নাজিম আক্তার, হরিশ্চন্দ্রপুর, আপনজন: বৃদ্ধ বাবা-মাকে দেখেন না ছেলে এবং নাতি।ভিক্ষাবৃত্তি করে খেতে হয় বৃদ্ধ দম্পতিকে।শেষে বৃদ্ধ বাবা-মায়ের মাথার ছাদ টুকুও কেড়ে নেওয়ার অভিযোগ ছেলে এবং নাতির বিরুদ্ধে।জানা গিয়েছে,খাস জমিতে দীর্ঘ ৪০ বছর ধরে বসবাস করে আসছে ভূমিহীন ওই বৃদ্ধ দম্পতি।চলতি বছরে দুয়ারে সরকারে আবেদন করেছিল পাট্টার জন্য।কিন্তু সেখানেও অভিযোগ স্থানীয় শাসকদলের এক নেতাকে ব্যবহার করে টাকার বিনিময়ে পাট্টা করে নিয়েছে তার ছেলে।তাই সেই জমি থেকে এবার বৃদ্ধ বাবা-মাকে উচ্ছেদ করার চেষ্টা করছে ছেলে এবং নাতি।অসহায় বৃদ্ধ দম্পতি থাকছে জরাজীর্ণ কাঁচা ঘরের বারান্দায়।নাতি সিভিক ভলেন্টিয়ারের কাজ করে।সেই প্রভাব ব্যবহার করে ঠাকুরদাকে পুলিশের ভয় দেখাচ্ছে বলেও চাঞ্চল্যকর অভিযোগ উঠে এসেছে।ছেলে এবং নাতির বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন বৃদ্ধ দম্পতি।মালদা জেলার হরিশ্চন্দ্রপুর থানার আলিনগর গ্রামের ঘটনা।ওই গ্রামের বাসিন্দা ৭৫ বছর বয়সী রফিজুদ্দিন।দীর্ঘ ৪০ বছর ধরে গ্রামেরই একটি খাস জমিতে বসবাস করেন।তার সাথে থাকে তার বৃদ্ধা স্ত্রী।রফিজুদ্দিনের ছেলে সফিকও ওই গ্রামে শ্বশুরবাড়িতে থাকেন।তারা নিজস্ব জমি এবং বাড়ি রয়েছে।সফিকের ছেলে সলিমুদ্দিন হরিশ্চন্দ্রপুর থানার সিভিক ভলেন্টিয়ার।বৃদ্ধ বাবা মাকে দেখে না সফিক। রফিজউদ্দিন এবং উনার স্ত্রী ভিক্ষাবৃত্তি করেই আধপেটা খেয়ে দিনযাপন করেন।৬ শতক খাস জমিতে যেখানে বসবাস করেন সেখানে রয়েছে তাদের জরাজীর্ণ বাড়ি।সেই বাড়িও ভগ্নপ্রায়।রাজ্য সরকার ভূমিহীনদের পাট্টা দেওয়ার কথা ঘোষণা করলে বসবাসের ৬ শতক জমির জন্য পাট্টার আবেদন করেন রফিজুদ্দিন।কিন্তু বৃদ্ধ বাবার সেই জমিতে নজর পড়ে যায় ছেলে সফিকের।সফিক তৃণমূল কর্মী সমর্থক।অভিযোগ,সেই প্রভাব ব্যবহার করেই টাকার বিনিময়ে ওই জমির পাট্টা পেয়ে যান ছেলে সফিক।বৃদ্ধ বাবা রফিজুদ্দিন জানান,ছয় শতক ঘাস জমির মধ্যে দুই শতক তার ছেলে ও দুই শতক তার প্রথম পক্ষের বিবাহিত মেয়ে গোপনভাবে পাট্টা করে নিয়েছে।
বর্তমানে বৃদ্ধ দম্পতি একটি জরাজীর্ণ কাঁচা ঘরে বসবাস করছে। বৃদ্ধ-বৃদ্ধা বসবাসের জন্য সেই বাড়ি ঠিক করার চেষ্টা করলে ছেলে সফিক এবং পেশায় সিভিক ভলেন্টিয়ার নাতি সলিমুদ্দিন বাধা দিচ্ছে বলে অভিযোগ।এমনকি সিভিক ভলেন্টিয়ার নাতির বিরুদ্ধে অভিযোগ সে সিভিকের ক্ষমতার অপব্যবহার করছে।পুলিশকে দিয়ে জমি থেকে উচ্ছেদ করার হুমকি দিচ্ছে বৃদ্ধ ঠাকুর দাদাকে।এমনকি বৃদ্ধ দম্পতি খাওয়ার জন্য ভিক্ষাবৃত্তি করলে সেখানেও বাধা দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ।তাই বাধ্য হয়ে হরিশ্চন্দ্রপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন বৃদ্ধ দম্পতি।যদিও ছেলে সাফিক এবং নাতি সালিমুদ্দিন সমস্ত অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন। ছেলের দাবি তার সৎ মায়ের জন্য সমস্যা হয় বাবাকে নিয়ে।সে তার বাবাকে দেখতে চায়।আর ওই জমি তার বাবা অন্য কাউকে দিয়ে দিচ্ছিল বলে সে বাধা দিয়েছে।অন্যদিকে সিভিক ভলেন্টিয়ারের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ হতেই ক্ষুব্ধ হরিশ্চন্দ্রপুর থানার আইসি।
All Rights Reserved © Copyright 2025 | Design & Developed by Webguys Direct