নায়ীমুল হক, কলকাতা, আপনজন: পশ্চিমবঙ্গ সরকারের শিক্ষা দপ্তরের নির্দেশক্রমে এই মাসের ২ তারিখ থেকে স্কুলে স্কুলে চলছে শিক্ষার্থী সপ্তাহ উদযাপন। নতুন শিক্ষাবর্ষে নতুন ক্লাসে শিক্ষার্থীদের বরণ করে নেওয়ার হরেক রকম আনন্দময় অনুষ্ঠান নিয়ে স্কুলগুলোতে শেখানো -শেখার কাজ শুরু হয়েছে। দমদমের অমরপল্লীর সুবিখ্যাত স্কুল শহীদ রামেশ্বর বিদ্যামন্দির এই শিক্ষার্থী সপ্তাহ উদযাপনের ক্ষেত্রে নানান বর্ণময় কর্মসূচি পালন করছে । শ্রদ্ধেয় শিক্ষক শিক্ষিকাদের পরম যত্নে শিক্ষার্থীদের মধ্যে মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীর শুভেচ্ছা বার্তা বিতরণ বা, গ্র্যাজুয়েশন সেরিমনিতে নতুন শ্রেণিতে ওঠার জন্য শংসাপত্র বিতরণের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের পারস্পরিক সহযোগিতা এবং সঙ্গী শিখন এর পরিসর বৃদ্ধির জন্য চারখানি মনীষী নামাঙ্কিত হাউস তারা এ বছর প্রতিষ্ঠা করেছেন। প্রাচীরপত্র প্রকাশ, শিক্ষার্থীদের আঁকা আর হাতের কাজের প্রদর্শনী, শিশু সংসদ গঠন, বৃক্ষরোপণ সহ উৎসে বর্জ্য পৃথকীকরণের মাধ্যমে পরিবেশ রক্ষায় সহায়তার হাতেকলমে পাঠ, সরকারি বিভিন্ন প্রকল্প-বৃত্তি পাওয়ার জন্য হেল্প ডেস্ক, লাইব্রেরির বই বিতরণের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের পড়ার অভ্যাস তৈরি করার জন্য নানান পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। দক্ষিণ দমদম পৌরসভা এবং পৌর হাসপাতালের সহায়তায় স্বাস্থ্য শিবিরের আয়োজন করা হয়েছে । ছেলেমেয়েদের বিভিন্ন তথ্যচিত্র দেখানোর মাধ্যমে তাদের জ্ঞানজগতের পরিধি বিস্তারের চেষ্টা করা হয়েছে।
এই সপ্তাহে একদিন ছিল ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ে নাটকের কর্মশালা। বিদ্যালয়ে এমন কর্মশালার ব্যবস্থাপনায় সক্রিয় সহযোগিতা করেছেন ইনস্টিটিউট অফ ফ্যাকচুয়াল থিয়েট্রিকাল আর্টস (IFTA) এর নাট্যকর্মী সদস্যরা। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কথায় নাটক, গান, ছবি আঁকা, আবৃত্তি- এই সহশিক্ষামূলক কাজকর্মগুলো ছেলেমেয়েদের মনোজগতের পরিপূর্ণ বিকাশের সহায়ক যা আসলে প্রথাগত শিক্ষাকেই অনেকটা এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে। পড়া মনে রাখতে পারে না, এমন শিক্ষার্থীও নাটকের সংলাপ মনে রেখে অভিনয় করতে পারে। করোনা পরবর্তী সময়ে শিক্ষার্থীদের শিক্ষামুখী রাখার জন্য এই ধরণের আনন্দময় শিক্ষা খুব জরুরি। বিদ্যালয়ের শিক্ষক শিক্ষিকাদের সকল কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ আর পরম যত্নে শিক্ষার্থীদের মনোজগৎ গড়ে তোলার আন্তরিক প্রচেষ্টার কথা তিনি উল্লেখ করেন। প্রধানশিক্ষকের কথার প্রতিফলন দেখা গেছে ছেলেমেয়েদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে। আজ যে কর্মশালা অনুষ্ঠিত হলো শহীদ রামেশ্বর বিদ্যামন্দিরে, তাতে প্রায় ৪৫ জন শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেছে। কর্মশালা শেষে তাদের হাসিমুখ গুলো বলে দিচ্ছিল যে তারা কতটা উপভোগ করেছে এই কর্মশালা। কর্মশালার প্রধান মেন্টর IFTA-র কর্ণধার শ্রী দেবাশীষ দত্ত জানালেন তিনি নিজেও খুব তৃপ্ত শহীদ রামেশ্বর বিদ্যামন্দিরে এই রকম একটি নাটকের কর্মশালা করতে পেরে। তিনি জানান শহীদ রামেশ্বর বিদ্যামন্দির অমরপল্লী তথা দমদম অঞ্চলের একটি যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ বিদ্যালয়, সেখানকার শিক্ষার্থীরা যেভাবে কর্মশালায় অংশগ্রহণ করেছে তাতে তিনি যথেষ্ট আশাবাদী। এমন কর্মশালার আয়োজনের জন্য বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে সাধুবাদ জানান তিনি। আনন্দময় শিক্ষার যে কথা শিক্ষানীতিতে বারবার শোনা যায়, তার রূপায়ণে শহীদ রামেশ্বর বিদ্যামন্দিরের এই প্রয়াস যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলাই যায়।
All Rights Reserved © Copyright 2025 | Design & Developed by Webguys Direct