আপনজন ডেস্ক: মমি এবং মিশর। একটির নাম নিলেই অন্যটির ছবি বা কথা অবলীলায় চোখের সামনে ভেসে ওঠে। মিশর মানেই সোনালি বালি, পিরামিড ও মমি। মিশরের রহস্যময় এই পিরামিড ছাড়াও বিভিন্ন জায়গায় এখন পর্যন্ত হাজার হাজার মমি আবিষ্কার হয়েছে। এসব মমির মধ্যে ফারাও থেকে শুরু করে রাজপ্রাসাদের গণ্যমান্য ব্যক্তি, পুরোহিত, দাস-দাসি, এমনকি বিড়াল, কুমিরের মমিও রয়েছে। সম্প্রতি মিশরের কায়রোর দক্ষিণাঞ্চলের সাকারা সমাধিক্ষেত্রের একটি কবরে মমি পাওয়া গেছে। যেটি কফিনের ভেতরে সোনায় মোড়ানো একটি মানুষের মমি। রহস্যময় এই মমির বয়স ৪ হাজার ৩০০ বছরেরও বেশি বলেই ধারণা প্রত্নতাত্ত্বিকদের। কফিনটি ৪ হাজার ৩০০ বছর পর প্রথমবারের মতো খোলা হয়েছে। যে ব্যক্তির মমি উদ্ধার হয়েছে, তার নাম হেকাশেপেস। ওই মমিটি ৫০ ফুট গভীর খাদের নিচে চুনাপাথরের সারকোফ্যাগাসের ভেতরে পাওয়া গেছে। সারকোফ্যাগাসেস হচ্ছে ভাস্কর্যশোভিত বা লিপিখচিত পাথরের শবধার। ধারণা করা হচ্ছে, মিশরে এ পর্যন্ত রাজপরিবারের বাইরে যতগুলো মমি পাওয়া গেছে, তার মধ্যে এ মমি সবচেয়ে প্রাচীন ও পরিপূর্ণ। কায়রোর দক্ষিণাঞ্চলের সাকারা সমাধিক্ষেত্রে আরো তিনটি কবরে মমি পাওয়া গেছে। প্রাচীন এ সমাধিস্থলে সবচেয়ে বড় যে মমি পাওয়া গেছে, তা খুনুমদজেদেফ নামের এক পুরোহিতের। দ্বিতীয় মমিটি মেরি নামের এক ব্যক্তির। তিনি ছিলেন রাজপ্রাসাদের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা। তার উপাধি ছিল ‘সিক্রেট কিপার’। এ উপাধির কারণে তিনি বিশেষ ধর্মীয় আচারগুলো পরিচালনা করতে পারতেন। তৃতীয় কবরটিতে ফেতেক নামের এক বিচারপতি ও লেখককে সমাহিত করা হয়েছিল। ওই কবরে একটি ভাস্কর্যও পাওয়া গেছে। ধারণা করা হচ্ছে, ওই সমাধি এলাকায় পাওয়া সবচেয়ে বড় ভাস্কর্য এটি। সমাধিক্ষেত্রে খননকারী দলটি দাস,পুরুষ, নারী এবং পরিবারের মতো খোদাই করা বিভিন্ন আকারের মূর্তির একটি ভাণ্ডারও আবিষ্কার করেছেন। এই মমিগুলো যেখানে পাওয়া গেছে সেই সাকারা অঞ্চলটি মিশরের প্রাচীন রাজধানী মেমফিসের একটি বিস্তৃত নেক্রোপলিসের অংশ। যেখানে বিখ্যাত গিজা পিরামিড, আবু স্যার, দাহশুর এবং আবু রুওয়েশের ছোট পিরামিড রয়েছে। কায়রো থেকে ১৯ মাইল দক্ষিণে পাওয়া পঞ্চম এবং ষষ্ঠ রাজবংশের সমাধিগুলোর একটি অংশ এটি। যা কর্মকর্তারা আশা করছেন যে এই অঞ্চলে পর্যটনদের আনাগোনা বাড়বে।
All Rights Reserved © Copyright 2025 | Design & Developed by Webguys Direct