হয়তো তোমারই জন্য...
শংকর সাহা
বাইরে অঝোরে বৃষ্টি। বৃষ্টির শব্দে আর মেঘের গুরুগম্ভীরে এক বিশেষ দ্যেতনার সৃষ্টি হয়েছে। কিন্তু বৃষ্টির ধারায় মাধবীলতার মনটি কেমন উতলা হয়ে উঠলো। বৃষ্টির টাপুর টুপুর শব্দে তার মনটি কোথায় যেন হারিয়ে গেল।“আপনি একটু অন্যরকম, অন্য সব নার্সদের থেকে আলাদা”, সৌম্যের কথায় একটু সচকিত হয়ে ওঠে মাধবীলতা। “তুমিও একটু অন্যরকম”, প্র্ত্যুত্তর দেয় সে।মাধবীলতা যখন সৌম্যের বায়োপসির রোপোর্ট দেখে, মনে প্রচন্ড আঘাত পায় সে।তাড়াতাড়ি একটি মানুষ সুন্দর পৃথিবী ছেড়ে চলে যাবে!সৌম্যের সময় বেশি নেই! এত বড় অপারেশন, তারপরে কেমো আর রেডিয়েশনেরধাক্কা ,এ যেন স্বয়ং ঈশ্বরের কাছ থেকে কিছুটা সময় চেয়ে নেওয়া। , কিন্তু সৌম্য ভেঙ্গে পড়েনা। জীবনটা যেন তার কাছে একটি খেলা! হয় হারবে, নয়তোজিতবে সে! অপারেশনের দুইদিন আগে থেকে সৌম্য তেমন কথা বলেনা। শুধুই বাইরেরজগতটাকে ভালো করে দেখে সে।আর একটু পরে সৌ্ম্যকে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যাবে। শেষ মুহূর্তে জীবনটাকেখুব প্রিয় মনে হচ্ছে সৌম্যের। আজ যেন বিধাতা তাকে এক পরিমানও সময় ছাড়দিতে চায়না। সৌ্ম্যর দিকে জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে মাধবীলতা। তারদিকে তাকিয়ে থেকে একটু হেসে বলে, “ আর যদি আমি না আসি আমার জন্যে কষ্টপেয়ো না।‘’অপারেশন টেবিলে দীর্ঘ দুঘন্টার লড়াইয়ে হেরে গেল সৌম্য।হঠাত পরিচিত হাসপাতালটি বড়ই অসহ্যবোধ হতে থাকে মাধবীলতার। সে বাইরেবেরিয়ে এল। বৃষ্টি একটু থেমেছে। আকাশে এখনও মেঘের শব্দ। আকাশের দিকে তাকিয়ে কি যে ভাবে মাধবীলতা! শূন্য অনুভূতি ! যেন অণুরণিত হল সেই ডাক...।অন্যমনস্ক হয়ে সে হোস্টেলের পথে পা বাড়ালো ।
All Rights Reserved © Copyright 2025 | Design & Developed by Webguys Direct