নকীব উদ্দিন গাজী, বীরভূম, আপনজন: সুন্দরবনে শুরু হল ক্যামেরা বসিয়ে বাঘ গণনার কাজ। গত কয়েক বছর ধরে সুন্দরবনের ম্যানগ্রোভের জঙ্গলে এই আধুনিক প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে ক্যামেরা বসিয়ে চলছে বাঘ এবং অন্যান্য বন্যপ্রাণী গণনার কাজ। দক্ষিণ ২৪ পরগনায় আলাদাভাবে দু’টি ডিভিশনে এই কাজ হবে। সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্প (এসটিআর) এলাকায় ১১৪৬টি ট্র্যাপ ক্যামেরা বসিয়ে রয়েল বেঙ্গল টাইগারের ছবি সংগ্রহ শুরু হবে। নতুন বছরের শুরু পর্যন্ত এই কাজ চলবে। দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজ হবে দক্ষিণ ২৪ পরগনার বন বিভাগ অঞ্চলে। গঙ্গাসাগর মেলার পর দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজ শুরু হবে। ব্যাঘ্র প্রকল্পের সূত্রের খবর, ২৫৮৫ বর্গ কিলোমিটার জঙ্গলে বসানো হবে ট্র্যাপ ক্যামেরা। বাঘকে ক্যামেরার কাছে আনতে রাখা হবে খাবার। স্বল্প পচা মাংস-ডিম মেখে রাখা হবে ক্যামেরার থেকে কিছুটা দূরে। পচা মাংসের গন্ধে বাঘকে আকৃষ্ট করে। তাই ক্যামেরার সামনে রাখা হবে মাংস। বনদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, এবারে গণনার কাজে ২০০ কর্মীকে নিযুক্ত করা হয়েছে। বিভিন্ন রেঞ্জে ঘুরে ঘুরে জঙ্গলে বাঘেদের বিচরণক্ষেত্রে দু’টি গাছের মুখোমুখি একটা নির্দিষ্ট দূরত্বে মাটি থেকে কয়েক ফুট উঁচুতে ক্যামেরা বসানো হবে। জোয়ারের জল থেকে ক্যামেরা কে বাঁচাতে এই দূরত্ব বজায় রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে। গতবারের মতো এবারও এই গণনার কাজ হবে এম-স্ট্রাইপ অ্যাপে। উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে এই কাজ হবে বলে কর্মীদের বাড়তি প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। ব্যাঘ্র প্রকল্পের ফিল্ড ডিরেক্টর তাপস দাস বলেন প্রাথমিক পর্যায়ে ১০ -১২ দিন ধরে চলবে ছবি তোলার কাজ।দশটি টিমকে এই ছবি তোলার কাজে ইতিমধ্যেই নিয়োগ করা হয়েছে। তারপর সব ছবি সংগ্রহ করে পর্যালোচনা জন্য পাঠানো হবে নির্দিষ্ট জায়গাতে। প্রতিবছর সুন্দরবনের বাঘ গণনা করা হয়। এ বছর সেই কাজ শুরু হল। ব্যাঘ্র প্রকল্প এলাকার পর দক্ষিণ ২৪ পরগনা বন বিভাগের ১৬০০ বর্গ কিলোমিটার অঞ্চলে হবে ক্যামেরা বসিয়ে বাঘ গণনা। এই এলাকায় সর্বত্র ক্যামেরা বসানো সম্ভব হয় না। বন দপ্তরের আধিকারিকদের বক্তব্য, এবার বাঘ ছাড়াও অন্যান্য প্রাণীদেরও ছবি তুলে পর্যালোচনা হবে। এই কাজ আগে করা হয়নি। যেমন কিছুদিন আগে মেছো বিড়ালের গণনার রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে। তেমনভাবে অন্য প্রাণীদেরও গণনা হবে।
All Rights Reserved © Copyright 2025 | Design & Developed by Webguys Direct