সঞ্জীব মল্লিক, বাঁকুড়া, আপনজন: প্রোমোটার রাজ, ৪ তলার অনুমতি নিয়ে ৫ তলা বিল্ডিং করার অভিযোগ। বে আইনি নির্মাণ ও আর্থিক বঞ্চনার অভিযোগ তুলে জমির মালিক পক্ষ আদালতের দ্বারস্থ হতেই ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ, রাজনৈতিক বিতর্ক । ফের প্রোমোটার রাজের অভিযোগ উঠল সোনামুখী শহরে। পুরসভার আইন কানুনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে চার তলা বিল্ডিং এর অনুমতি নিয়ে প্রোমোটার দিব্যি হাঁকিয়ে বসেছিলেন পাঁচ তলা বিল্ডিং। প্রোমোটারের বিরুদ্ধে বে আইনি নির্মাণ ও আর্থিক বঞ্চনার অভিযোগ তুলে জমির মালিক পক্ষ আদালতের দ্বারস্থ হতেই আদালত সবদিক খতিয়ে দেখে পুরসভাকে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। এই ঘটনা সামনে আসতেই শুরু হয়েছে রাজনৈতিক বিতর্ক।
বাঁকুড়ার সোনামুখী পুরসভার ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের সোনামুখী কলেজ সংলগ্ন এলাকায় গৌতম চক্রবর্তী ও অলোক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামে ৩২ কাঠা জমি ছিল। জগদ্ধাত্রী কনস্ট্রাকশান নামের একটি নির্মাণ সংস্থা ওই জমির উপর ফ্ল্যাট তৈরীর জন্য জমির দুই মালিকের সঙ্গে চুক্তি করে। পরে সেখানে একটি পাঁচ তলা বিল্ডিং ও তৈরী করে ওই নির্মাণ সংস্থা। নির্মাণকাজ চলার সময়ই জমির দুই মালিক প্রথমে সোনামুখী পুরসভায় এবং পরে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়ে অভিযোগ করেন ওই নির্মাণ সংস্থা সোনামুখী পুরসভা থেকে চার তলা বিল্ডিং এর অনুমতি নিয়ে বে আইনি ভাবে পাঁচ তলা বিল্ডিং নির্মাণ করেছে। শুধু তাই না জমির মালিক পক্ষের অভিযোগ তাঁদের সাথে আর্থিক ভাবে প্রতারণাও করেছে ওই সংস্থা। পুরসভা বিষয়টি নিয়ে পদক্ষেপ না করলেও কলকাতা হাইকোর্ট অবিলম্বে অভিযোগ খতিয়ে দেখে সোনামুখী পুরসভাকে দুমাসের মধ্যে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। কিন্তু পুরসভার একেবারে নাকের ডগায় কীভাবে এমন অনুমতি বিহীন নির্মাণ করা হল তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
জমির মালিক পক্ষের দাবী নির্মাণকারী সংস্থাটি যথেষ্ট প্রভাবশালী। সেই প্রভাব খাটিয়েই চার তলা বিল্ডিং এর অনুমতি নিয়ে দিব্যি পাঁচ তলা বিল্ডিং এর নির্মাণ করেছে সংস্থাটি। তাঁদের সাথে আর্থিক প্রতারণার অভিযোগেও সরব হয়েছেন তাঁরা। অনুমতি বহির্ভূত নির্মাণের কথা কার্যত স্বীকার করে নিয়েছেন নির্মাণ কারী সংস্থার মালিক। তবে তাঁর দাবী নির্মাণের আগেই তিনি সাত তলা বিল্ডিং তৈরীর অনুমতি চেয়ে পুরসভায় আবেদন জানিয়েছিলেন। কিন্তু সে সময় পুরসভার সর্বাধিক চারতলা বিল্ডিং এরই অনুমতি দেওয়ার ক্ষমতা ছিল। তাই চারতলা বিল্ডিং এর অনুমতি দেওয়ার পাশাপাশি বিল্ডিং প্ল্যান সহ অন্যান্য নথি খতিয়ে দেখে পুরসভা স্পষ্টতই জানিয়েছিল যে সাত তলা পর্যন্ত নির্মাণের অনুমতি দেওয়া যেতে পারে। সেই নথির ভিত্তিতেই পাঁচ তলা বিল্ডিং তৈরী করা হয়েছে। জমির মালিকদের তোলা আর্থিক প্রতারণার অভিযোগও উড়িয়ে দিয়েছে নির্মাণকারী সংস্থাটি। আদালতের লিখিত নির্দেশ এখনো না মিললেও পুরসভার তরফে ইতিমধ্যেই বিষয়টি নিয়ে তৎপরতা শুরু হয়েছে। পুরসভার দাবি বিষয়টি আদালতে গড়ানোর কারণে তাঁরা এতদিন হস্তক্ষেপ করেননি। এবার আদালতের নির্দেশ মোতাবেক পদক্ষেপ করা হবে।
All Rights Reserved © Copyright 2025 | Design & Developed by Webguys Direct