আপনজন ডেস্ক: ৩৯ বছর পরেও বিশ্বের বৃহত্তম শিল্প বিপর্যয় ভোপাল গ্যাস দুর্ঘটনার ভয়ঙ্কর স্মৃতি মুছে ফেলা যাচ্ছে না। এই গ্যাস কেলেঙ্কারিতে হাজার হাজার মানুষ মারা গেছে, তাদের সন্তান ও প্রজন্ম এখনো এই বিষাক্ত গ্যাসের প্রভাবে ভুগছে। সরকার ত্রাণ ব্যবস্থা বাস্তবায়ন করেছে কিন্তু সেগুলি অপর্যাপ্ত প্রমাণিত হয়েছে। যেখানে গ্যাস দুর্ঘটনা ঘটেছিল সেখানে এখনও বিষাক্ত বর্জ্য পড়ে আছে। সরকারের সব দাবি সত্ত্বেও এই বিষাক্ত বর্জ্য পোড়ানো যায়নি। বিচার ও ত্রাণের জন্য লড়াই করা বহু মানুষ মারা গেছেন। দোষীদের শাস্তির বিষয়টি এখনো আদালতে ঝুলে আছে। ভোপাল গ্যাস বিপর্যয়ে ১৫০০০ এরও বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছিল, বিশ্বের সবচেয়ে খারাপ শিল্প দুর্ঘটনা। ১৯৮৪ সালের ২ থেকে ৩ ডিসেম্বরের মধ্যে এই দুর্ঘটনাটি ঘটেছিল। এ দুর্ঘটনার জেরে লাশে ঢেকে যায় শহর। আসলে ইউসিআইএল কারখানাটি ইউনিয়ন কার্বাইড দ্বারা ১৯৬৯ সালে ভোপালে নির্মিত হয়েছিল। যেখানে মিথাইল আইসোসায়ানাইড থেকে কীটনাশক উৎপাদন শুরু হয়। পরবর্তীতে ১৯৭৯ সালে এখানে মিথাইল আইসোসায়ানাইড উৎপাদনের জন্য একটি নতুন কারখানা খোলা হয়। কিন্তু কর্মকর্তারা এর নিরাপত্তার জন্য পর্যাপ্ত ব্যবস্থা করেননি। ফলাফল আসে ২ ও ৩ ডিসেম্বর রাতে। কারখানার A610 নম্বর ট্যাঙ্কে জল পড়ে। মিথাইল আইসোসায়ানেটে জল যোগ করার ফলে ট্যাঙ্কের ভিতরের তাপমাত্রা বেড়ে যায় এবং বিষাক্ত গ্যাস তখন বায়ুমণ্ডলে নির্গত হয়। পনের হাজারের বেশি মৃত: প্রায় ৪৫ মিনিটের মধ্যে প্রায় ৩০ মেট্রিক টন গ্যাস নির্গত হয় বলে জানা গেছে। এই গ্যাসের মেঘ পুরো শহরের বায়ুমণ্ডলে ছড়িয়ে পড়ে এবং এর সাথেই শহরে শুরু হয় মৃত্যুর মিছিল। এই গ্যাসের কারণে ১৫ হাজারের বেশি মানুষ মারা গেছে। সরকারিভাবে প্রাথমিকভাবে মৃতের সংখ্যা ২২৫৯। মাত্র দুই সপ্তাহে ৮০০০ মানুষ মারা যায়। বাকি ৮০০০ মানুষ গ্যাসজনিত রোগে মারা গেছে। বিষাক্ত গ্যাসে অক্রান্ত হওয়অ, মানুষজন অাজও বিচারের আশায় নীরবে নিভৃতে কেঁদে চলেছে।
All Rights Reserved © Copyright 2025 | Design & Developed by Webguys Direct