এস এম শামসুদ্দিন, হাওড়া, আপনজন: ‘হোগলা’ গ্রামবাংলার প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী শিল্প। এ শিল্পের কারিগর নারীও পুরুষ উভয়েই । গ্রামের নারীরাই এ শিল্পকে টিকিয়ে রেখেছে। পারিবারিক বিভিন্ন কাজে হোগলা ব্যবহৃত হয়ে থাকে। বিশেষ করে গ্রামে হোগলার ব্যবহার লক্ষণীয়। ঘরের বিছানা, খাদ্যশস্য রোদে শুকানো, মিলাদ-মাহফিল, পূজা-পার্বণে অনেক মানুষকে বসতে দেওয়ার ক্ষেত্রেও হোগলা ব্যবহৃত হয়। আর এতে সাবলম্বী হচ্ছে নারী ও দিনমজুর পরিবারের মানুষ। পরিবারে পুরুষের পাশাপাশি নারীরাও বাড়তি উপার্জন করে সাবলম্বী হয়েছে। পরিবারে এনে দিয়েছে সচ্ছলতা। ২৬নম্বর জাতীয় সড়ক সংলগ্ন নিমদিঘি বাস্টান্ড।অন্যদিকে উলুবেডিয়া স্টেশন ।তারপরেই শহর উলুবেডিয়া । নিমদিঘির বিশিষ্ট ব্যবসায়ী শেখ হাফিজুর সাহেবের সাথে কথায় কথায় জানালেন , এখানে বেশ কয়েকজন বড হোগলা ব্যবসায়ী আছেন ।এছাড়া আছে দিনমজুর শ্রমিক।রাজখোলা,বিরশিবপুর ,লালতাগড ,বিভিন্ন জায়গা থেকে তাঁরা হোগলা পাতা কেন।সেটা বুনে চালান যায় দিঘা উড়িষ্যা ছাড়াও বিভিন্ন মাছের ভেড়ি এলাকায় । বিভিন্ন জায়গায় সবজি লরি চালান দেওয়ার সময় কাজে লাগে ।এছাড়াও দিঘার মাছ ব্যবসায়ীদের বিশেষ করে কাজে লাগে হোগলা পাতার ছই ।
জুলাই-আগস্ট মাসে এই গাছ থেকে পাতা সংগ্রহ করা হয় এবং মাদুর তৈরি হয়। এছাড়া হোগলা পাতা থেকে তৈরি হয় পুষ্টিগুণে ভরপুর মিষ্টি গুড়। এছাড়াও হোগলা ফলের তুলো থেকে তৈরি হয় নরম তুলতুলে বালিশ। ইওরোপে তিন হাজার বছর আগে হোগলা গাছের কন্দ ও পরাগ রেণু খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হতো। হোগলা পাতা সংগ্রহনদীর পাড়ে বা চরাঞ্চলে প্রাকৃতিকভাবে বেড়ে ওঠা হোগলা কার্তিক থেকে ফাল্গুন মাসের মধ্যে কেটে শুকিয়ে বিক্রির জন্য হাট-বাজারে নিয়ে আসা হয়। পরিবারের পুরুষরা বাজার থেকে হোগলা পাতা কিনে নিয়ে যান। বাকি কাজ করতে হয় নারীদের। এক মুঠি হোগলা পাতা ৫০-১০০ টাকায় কিনতে হয়। এক মুঠিতে ২টা হোগলা হয়। প্রতিটি হোগলা পাইকারি ৬০-১২০ টাকা বিক্রি করা যায়।যেভাবে তৈরি হয়হাট-বাজার থেকে কিনে আনা শুকনো হোগলা পাতা দেখতে ত্রিকোণাকৃতির। দক্ষ হাতে ১০ বাই ১২ ফুট বড় একটি হোগলা পাতার মাদুর তৈরি করতে ঘণ্টাখানেক সময় লাগে। বারো মাসই হোগলা তৈরি করা যায়।বিক্রি হয় যেভাবে হোগলা পাতার মাদুর বিক্রি হয় হাট-বাজারে। ব্যবসায়িরা পাইকারি দরে হোগলা কিনে থাকেন সেখান থেকে।
All Rights Reserved © Copyright 2025 | Design & Developed by Webguys Direct