আপনজন ডেস্ক: ২০১৯ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে তিন বছরে দেশে ১৩.১৩ লক্ষেরও বেশি মেয়ে নিখোঁজ হয়েছে। তাদের বেশিরভাগই মধ্যপ্রদেশের। তারপরেই স্থান পশ্চিমবঙ্গের। গত সপ্তাহে সংসদে পেশ করা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে সারা দেশে ১৮ বছরের বেশি বয়সি ১০,৬১,৬৪৮ জন মেয়ে এবং তার কম বয়সি ২,৫১,৪৩০ জন মেয়ে নিখোঁজ হয়েছে। ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরো (এনসিআরবি) এই তথ্য সংগ্রহ করেছে। সংসদে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, মধ্যপ্রদেশে ২০১৯ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে ১,৬০,১৮০ জন মহিলা এবং ৩৮,২৩৪ জন বালিকা নিখোঁজ হয়েছে। একই সময়ে পশ্চিমবঙ্গ থেকে মোট ১,৫৬,৯০৫ জন মহিলা এবং ৩৬,৬০৬ জন বালিকা নিখোঁজ হয়েছে। যদিও, রাজ্য সরকারের তরফে নারী ও শিশু পাচার রোধে বিশেষ প্রচার চালানো হচ্ছে বিভিন্ন এলাকায়। পুলিশের তরফে সাধারণ মানুষদের নিয়ে সচেতনতা সভা করা হচ্ছে। তা সত্ত্বেও রাজ্যে থেকে নিখোঁজ মেয়ের সংখ্যা উদ্বেগ জনক। বিশেষ করে সুন্দরবন সহ দক্ষিণ ২৪ পরগনার বেশ কিছু এলাকায়। প্রায়শ এই এলাকা থেকে মেয়েদের নিখোঁজ বা পাচার হওয়ার খবর মেলে। মহারাষ্ট্রে ২০১৯ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে ১,৭৮,৪০০ জন মহিলা এবং ১৩,০৩৩ জন বালিকা নিখোঁজ হয়েছে। ওড়িশায় তিন বছরে ৭০,২২২ জন মহিলা এবং ১৬,৬৪৯ জন বালিকা নিখোঁজ হয়েছেন এবং ছত্তিশগড় থেকে ৪৯,১১৬ জন মহিলা এবং ১০,৮১৭ জন বালিকা নিখোঁজ হয়েছে ।ওড়িশায় তিন বছরে ৭০,২২২ জন মহিলা এবং ১৬,৬৪৯ জন বালিকা নিখোঁজ হয়েছেন এবং ছত্তিশগড় থেকে ৪৯,১১৬ জন মহিলা এবং ১০,৮১৭ জন বালিকা নিখোঁজ হয়েছে। কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলির মধ্যে দিল্লিতে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক বালিকা ও মহিলা নিখোঁজ রয়েছে।
রাজধানী দিল্লিতে ২০১৯ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে ৬১,০৫৪ জন মহিলা এবং ২২,৯১৯ জন বালিকা নিখোঁজ হয়েছে, জম্মু ও কাশ্মীরে ৮,৬১৭ জন মহিলা এবং ১,১৪৮ জন বালিকা নিখোঁজ হয়েছে। সরকার সংসদকে আরও জানিয়েছে, তারা সারা দেশে মেয়েদের সুরক্ষার জন্য বেশ কয়েকটি উদ্যোগ নিয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে যৌন অপরাধের বিরুদ্ধে কার্যকর প্রতিরোধের জন্য ফৌজদারি আইন (সংশোধনী), আইন, ২০১৩ প্রণয়ন। এছাড়াও, ১২ বছরের কম বয়সি মেয়েদের ধর্ষণের জন্য মৃত্যুদণ্ড সহ আরও কঠোর শাস্তির বিধান নির্ধারণের জন্য ফৌজদারি আইন (সংশোধন) আইন, ২০১৮ প্রণয়ন করা হয়েছে। এই আইনে ধর্ষণ মামলার তদন্ত ও চার্জশিট দুই মাসের মধ্যে শেষ করার এবং আরও দুই মাসের মধ্যে বিচার শেষ করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে।সরকার দেশজুড়ে ইমার্জেন্সি রেসপন্স সাপোর্ট সিস্টেম চালু করেছে, সমস্ত জরুরি ক্ষেত্রে একক নম্বর (১১২) ভিত্তিক সিস্টেম রয়েছে যেখানে কম্পিউটার-সহায়তায় দুর্গম এলাকা চিহ্নিত করে তথ্য প্রেরণ করা হয়। প্রযুক্তি ব্যবহার করে আটটি শহরে প্রথম পর্যায়ে সেফ সিটি প্রকল্প অনুমোদিত হয়েছে। সেগুলি হল,আহমেদাবাদ, বেঙ্গালুরু, চেন্নাই, দিল্লি, হায়দ্রাবাদ, কলকাতা, লখনউ এবং মুম্বাই। সংসদে আরও জানানো হয়েছে, ২০১৮ সালের ২০ সেপ্টেম্বর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক আইন প্রয়োগকারী সংস্থার দ্বারা সারা দেশে যৌন অপরাধীদের তদন্ত এবং ট্র্যাকিং সহজতর করার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ২০ সেপ্টেম্বর, ২০১৮ তারিখে যৌন অপরাধীদের উপর জাতীয় ডাটাবেস চালু করেছে।
All Rights Reserved © Copyright 2025 | Design & Developed by Webguys Direct