আপনজন ডেস্ক: কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধি রবিবার ‘এক দেশ, এক নির্বাচন’ ধারণার নিন্দা করেছেন এবং এটিকে ভারতের উপর আক্রমণ বলে অভিহিত করেছেন। রাহুল গান্ধি সোশ্যাল মিডিয়া টুইটার এ লিখেছেন, ‘ইন্ডিয়া অর্থাৎ ভারত হচ্ছে এর রাজ্যগুলোর একটি ইউনিয়ন। এক দেশ, এক ভোট পরিকল্পনা ভারত ও এর রাজ্যগুলোর ওপর একটি হামলা।’ একসঙ্গে লোকসভা ও বিধানসভার নির্বাচন আয়োজনের বিভিন্ন দিক খতিয়ে দেখতে ইতিমধ্যে একটি উচ্চপর্যায়ের কমিটি করেছে সরকার। কমিটির নেতৃত্ব দেবেন প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। একযোগে লোকসভা, বিধানসভা, পৌরসভা ও পঞ্চায়েত নির্বাচন করার বিষয়টি খতিয়ে দেখতে এবং এ নিয়ে নিজেদের সুপারিশ জানাতে গতকাল শনিবার আট সদস্যের ওই কমিটিকে নির্দেশ দিয়েছে সরকার।বিষয়টি নিয়ে কাজ করার পর এ পদ্ধতিতে নির্বাচন আয়োজন করতে সংবিধানে সুনির্দিষ্ট কী কী সংশোধন আনতে হবে, সে বিষয়ে সুপারিশ দেবে কমিটি। এ ছাড়া জনপ্রতিনিধিত্ব আইনসহ অন্যান্য আইনে কী পরিবর্তন আনার দরকার পড়তে পারে, সে বিষয়টিও জানাবে।
এদিকে উচ্চপর্যায়ের ওই কমিটিতে থাকার প্রস্তাব এরই মধ্যে ফিরিয়ে দিয়েছেন কংগ্রেস নেতা অধীর রঞ্জন চৌধুরী। পাশাপাশি রাজ্যসভায় বিরোধীদলীয় নেতা মল্লিকার্জুন খাড়গেকে কমিটিতে না রাখায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তিনি। খাড়গের বদলে সাবেক বিরোধীদলীয় নেতা গুলাম নবী আজাদকে কমিটিতে রেখেছে সরকার। এক দেশ, এক ভোট নীতি নতুন নয়। স্বাধীন গণতান্ত্রিক ভারতের ভোট ওই নীতি মেনেই শুরু হয়েছিল। ১৯৫২ থেকে ১৯৬৭ সাল পর্যন্ত ওই নীতিতেই লোকসভা ও বিধানসভা ভোট হয়ে এসেছে। কিন্তু রাজনীতি যত জটিল হয়েছে, দলের সংখ্যা বেড়েছে। দল ও সরকার ভাঙা–গড়ার প্রবণতা যত বেড়েছে, একদলীয় শাসনের জায়গা নিয়েছে বহুদলীয় জোট সরকার, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ততই নড়বড়ে হয়েছে। জটিলতাও বেড়েছে। এ অবস্থায় নীতিগতভাবে এক দেশ, এক ভোট বাঞ্ছনীয় হলেও তার কার্যকারিতা নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠছে। এদিকে কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশও ‘এক দেশ, এক নির্বাচন’ নিয়ে একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন নিয়ে বিজেপি নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকারের সমালোচনা করে বলেছেন, কমিটির সময় ‘অত্যন্ত সন্দেহজনক’ এবং ‘এর শর্তাবলী ইতিমধ্যে তাদের সুপারিশ নির্ধারণ করেছে’। জয়রাম রমেশ এটিকে একটি “আচার-অনুষ্ঠানমূলক অনুশীলন” বলে অভিহিত করেছেন। শনিবার লোকসভা, রাজ্য বিধানসভা, পৌরসভা ও পঞ্চায়েতের একযোগে নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য সুপারিশ করতে প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের নেতৃত্বাধীন আট সদস্যের কমিটির সদস্য হতে অস্বীকার করেছেন কংগ্রেস সাংসদ অধীর রঞ্জন চৌধুরী।এই কমিটিতে রয়েছেন, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, ডেমোক্রেটিক প্রগ্রেসিভ আজাদ পার্টির সভাপতি গুলাম নবি আজাদ, পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের প্রাক্তন চেয়ারম্যান এন কে সিং, লোকসভার প্রাক্তন সেক্রেটারি জেনারেল সুভাষ কাশ্যপ, সিনিয়র অ্যাডভোকেট হরিশ সালভে এবং প্রাক্তন চিফ ভিজিল্যান্স কমিশনার সঞ্জয় কোঠারি।কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে লেখা চিঠিতে অধীর চৌধুরী বলেন, যে কমিটির টার্মস অব রেফারেন্স প্রস্তুত করা হয়েছে, সেই কমিটিতে কাজ করতে অস্বীকার করতে আমার কোনো দ্বিধা নেই। আমি ভয় পাচ্ছি, এটা পুরোপুরি চোখে ধুলো দেওয়ার মতো ঘটনা। অধীর যে থাকবেন না তা আরও সৃদুঢ় করল ‘এক দেশ, এক নির্বাচন’ নিয়ে রাহুলের মন্তব্য।
All Rights Reserved © Copyright 2025 | Design & Developed by Webguys Direct