আপনজন ডেস্ক: ইসরায়েলি প্রাচীনতম সংবাদমাধ্যম হারেৎজের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন এবং সরকারি অর্থায়নকারী সংস্থাগুলোকে পত্রিকাটির সঙ্গে যোগাযোগ বা বিজ্ঞাপন দেওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সরকার। স্থানীয় সময় রোববার (২৪ নভেম্বর) দেশটির যোগাযোগমন্ত্রী শ্লোমো কারহির এ সংশ্লিষ্ট একটি প্রস্তাব অনুমোদন করেন নেতানিয়াহু। হারেৎজ পত্রিকাটি মূলত বামপন্থী ঘরানার। নেতানিয়াহু সরকার বলছে, ইসরায়েল রাষ্ট্রের বৈধতা ও আত্মরক্ষার অধিকারকে আঘাত করেছে এমন অনেক অনুচ্ছেদ প্রকাশ করেছে পত্রিকাটি।
বিশেষ করে হারেৎজের প্রকাশক আমোস শোকেন সম্প্রতি লন্ডনে ইসরায়েলি সরকারের বিরুদ্ধে একটি মন্তব্য করেন। ‘ইসরায়েলি সরকার সন্ত্রাসবাদকে সমর্থন করছে’ বলে উল্লেখ করেন তিনি, সেই সঙ্গে সরকারের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপেরও আহ্বান জানান। এমন প্রেক্ষাপটে হারেৎজের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্নের মতো ঘটনা এবং নিষেধাজ্ঞা এলো। নেতানিয়াহুর যোগাযোগমন্ত্রী শ্লোমো কারহি এক বিবৃতিতে বলেছেন, হারেৎজের বিরুদ্ধে তার প্রস্তাব অন্যান্য মন্ত্রীরাও সর্বসম্মতিক্রমে অনুমোদন করেছেন। এই সিদ্ধান্তের প্রতিক্রিয়ায় হারেৎজ বলেছে, এটি হারেৎজকে বয়কট করার একটি সুবিধাবাদী প্রস্তাব। সরকারি বৈঠকে কোনো ধরণের আইনি পর্যালোচনা ছাড়াই এই আইন পাস হয়েছে। এটি ইসরায়েলি গণতন্ত্রকে ভেঙে ফেলার জন্য নেতানিয়াহুর ধারাবাহিক যাত্রায় আরও একটি পদক্ষেপ। ১৯১৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হারেৎজ ইসরায়েলের সবচেয়ে দীর্ঘ সময় ধরে চলা সংবাদপত্র। পত্রিকাটি ঊর্ধ্বতন ইসরায়েলি কর্মকর্তা এবং সশস্ত্র বাহিনীর অপরাধমূলক কার্যকলাপের উপর বেশ কয়েকটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। দীর্ঘদিন ধরে সরকারের সঙ্গে সম্পর্কের টানাপোড়েন চলছে। গাজা যুদ্ধের অবসান এবং হামাসের হাতে আটক জিম্মিদের মুক্তির দাবিতেও সোচ্চার সংবাদমাধ্যমটি। হারেৎজের কলামিস্ট গিডিওন লেভি আল জাজিরাকে বলেছেন, পত্রিকার উপর সরকারি নিষেধাজ্ঞাগুলো রাজনৈতিক ও নৈতিকভাবে উভয়ই খুব খারাপ বার্তা দেয়। অনেকে এটিকে (হারেৎজ) ইসরায়েলের একমাত্র সংবাদপত্র হিসাবে দেখেন। কারণ, বিশেষত (গাজা যুদ্ধে) প্রায় সমস্ত মিডিয়া সরকার এবং সেনাবাহিনীর বিবরণে নিজেকে সপে দিয়েছিল। গাজায় কী ঘটছে তা ইসরায়েলিদের দেখায়নি।গত মাসে লন্ডনে এক সম্মেলনে হারেৎজ-এর প্রকাশক শোকেন আরও বলেছিলেন, নেতানিয়াহুর সরকার ফিলিস্তিনি জনগণের ওপর নিষ্ঠুর বর্ণবাদী শাসন চাপিয়ে দেওয়ার বিষয়ে একবারও চিন্তা করে না।এদিকে, নেতানিয়াহু সরকারের যোগাযোগমন্ত্রী শ্লোমো কারহি পত্রিকাটি বয়কট করার আহ্বান জানিয়ে নতুন করে প্রচারণা শুরু করেছেন।প্রসঙ্গত, যুদ্ধ শুরুর পর থেকেই ইসরায়েল গণমাধ্যমের উপর কড়াকড়ি আরোপ করেছে। বিশেষ করে আল জাজিরার ইসমাইল আল-ঘৌল, রামি আল-রিফি, সামির আবুদাকা এবং হামজা দাহদৌহসহ গাজায় কয়েক ডজন ফিলিস্তিনি সাংবাদিককে হত্যা করেছে।
All Rights Reserved © Copyright 2025 | Design & Developed by Webguys Direct