আপনজন ডেস্ক: টুর্নামেন্টে সানরাইজার্স হায়দরাবাদের ম্যাচ বাকি এখনো তিনটি। পুরোটাই অবশ্য আনুষ্ঠানিকতা। কালই এবারের আইপিএল থেকে বাদ পড়ে গেছে হায়দরাবাদ। এবারের আইপিএলে এটিও একটি চমক!
এত শক্তিশালী দল গড়ার পরও প্লে-অফের জন্য হায়দরাবাদ লড়াইও করতে পারবে না, এমন ধারণা টুর্নামেন্ট শুরুর আগে কেউ করেছে বলে মনে হয় না। তবে ক্রিকেটটাই তো এমন খেলা। অনিশ্চিত! হায়দরাবাদের এমন ছিটকে পড়ার ক্রিকেটীয় কারণও নিশ্চয় আছে। সেই কারণগুলো দেখে নেওয়া যেতে পারে—
ট্রাভিষেক নিশ্চুপ
এবারের আইপিএলে জ্বলেনি অভিষেক শর্মা ও ট্রাভিস হেডের ব্যাট। গত মৌসুমে এই দুজন মিলে ওভারপ্রতি রান তুলেছেন ১৩.২১ রান করে। গড়ে প্রায় ৫০ রান করে পেয়েছে দলটি। দুজনে মিলে ছক্কাই মেরেছেন ৭৪টি। সে কারণেই এই দুজনকেই এবার ১৪ কোটি টাকা করে দিয়ে দলে রেখেছে হায়দরাবাদ। কিন্তু গতবারের মতো এবার আর পারফর্ম করতে পারেননি তাঁরা। ১১ ম্যাচ শেষে দুই ওপেনার মিলে ছক্কা মেরেছেন ২৬টি। বড় রানের জুটি নেই একেবারে।
নো প্ল্যান বি
হায়দরাবাদের পরিকল্পনার মূল অংশে ছিলেন অভিষেক ও হেড। এই দুজন শুরুতে ঝড় তুলবেন, তা মাথায় নিয়ে হায়দরাবাদের ব্যাটিং অর্ডার গড়া হয়েছে। তবে অভিষেক ও হেড সেরাটা দিতে না পারলে কী হবে, তা নিয়ে ভাবেনি হায়দরাবাদ ম্যানেজমেন্ট। ভাবলেও অন্তত মাঠে তার কোনো ছাপ দেখা যায়নি।
হালাকু খানের ভদ্র হয়ে যাওয়া
‘হালাকু খান’খ্যাত হাইনরিখ ক্লাসেন যেন ভদ্র হয়ে গেলেন এবার। বোলারদের ধ্বংস করতে পারেননি, উল্টো তিনিই নিজেই যেন ছিলেন চাপে। ৩১১ রান করেছেন, ১৫৩.৯৬ স্ট্রাইক রেটে। ১৫৩ স্ট্রাইক রেট টি-টোয়েন্টিতে ভালোই, তবে তা ক্লাসেনের জন্য ভালো নয়। ওই অর্থে ইমপ্যাক্ট ফুল ইনিংস খেলে কোনো ম্যাচে দলকে জেতাতে পারেননি। হায়দরাবাদ যে তিনটি ম্যাচ জিতেছে, তাঁর দুটিতে সেঞ্চুরি করেছেন ঈশান কিষান ও অভিষেক শর্মা। আরেকটিতে জিতেছে টুকটাক সবাই রান করায়, চেন্নাইয়ের বিপক্ষে সেই ম্যাচে ৭ রানে আউট হন ক্লাসেন।
ঈশান কিষান ও মুহাম্মদ শামির ‘অফ ফর্ম’
ঈশানকে ১১ কোটি ও শামিকে ১০ কোটি টাকাতে দলে নিয়েছিল হায়দরাবাদ। দুজনই এবারের আসরে সুপার ফ্লপ। কিষান রান করেছেন মাত্র ১৯৬, যেখানে ১০৬ রানের অপরাজিত একটি ইনিংসও আছে। অন্যদিকে শামির মতো বোলার ৯ ম্যাচে উইকেট নিয়েছেন মাত্র ৬টা। রান খরচ করেছেন ওভারপ্রতি ১১ রানের বেশি। গতকাল দিল্লির বিপক্ষে ম্যাচে তো একাদশ থেকে বাদই পড়েন।
কন্ডিশন পড়তে না পারা
গত বছর আইপিএলে হায়দরাবাদের রাজীব গান্ধী স্টেডিয়ামে হয়েছিল রান উৎসব। ১২ ইনিংসের মধ্যে দলগুলো ৭ বারই ২০০–এর বেশি রান তুলেছে। এবার ১১ ইনিংসে ২০০–এর বেশি রান উঠেছে চারবার। হায়দরাবাদ কোচ ড্যানিয়েল ভেট্টরি মনে করেছেন, এবারে রাজীব গান্ধী স্টেডিয়ামের উইকেট কিছুটা বোলিং সহায়ক ছিল। এমনটা নাকি তাঁরা প্রত্যাশাও করেননি। এমন উইকেটের সঙ্গে পুরো আইপিএলেই মানিয়ে নিতে পারেননি অভিষেকরা। তার ফলই এমন বিদায়।
All Rights Reserved © Copyright 2025 | Design & Developed by Webguys Direct