আপনজন ডেস্ক: তাজিকিস্তানে বেআইনিভাবে বিদ্যুৎ ব্যবহার করলে ১০ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ডের বিধান চালু করা হয়েছে। পানির ঘাটতির কারণে দীর্ঘস্থায়ী জ্বালানি সংকট আরো তীব্র হওয়ায় মধ্য এশীয় দরিদ্র দেশটি এ পদক্ষেপ নিল। তাজিকিস্তানের জ্বালানি ও পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় শনিবার ‘বিদ্যুৎ ব্যবহারের নিয়ম লঙ্ঘনের ক্ষেত্রে ফৌজদারি দায়’ আরোপের ব্যবস্থা ঘোষণা করে। সরকারি নিয়ন্ত্রণে থাকা গণমাধ্যম বিষয়টি এড়িয়ে গেলেও সোমবার এটি স্বাধীন সংবাদমাধ্যমগুলোতে প্রকাশিত হয়। দেশটির জরাজীর্ণ জ্বালানি অবকাঠামো ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটাতে হিমশিম খাওয়ায় প্রতি বছর ছয় মাস ধরে বিদ্যুৎ ব্যবহারে বিধি-নিষেধ থাকে। নতুন নিয়ম অনুযায়ী, যারা বিদ্যুৎ মিটার সরিয়ে ফেলবে বা বাইপাস করবে, তাদের ১০ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে। সাবেক সোভিয়েত প্রজাতন্ত্র তাজিকিস্তান ১৯৯২ সাল থেকে প্রেসিডেন্ট এমোমালি রাখমনের শাসনে রয়েছে। সাবেক এই রাষ্ট্রীয় খামার ব্যবস্থাপক দীর্ঘদিন ধরে কঠোর হাতে দেশ চালাচ্ছেন। এর আগে এপ্রিলের শুরুতে দেশটির বিচারমন্ত্রী রুস্তম শোয়েমুরোদ বলেন, মিটারের হিসাব বিকৃত করা বা তা এড়িয়ে গিয়ে বিদ্যুৎ ব্যবহারের ফলে ‘দেশের অর্থনৈতিক স্বার্থে মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে’। দেশটির বিদ্যুৎ উৎপাদনের প্রায় ৯৫ শতাংশ জলবিদ্যুৎকেন্দ্রের ওপর নির্ভরশীল, যার জন্য পানির সরবরাহ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু পানির ঘাটতির কারণে দীর্ঘদিন ধরেই নিয়মিত বিদ্যুৎবিভ্রাট চলছে।
গত মার্চে প্রেসিডেন্ট রাখমন বিদ্যুতের অযৌক্তিক ব্যবহারে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। মধ্য এশিয়ার এই দেশে যেখানে গড় মাসিক আয় ২৪০ মার্কিন ডলারেরও কম, সেখানে বিদ্যুৎ অপচয় পরিস্থিতিকে আরো জটিল করে তুলছে। এই সংকট নিরসনে রাখমন বৃহৎ রগুন জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের ওপর জোর দিচ্ছেন। সোভিয়েত আমলে বিংশ শতাব্দীর সত্তরের দশকে প্রথম এই প্রকল্পের পরিকল্পনা নেওয়া হয়। তবে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতন ও নব্বইয়ের দশকে তাজিকিস্তানের গৃহযুদ্ধের কারণে তা পিছিয়ে পড়ে।
All Rights Reserved © Copyright 2025 | Design & Developed by Webguys Direct