নিজস্ব প্রতিবেদক, মালদা, আপনজন: জেলায় প্রশাসনিক বৈঠক চলছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির। নবজোয়ার কর্মসূচি নিয়ে জেলায় এসেছেন তৃণমূলের সেকেন্ড ইন কমান্ড অভিষেক ব্যানার্জি। তারই মাঝে ফের প্রকাশ্যে মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুর এলাকায় মাটি মাফিয়াদের দৌরাত্ম্য। অবৈধভাবে মাটি কাটা এবং পুকুর ভরাটের অভিযোগ। নাম জড়ালো এলাকার শাসক দলের শ্রমিক সংগঠনের নেতা তথা উপ-প্রধানের স্বামীর। আন্দোলনের হুশিয়ারি এলাকার সাধারণ মানুষের। অভিযোগ এলে খতিয়ে দেখা হবে দাবি ভূমি সংস্কার দপ্তরের। নিয়ম না মানলে প্রশাসন ব্যবস্থা নেবে আশ্বাস তৃণমূল নেতৃত্বের। মালদা জেলার হরিশ্চন্দ্রপুর ১ ব্লকের তুলসিহাটা গ্রাম পঞ্চায়েতের নয়াটোলা গ্রামে একদিকে মাটি কাটা এবং অন্যদিকে পুকুর ভরাটের চিত্র সামনে এলো। এলাকাবাসীর অভিযোগ অবৈধ ভাবে মাটি কাটা হচ্ছে। যেখানে আইন অনুযায়ী নিয়ম ৩ ফিটের বেশি মাটি কাটা যাবে না সেখানে ১০ থেকে ১২ ফিট মাটিকাটা হচ্ছে। সেই মাটি দিয়ে আবার ভরাট করা হচ্ছে এলাকার একটি পুকুর। যা নিয়ে সরব হয়েছে এলাকাবাসী। এলাকাবাসীর অভিযোগ এই ভাবে মাটি কাটা এবং পুকুর ভরাট চলতে থাকলে প্রাকৃতিক ভারসাম্য বিনষ্ট হবে। বর্ষাকালে বন্যার সম্মুখীন হওয়ার আশঙ্কা। এমনিতেই ২০১৭ সালের ভয়াবহ বন্যার স্মৃতি এখনো টাটকা এলাকাবাসীর মনে। প্রশ্নের মুখে পড়েছে প্রশাসনের ভূমিকা। এলাকার মানুষের প্রশ্ন এভাবে প্রকাশ্য দিবালোকে মাটিকাটা এবং পুকুর ভরাট হচ্ছে কিন্তু প্রশাসন কেন পদক্ষেপ নিচ্ছে না?এদিকে জানা গেছে এই মাটি কাটা এবং পুকুর ভরাটের কাজে যুক্ত রয়েছে তুলসীহাটা গ্রাম পঞ্চায়েতের উপ-প্রধানের স্বামী তথা ব্লক আইএনটিটিউসির সভাপতি আব্বাস আলী বলে অভিযোগ। যদিও আব্বাস আলীর দাবি রয়েলিটি নিয়ে নিয়ম মেনে মাটি কাটা হচ্ছে। ভূমি সংস্কার দপ্তরের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে এই সংক্রান্ত কোনো অভিযোগ এখনো আসেনি। স্থানীয় বাসিন্দা যোগেশ্ রাম বলেন, একদিকে মাটি কাটা হচ্ছে অন্যদিকে পুকুর ভরাট হচ্ছে। এই ভাবে চলতে থাকলে তো পরিবেশ শেষ হয়ে যাবে। প্রশাসন মাটিকাটা বন্ধ না করলে আমরা আন্দোলনে নাম। দরকার হলে ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিকের অফিস ঘেরাও করব। শাসকদলের শ্রমিক সংগঠনের ব্লক সভাপতি আব্বাস আলী বলেন, এখানে আমার পুকুরে মাটি ফেলা হচ্ছে। অন্য একটি পুকুর খনন করেছে এই মাটি তোলা হচ্ছে। সম্পূর্ণ নিয়ম মেনে প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে এই কাজ হচ্ছে। হরিশ্চন্দ্রপুর অঞ্চল তৃণমূলের চেয়ারম্যান সঞ্জীব গুপ্তা বলেন, শুনতে পেয়েছি মাটি কাটা হচ্ছে। এবার সেটা নিয়ম না মেনে হলে প্রশাসন ব্যবস্থা নেবে। ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের আধিকারিক শুভঙ্কর মন্ডল বলেন, আমাদের কাছে এই সংক্রান্ত অভিযোগ এখনো আসেনি। তবে অভিযোগ এলে অবশ্যই বিষয়টি খতিয়ে রাখা হবে। অবৈধ ভাবে মাটি কাটা বরদাস্ত করা যাবে না। প্রসঙ্গত হরিশ্চন্দ্রপুর এলাকায় একাধিকবার সামনে এসেছে মাটি মাফিয়াদের দৌরাত্ম্য। বারবার অবৈধ ভাবে মাটি কাটা এবং ভরাটের অভিযোগ উঠেছে। প্রশাসন কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার বার্তা দিলেও বাস্তবে পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না মাটি মাফিয়াদের বিরুদ্ধে। যার ফলে দিনের পর দিন তারা আরো সাহস পেয়ে যাচ্ছে।
All Rights Reserved © Copyright 2025 | Design & Developed by Webguys Direct