আপনজন ডেস্ক: কেন্দ্রীয় সরকারের বাজেট শিক্ষাক্ষেত্রে নিরপেক্ষ উন্নয়ন এবং প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর চাহিদা মেটাতে ব্যর্থ হয়েছে. এই অভিযোগ করল ছাত্র সংগঠন ইসলামিক স্টুডেন্ট অর্গানাইজেশন বা এসআইও। এক প্রেস বিবৃতিতে এসআইও বলেছে, করোনা কালে দীর্ঘকালীন স্কুল এবং কলেজ বন্ধ থাকার কারণে শিক্ষার্থীদের জ্ঞানে ব্যাপক ঘাটতি হয়েছে যা এখনো তাদের ভোগাচ্ছে। বাজেট শিক্ষা ক্ষেত্রে এই ফাটলগুলো পূরণ করতেও ব্যর্থ হয়েছে। এসআইও বলেছে, শিক্ষা বাজেট অল্প বৃদ্ধি হয়েছে যা প্রশংসনীয়, তবুও কোঠারি কমিশন এবং জাতীয় শিক্ষা নীতি ২০২০ -এর সুপারিশ অনুযায়ী যা জিডিপির ৬% বরাদ্দ হওয়ার কথা তার চেয়ে কমই। ২০১৯ সাল থেকে, শিক্ষাখাতে জিডিপির অনুপাত ২.৯% -এ অপরিবর্তিত রয়েছে। যদিও গত দুই অর্থবছরে শিক্ষা খাতে সরকার প্রত্যাশার চেয়ে কম খরচ করেছে। এসআইওর অভিযোগ, সংখ্যালঘুদের স্কলারশিপের ক্ষেত্রে, মেরিট্-কাম-মিন্স বৃত্তির তহবিল ব্যাপক কাটছাঁট করে ৩৬৫ কোটি থেকে মাত্র ৪৪ কোটিতে সিমাবদ্ধ করা হল। প্রি-মেট্রিক এবং এমএএনএফ স্কলারশিপ বাদ দেওয়ার পরেও এই সিদ্ধান্ত একটি নির্মম মনোভাবের পরিচয় দেয়। এটি শিক্ষার অধিকার ও সংখ্যালঘুদের মর্যাদার উপর একটি আক্রমণ ছাড়া কিছুই নয়। পূর্ববর্তী বাজেটে প্রি-মেট্রিক স্কলারশিপের জন্য ৯০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করার পরেও সেগুলি বাতিল করা হয়, এটি সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্ব প্রদর্শন করে। পূর্ববর্তী বাজেটের তুলনায় মাদ্রাসাগুলির জন্য তহবিলের ব্যাপক ঘাটতি সংখ্যালঘুদের ও তাদের শিক্ষার উন্নয়নের প্রতি সরকারের সুস্পষ্ট আপত্তিকর এজেন্ডার চিত্র তুলে ধরে।
এসআইওর আরও বক্তব্য, উস্তাদ ও ‘নয়ী-মঞ্জিলের’ মতো দক্ষতা উন্নয়ন কর্মসূচির বাজেট কোটির ঘর থেকে কমে মাত্র ১০ লাখ টাকায় নেমে এসেছে। গবেষণামূলক কার্যক্রম এবং সংখ্যালঘুদের জন্য বিনামূল্যে কোচিংয়ের জন্য বরাদ্দ করা বাজেটও আগের বাজেটের থেকে ৫০% হ্রাস পেয়েছে, যা সরকারের উদাসীনতার পরিচয় দেয়। স্কুল শিক্ষার জন্য বরাদ্দকৃত তহবিল বৃদ্ধি প্রশংসনীয় হলেও উচ্চশিক্ষা, গবেষণা ও উন্নয়নের জন্য বরাদ্দকৃত পরিমাণ সঠিকভাবে সুরাহা করা হয়নি, যা ছাত্রছাত্রীদের পরিপূর্ণ গঠনের জন্য সংকটময় এবং বিপুল সংখ্যক ছাত্র- যুবকদের বিদেশে পাড়ি দিতে পরিচালিত করে।কেন্দ্রীয় বিদ্যালয় গুলিতে বরাদ্দের পরিমাণ সাধারণ সরকারি স্কুলগুলিতে বরাদ্দকৃত তহবিলের চেয়ে ২০০ গুণ বেশি, যা একটি স্পষ্ট দ্বিচারিতা দেখায়। শিক্ষায় সমতা এবং সমানাধিকারের উপর প্রশ্ন উত্থাপন করে। এসআইও নার্সিং কলেজ বাড়ানোর সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানায়, তবে বিদ্যমান কলেজগুলিতেও আধুনিক সরঞ্জাম যোগান দিয়ে উৎকৃষ্ট করার জন্য রসদ থাকা উচিত। শিক্ষকদের জন্য জেলা প্রশিক্ষণ কেন্দ্র এবং ডিজিটাল ও অফলাইন লাইব্রেরি একটি ভালো পদক্ষেপ, কিন্তু তাদের বাস্তবায়ন নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। আর বর্তমান বাজেটে বেকারত্বের ক্রমবর্ধমান প্রশ্নে কোনো দৃঢ় ও সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ নেই। এসআইও বিশ্বাস করে যে সংখ্যালঘু-শিক্ষা বাজেট সংখ্যালঘুদের প্রতি একটি স্পষ্ট অবিচার এবং কেন্দ্রীয় সরকার তাদের উন্নয়নের প্রতি ভ্রুক্ষেপ করেনি। এই অদূরদর্শী দৃষ্টিভঙ্গি দেশের ন্যায়সঙ্গত, নিরপেক্ষ ও সমতাপূর্ণ উন্নয়নের জন্য শুভলক্ষণ নয়।
All Rights Reserved © Copyright 2025 | Design & Developed by Webguys Direct