এম মেহেদী সানি, কলকাতা, আপনজন: উচ্চ মাধ্যমিকের ফলপ্রকাশ প্রকাশ হল আজ বুধবার। পরীক্ষা শেষ হওয়ার ৫০ দিনের মাথায় উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের তরফে সভাপতি চিরঞ্জিব ভট্টাচার্য সাংবাদিক সম্মেলন করে ফলাফল প্রকাশ করেন। তিনি জানান, কোভিডের সময়ের তিন বছর বাদ দিলে গত ১০ বছরে সেরা ফলাফল হয়েছে এ বছর । রাজ্যের প্রথম দশে রয়েছে ৭২ জন। উচ্চ মাধ্যমিকে প্রথম হয়েছে পূর্ব বর্ধমানের রূপায়ণ পাল । সে পেয়েছে ৪৯৭, শতাংশের হিসাবে ৯৯.৪ । দ্বিতীয় হয়েছে তুষার দেবনাথ। সে কোচবিহারের বাসিন্দা। তার প্রাপ্ত নম্বর ৪৯৬ । উচ্চ মাধ্যমিকে এ বছর তৃতীয় হয়েছে আরামবাগের রাজর্ষি অধিকারী, সে পেয়েছে ৪৯৫ । বাঁকুড়ার সৃজিতা ঘোষাল চতুর্থ হয়েছে, তার প্রাপ্ত নম্বর ৪৯৪ । মেয়েদের মধ্যে রাজ্যে প্রথম সৃজিতা। ৪৯৩ নম্বর পেয়ে পঞ্চম স্থানে রয়েছে ৬ জন, তাঁর হল, বীরেশ ঘোষ, প্রান্তিক গঙ্গোপাধ্যায়, তন্ময় পাতি, ঋদ্ধিত পাল, কুন্তল চৌধুরী, ঐশিকী দাস। ৪৯২ নম্বর পেয়ে সংখ্যালঘুদের মধ্যে প্রথম স্থান অধিকার করেছে আল আমীনের আবাসিক ছাত্র আরাফত হোসেন। মেধাতালিকা অনুযায়ী রাজ্যের মধ্যে ষষ্ঠ স্থানে রয়েছে অঅরাফত। আরাফাত ছাড়াও রাজ্যের মেধাতালিকায় ষষ্ঠ স্থানে রয়েছে আরও সাত জন। সপ্তম স্থানে রয়েছে ১১ জন, অষ্টম স্থানে রয়েছে ১৬ জন, নবম স্থানে ১৭ জন, এবং দশম স্থানে ১০ জন শিক্ষার্থী। ৭২ জনের মেধা তালিকায় ৫ জন সংখ্যালঘু শিক্ষার্থী রয়েছে। হুগলির সৈয়দ মোহাম্মদ তানজির, হাওড়ার মোহাম্মদ সাজিদ হোসেন ৪৯১ নম্বর পেয়ে সপ্তম স্থান অধিকার করেছে। সৈয়দ মোহাম্মদ তানজিরও আল-আমীন মিশনের ছাত্র। এ বছরও উচ্চমাধ্যমিকে সাফল্যের ধারা অব্যাহত রেখেছে আল আমীন মিশন। অষ্টম স্থানে রয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার রাফিত রানা লস্কর, তার প্রাপ্ত নম্বর ৪৯০। বীরভূমের নাজফার রহমান ৪৮৯ নম্বর পেয়ে রাজ্যে নবম স্থান অধিকার করেছে।
এবছর পরীক্ষা দেওয়ার জন্য নাম নথিভুক্ত করেছিল ৪ লক্ষ ৮২ হাজার ৯৪৮ জন। পরীক্ষা দিয়েছিল ৪ লক্ষ ৭৩ হাজার ৯১৯ জন। পাশ করেছে ৪ লক্ষ ৩০ হাজার ২৬৮ জন। পাশের হার ৯০.৭৯ শতাংশ। গতবার পাস করেছিল ৯০ শতাংশ শিক্ষার্থী। ছাত্রদের পাশের হার ৯২.০৩ শতাংশ, ছাত্রীদের পাশের হার ৮৮.১২। তবে মাধ্যমিক, মাদ্রাসা বোর্ডের আলিম, ফাজিল এর মতই উচ্চমাধ্যমিকেও ছাত্রদের তুলনায় ছাত্রীদের সংখ্যা ৪৭ হাজার ৫৩৯ জন বেশি ছিল। জেলাভিত্তিক সাফল্যের নিরিখে প্রথমে রয়েছে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা, সেখানে পাশের হার ৯৫.৭৪ শতাংশ, দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে উত্তর ২৪ পরগনা এবং তৃতীয় স্থানে রয়েছে কলকাতা। সারারাত জেগে বছর সংখ্যালঘু শিক্ষার্থীদের পাশের হার ৮৮.১২ শতাংশ, ছেলেদের ৯১.৯৯ শতাংশ এবং মেয়েদের ৮৫.৪১ শতাংশ। রাজ্যের নিরিখে ৬০ শতাংশ নম্বর পেয়েছে ৪৩.৩৮ শতাংশ শিক্ষার্থী, ৭৫ শতাংশ নম্বর পেয়েছে ১৬.৯৯ শতাংশ শিক্ষার্থী, ৯০ শতাংশ নম্বর পেয়েছে ১.৭ শতাংশ শিক্ষার্থী। এবছর বিজ্ঞান বিভাগে মোট শিক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ৮২ হাজার ২২ জন, ছাত্র ৪৪৫৯৪ জন এবং ছাত্রী ৩৭৪২৮ জন, পাশের হার ৯৯.৪৬ শতাংশ। কমার্সে ৩০৮৮৭ শিক্ষার্থীর মধ্যে ছাত্র ছিল ২০৬৯১ জন, ছাত্রী ১০১৯৬ জন, পাশের হার ৯৭.৫২ শতাংশ। কলা বিভাগে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ৩ লক্ষ ৬১ হাজার ১০ জন, ছাত্রের সংখ্যা ছিল ১ লক্ষ ৫৪ হাজার ৬১৮ জন, এবং ছাত্রী ছিল ২ লক্ষ ৬ হাজার ৩৯২ জন, পাশের হার ৮৮.২৫ শতাংশ।
উচ্চ মাধ্যমিক ফলাফল অনুযায়ী এ বছরের নেপালি ভাষায় প্রথম হয়েছে গীতাঞ্জলি নেত্রী, সাঁওতালি ভাষায় প্রথম হয়েছে মিনতি হেমব্রম, উর্দু ভাষায় প্রথম হয়েছে মোঃ সাজিদ হোসেন। উল্লেখ্য ১৯৭৮ সাল থেকে শুরু হওয়া বার্ষিক নিয়মে পরীক্ষা পদ্ধতি এ বছর শেষ হল।
All Rights Reserved © Copyright 2025 | Design & Developed by Webguys Direct