জয়প্রকাশ কুইরি , পুরুলিয়া, আপনজন: পুরুলিয়ার বেগুনকোদর রেলওয়ে স্টেশন। একটা সময় ভূতুড়ে রেলওয়ে স্টেশনের নামে গুজব ছড়ানো হয়। আর এনিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেক গুজব ছড়াতে থাকে। তাতে অনেকে বিশ্বাসও করেছিলেন। কিন্তু সময় বদলেছে। গত দুই বছরে আগের পুরানো ছবিটার আমূল পরিবর্তন ঘটেছে। স্থানীয়দের প্রচেষ্টায় ছন্দে ফিরেছে বেগুনকোদর। বর্তমানে ওভার ব্রিজ তৈরি করেছে রেল,বাড়িয়েছে আলোর সংখ্যাও। এতে যাত্রীদের যাতায়াত স্বাভাবিক ভাবেই বেড়েছে। পুরুলিয়ার ঝালদা ও কোটশিলার মধ্যবর্তী বেগুনকোদর রেলওয়ে স্টেশন। এই স্টেশন নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেক অপপ্রচার করা হয়। গল্প ফেঁদে বলা হয় এই স্টেশনে নাকি গা ছমছম করে ও ভূত দেখা যায়। স্থানীয়রা জানিয়েছেন,কিছু দুষ্কৃতি এই স্টেশন দিয়ে আসা যাওয়া করত। তাদের কর্ম সিদ্ধির জন্য প্রচার হয় ভূত আছে, ভূত আছে,কিন্তু কনো ভূত নেই। আমরা রাত আঁধার আসা যাওয়া করি ভূত কিছু পাই নি। তাঁরা আরও জানান আমরা চাই আমাদের স্টেশন যাতে ভালো হয়,লোকজনের আসা যাওয়া হয়। ইতিহাস ঘেঁটে জানা যায় ১৯৬০ সালে বেগুনকোদর স্টেশনটি চালু হয় পুরুলিয়ার কোটশিলা ও ঝালদার মধ্যবর্তী বেগুনকোদর স্টেশন। কান পাতলেই শোনা যায় অনেক বছর আগে এই স্টেশনে তৎকালীন স্টেশন মাস্টারের মেয়ে আত্মহত্যার গুজব। যার জেরে স্টেশনে যাত্রীদের যাতায়াত প্রায় বন্ধ হতে শুরু করে। ১৯৬৭ সাল থেকে বেগুনকোদর স্টেশনে আর ট্রেন থামতো না। ২০০৯ সাল থেকে ফের ট্রেন চলতে শুরু করে। তবে ট্রেন চললেও ভয় কাটেনি। আবারও বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্মে অপপ্রচার। শুরু হয় ভূতের ভয় দেখানো। ২০১৭ সালে পুরুলিয়ার বিজ্ঞান মঞ্চ ও ইন্ডিয়ান প্যারানরমাল সোসাইটি যৌথ ভাবে ময়দানে নামে। এই টিমের সদস্যরা বেগুনকোদর স্টেশনে রাত কাটান। যাতে স্থানীয়দের মন থেকে ভূতের ভয় কাটানো যায়। এরপরও আতঙ্ক কাটেনি। বছর দুয়েক হলো ছবিটা বদলেছে। স্থানীয়দের দাবিদাবা মেনে স্টেশনে আরও আলো লাগিয়েছে রেল। হয়েছে ওভার ব্রিজ। এসবের জেরে যাত্রীদের সংখ্যা বেড়েছে। ভয়ও কেটেছে। আর উন্নয়নের ঠেলায় ভূতও পালিয়েছে।
All Rights Reserved © Copyright 2025 | Design & Developed by Webguys Direct