জয়প্রকাশ কুইরি, পুরুলিয়া, আপনজন: পুরুলিয়া ১নং ব্লকের বাঁশড়া গ্রামে ভূমিজদের শ্মশানে রয়েছে একটি প্রাচীন বাংলা শিলালিপি। তার সম্পর্কে গবেষণার জন্য এই শিলালিপি পরিদর্শন করলেন গবেষক তথা শিক্ষিক মাধব চন্দ্র মণ্ডল, দেবরাজ মাহাতো, বংশীধর সিংহ, পলাশ পাণ্ডে, ভূমিজ উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান রামপদ সিং সর্দার সহ অন্যান্য বিশিষ্ট জনেরা। দেবরাজ মাহাতো জানান, পুরুলিয়া জেলায় প্রায় প্রতিটি ভূমিজ শ্মশানে বীর স্তম্ভ, সতী স্তম্ভ, হাড়শালী রয়েছে। কোনো বীর যোদ্ধা মারা যাওয়ার পর তার সমাধিস্থলে পাথরের স্তম্ভ স্থাপন করা হয়, যেগুলিতে তীর ধনুক সহ বীর যোদ্ধা মূর্তি খোদায় করা থাকে যা দেখে সহজেই অনুমান করা যায়। বীর স্তম্ভের পাশে সতী স্তম্ভও থাকে। এই সতী স্তম্ভে নারীর মূর্তি খোদায় করা থাকে। তাছাড়া ভূমিজ সম্প্রদায়ের মধ্যে একটি রীতি ছিলো মেয়ের বিয়ের পর তার গোত্র পাল্টে যায় তাই যে গোত্রের সাথে বিয়ে হয় ঐ গোত্রের হাড়শালী তে হাড় শালী(পুতা) করা হয়।
এই সমস্ত হাড়শালীতেও তার সম্পর্কে খোদায় করে লেখা হতো। তবে এই প্রথা অনেক ব্যয়বহুল হওয়া সবার পক্ষে সম্ভব ছিলো না। মূলত জমিদার বা সমভ্রান্ত পরিবারগুলির মধ্যেই অধিক প্রচলন ছিলো। এরকম অনেকগুলি হাড়সালি রয়েছে বাঁশড়া গ্রামের শ্মশানে। যার মধ্যে একটি পাথরে একটি প্রাচীন শিলালিপি রয়েছে। ওই শিলালিপি আধুনিক বাংলাতে রয়েছে। তবে ওই লিপির মধ্যে সন ১৩৫ (বাংলা সাল) উল্লেখ রয়েছে। এই থেকে বোঝা যায় এটি প্রায় ১২৯৬ বছরের প্রাচীন। তবে লিপির সমস্তটা পাঠোদ্ধার করা সম্ভব হলে আরও অনেক তথ্য যানা যাবে। গবেষক মাধব চন্দ্র মণ্ডল জানান, এই শিলালিপি আধুনিক বাংলাতে রয়েছে। বাংলা ১৩৫ সালের কথা উল্লেখ থাকলেও এটি কত বছর আগে খোদায় করা হয়েছিল তার জন্য আরও বেশী গবেষণার প্রয়োজন রয়েছে।
All Rights Reserved © Copyright 2025 | Design & Developed by Webguys Direct