তাহে পাঁচ হাজার তরুণ মারা যাচ্ছে—এটা অবিশ্বাস্য।’ প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সময়েই রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ থামানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন ট্রাম্প। যদিও শপথ নেওয়ার পাঁচ মাস পরও এমন কোনো ইঙ্গিত মিলছে না। এমন অবস্থাতেই ট্রাম্পের কাছ থেকে এসেছে এমন প্রস্তাব। গত মাসে উয়েফা সভাপতি আলেক্সান্ডার সেফেরিনও আশ্বাস দিয়েছেন, যুদ্ধ শেষেই রাশিয়া ফিরবে ফুটবলে ‘যখন যুদ্ধ শেষ হবে, তখন (রাশিয়া) আবার ফিরবে।’ যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স সমর্থকদের আরও একবার মনে করিয়ে দিয়েছেন, খেলা দেখতে আসা দর্শকদের নিজেদের দেশে ফিরতে হবে। রাশিয়া ২০২১ সালের নভেম্বর মাসে ক্রোয়েশিয়ার কাছে ২০২২ বিশ্বকাপের বাছাইপর্বে হারের পর থেকে কোনো প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচ খেলেনি। দলটি এরপর ১৬টি প্রীতি ম্যাচ খেলেছে, যার মধ্যে ১১টিতে জিতেছে। যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বকাপের ১০৪টি ম্যাচের মধ্যে ৭৮টিই ম্যাচ আয়োজন করবে। এর মধ্যে আছে ফাইনালও। তবে যুক্তরাষ্ট্রের কঠোর অভিবাসননীতি ও বৈশ্বিক রাজনৈতিক উত্তেজনা আন্তর্জাতিক দর্শকদের আগমন ব্যাপকভাবে ব্যাহত করতে পারে বলে সতর্ক করেছে ওয়ার্ল্ড ট্যুরিজম ফোরাম ইনস্টিটিউট। তবে ট্রাম্প প্রশাসন এসবে খুব একটা পাত্তা দিচ্ছে না। টাস্কফোর্সের বৈঠকে উপস্থিত থাকা যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স সমর্থকদের আরও একবার মনে করিয়ে দিয়েছেন, খেলা দেখতে আসা দর্শকদের নিজেদের দেশে ফিরতে হবে।
ভ্যান্স বলেন, ‘আমি জানি, আমরা দর্শক পাব, সম্ভবত ১০০টি দেশের কাছাকাছি। আমরা চাই, তারা আসুক। আমরা চাই, তারা উদ্যাপন করুক। আমরা চাই, তারা খেলা দেখুক। কিন্তু সময় শেষ হলে, তাদের বাড়ি ফিরে যেতে হবে।’
আগামী মাসে যুক্তরাষ্ট্রে হবে ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপ। এটি হবে যুক্তরাষ্ট্রের ১২টি স্টেডিয়ামে। এই টুর্নামেন্টের জন্য প্রায় দুই মিলিয়ন বিদেশি দর্শনার্থীর প্রত্যাশা করা হচ্ছে, ‘আমরা ভ্রমণ নথি এবং ভিসা আবেদনগুলো এরই মধ্যে যাচাই–বাছাই করছি’ বলেছেন হোমল্যান্ড সিকিউরিটি সেক্রেটারি ক্রিস্টি নোয়েম।
ক্রিস্টি নোয়েম আরও বলেন, ‘এটা স্পষ্টতই একটি পূর্বাভাস, যা আমাদের দেখাবে, আমরা আগামী বছর বিশ্বকাপের জন্য কী করতে পারি। সবকিছুই সমন্বিতভাবে করা হচ্ছে।’
All Rights Reserved © Copyright 2025 | Design & Developed by Webguys Direct