সঞ্জীব মল্লিক, বাঁকুড়া, আপনজন: চালক ও এটেনডেণ্টদের প্রতি বঞ্চনা ও কর্তৃপক্ষের অসংযত ব্যবহারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে বাঁকুড়া জেলা জুড়ে ১০২ অ্যাম্বুলেন্স প্রকল্পের চালকদের ধর্মঘট, সমস্যায় জেলার প্রসুতিরা। নিয়ম অনুযায়ী ছুটি না দেওয়া, বাড়তি কাজের চাপ, অ্যাম্বুলেন্স গুলির মেরামতের কাজ না করা এবং এসবের প্রতিবাদ জানাতে গেলেই অন্যায় ভাবে চালক ও এটেন্ডেন্টদের প্রতি কর্তৃপক্ষের অসং যত আচরণ ও অন্যায় ভাবে বদলীর প্রতিবাদে এবার বাঁকুড়া জেলাজুড়ে ১০২ অ্যাম্বুলেন্স প্রকল্পের একাধিক পরিসেবা বন্ধ করে দিল চালকরা। বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজ বাদ দিলে বাঁকুড়া জেলার অধিকাংশ হাসপাতালে নিযুক্ত ১০২ প্রকল্পের অ্যাম্বুলেন্সের পরিসেবা গতকাল থেকে স্থগিত রেখে আন্দোলনে সামিল হয়েছেন ওই প্রকল্পের অ্যাম্বুলেন্স চালক ও এটেনডেন্টরা। এর ফলে জেলার প্রসুতি মা ও এক বছর পর্যন্ত বয়সের অসুস্থ শিশুদের বিনা খরচে বাড়ি থেকে হাসপাতাল ও হাসপাতাল থেকে বাড়ি নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে প্রবল সমস্যা তৈরী হয়েছে।
আজ থেকে ৬ বছর আগে সারা রাজ্যের পাশাপাশি বাঁকুড়া জেলাতেও জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনের অধীনে ১০২ অ্যাম্বুলেন্স পরিসেবা চালু হয়। ই এম আর আই গ্রীন হেলথ সার্ভিস নামের একটি বেসরকারী সংস্থার মাধ্যমে এই পরিসেবা চালু হয় বাঁকুড়া জেলায়। জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে রোগী পরিসেবার জন্য মোতায়েন করা হয় ৬০ টি অ্যাম্বুলেন্স। এই অ্যাম্বুলেন্সগুলি মূলত প্রসুতি মা ও এক বছর বয়স পর্যন্ত অসুস্থ শিশুদের বাড়ি থেকে হাসপাতাল, হাসপাতাল থেকে উন্নত হাসপাতালে এবং সুস্থ হওয়ার পর হাসপাতাল থেকে বাড়িতে বিনা খরচে পৌঁছে দেওয়ার কাজ করে। অ্যাম্বুলেন্সের চালক ও এটেনডেন্টদের দাবী কম সংখ্যক কর্মী দিয়ে অ্যাম্বুলেন্সগুলি চালানো হচ্ছে। বাড়তি কাজের চাপ দেওয়ার পাশাপাশি নিয়ম অনুযায়ী চালক ও এটেনডেন্টদের ছুটি দেওয়া হচ্ছে না। অ্যাম্বুলেন্সগুলিতে সময়মতো প্রয়োজনীয় মেরামতির কাজ করা হয়না। ফলে রোগী নিয়ে যাতায়াতের পথে যে কোনো সময় ঘটতে পারে দুর্ঘটনা। এসবের প্রতিবাদ জানাতে গেলেই কর্তৃপক্ষের তরফে মিলছে গালি গালাজ। অযথা বদলী করে দেওয়া হচ্ছে দূরবর্তী জেলাগুলিতে। এই পরিস্থিতিতে বাধ্য হয়ে গতকাল থেকে ধর্মঘট শুরু করেছেন বাঁকুড়ার ১০২ প্রকল্পের অ্যাম্বুলেন্স চালক ও এটেনডেণ্টরা। ধর্মঘটীদের বক্তব্য হাসপাতাল থেকে উন্নত হাসপাতালে রেফারের ক্ষেত্রে পরিসেবা চালু রাখলেও রোগীর বাড়ি থেকে হাসপাতাল ও ছুটির পর হাসপাতাল থেকে বাড়ি নিয়ে যাওয়ার কাজ আপাতত স্থগিত রাখা হয়েছে। কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা না নেওয়া পর্যন্ত এই ধর্মঘট চালিয়ে যাওয়ার হুশিয়ারি দিয়েছেন ধর্মঘটীরা।
All Rights Reserved © Copyright 2025 | Design & Developed by Webguys Direct