নাজিম আক্তার, চাঁচল, আপনজন: অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের রান্নাঘর ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠল গ্রামের এক প্রভাবশালী পরিবারের বিরুদ্ধে। রান্না ঘর না থাকায় টানা দু-দিন ধরে মিলছে না শিশু ও প্রসূতিদের পুষ্টিকর খাবার।শনিবার রান্না না হওয়ায় ক্ষোভে ফেটে পড়লেন অভিভাবকেরা। ভাঙচুরের ঘটনায় দোষীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে গ্রামীণ সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ দেখালেন ক্ষিপ্ত গ্রামবাসীরা। শনিবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে মালদহের চাঁচল-১ নং ব্লকের অলিহোন্ডা গ্রাম পঞ্চায়েতের মহব্বতপুর গ্রামে। টানা এক ঘন্টা ধরে চলে বিক্ষোভ।বিক্ষোভে সামিল হন স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য।এদিকে রান্না না হওয়ায় খাবার বদলে খালি হাতে ফিরছে শিশু ও মায়েরা।প্রশাসন ও সিডিপি কোনো ভ্রুক্ষেন নিচ্ছেনা বলে অভিযোগ গ্রামবাসীদের। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে,শুক্রবার রাতের আঁধারে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের রান্নাঘর ভেঙে বাঁশ ও টিন অদূরে ফেলে আসে ওই পরিবারের লোকজনেরা।ভাঙচুরে গ্রামবাসীরা বাধা প্রদান করলে ওই পরিবারের মহিলা নুরবানু বেগম ও তার দুই মেয়ে হাঁসুয়া,ফার্সা নিয়ে গ্রামাসীদের দিকে তেড়ে আসে বলে অভিযোগ। যে সরকারি জায়গায় অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের রান্না ঘর নির্মাণ করা হয়েছিল সেটি নুরবানু বেগমের বাড়ির মূল ফটকের জায়গা।সরকারি জায়গা থাকলেও নুরবানু সেই জায়গায় রান্না ঘর না দেওয়ার জন্য বদ্ধ পরিকর।এদিন নুরবানু বেগম সহ তার দুই মেয়ে আসমা ও রেশমা রান্ন ঘর ভেঙে গুড়িয়ে দেয়।সেই ভিডিও সামাজিক ভাইরাল হতেই চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়। সরকারি জায়গায় অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের রান্না ঘর ভাঙচুরের ঘটনায় দোষীদের শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভে সামিল হন গ্রামবাসীরা।শনিবার গ্রামীণ সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভে দেখান তারা। গ্রামের এক বাসিন্দা মাবুদ আলমের অভিযোগ,অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের রান্না ঘর রাখতে দিবেনা মহিদুল ইসলামের পরিবার। গতকাল সন্ধ্যায় মহিদুলের স্ত্রী নুরবানু বেগম ও তার দুই মেয়ে রান্না ঘরে ভাঙচুর চালায়।বাঁশ ও টিন খুলে বাগানে ফেলে আসে।গ্রামবাসীরা প্রতিবাদ করলে হাঁসুয়া ও ধারালো অস্ত্র তেড়ে আসে নুরবানু বেগম ও তার দুই মেয়ে।
এমনকি শনিবার সকালে অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী রান্না করতে গেলে তাকে হাঁসুয়া দেখিয়ে শাসানো হয় বলে অভিযোগ।ভয় দেখিয়ে শিশুদেরও তাড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠছে ওই পরিবারের বিরুদ্ধে। মহব্বতপুর অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের কর্মী চন্দনা দাস বলেন,মহব্বতপুর উপ স্বাস্থ্য কেন্দ্রের পাশে সরকারি জমিতে নির্মাণ করা হয়েছে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের রান্না ঘর।কিন্তু এলাকার প্রতিবেশী মহিদুর ইসলাম সেই রান্না ঘরটি ভেঙে ফেলেন।রান্না ঘর না থাকায় শিশু ও প্রসূতিরা দুই দিন ধরে পুষ্টিকর খাবার পাচ্ছে না।আমি রান্না করতে গেলে মারার জন্য উদ্যত হচ্ছে মহিদুরের স্ত্রী ও দুই মেয়ে।ভয়ে সেন্টারে আসছেননা শিশুরাও। চাঁচল-১ নং ব্লকের সিডিপিও অলোক মণ্ডল জানিয়েছেন,যারা রান্না ঘর ভেঙেছে তাদের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করা হচ্ছে।বিষয়টি বিডিওকেও জানানো হয়েছে।শিশু ও মায়েদের খাবার কিভাবে প্রদান করা যায় ব্যবস্থা করা হচ্ছে। পুলিশের ভূমিকা নিয়ে ক্ষুদ্ধ স্থানীয় তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য।পঞ্চায়েত সদস্য জামালুদ্দিন আহমেদ বলেন,ভাঙচুরের ঘটনা নিয়ে পুলিশকে জানানো হয়েছিল।কিন্তু পুলিশ কোন পদক্ষেপ না নিয়ে ঘটনাস্থ থেকে ঘুরে চলে যায়।আমরা চাই এটার সুষ্ঠু সমাধান। পঞ্চায়েত সদস্য আরোও বলেন,দুই দশক ধরে সেখানে অঙ্গনওয়াড়ি সেন্টারের রান্না ঘর ছিল।মহিদুর পরে সেখানে জায়গা ক্রয় করে বাড়ি নির্মাণ করেছে। যদিও পুলিশ জানিয়েছে,লিখিত অভিযোগ পড়লেই পদক্ষেপ করা হবে।যদিও ভাঙচুরের ঘটনা নিয়ে মহিদুরের স্ত্রী নুরবানু বেগম জানান,আমার বাড়ির সামনে দোকান রয়েছে।দোকানের সামনে গ্রামবাসীরা জোরপূর্বক ভাবে রান্না ঘর করেছে।ফলে দোকান বন্ধ রয়েছে।দোকান বন্ধ থাকলে আমরা চলব কি করে।কাউকে মারধর করিনি বলে দাবি করেছেন নুরবানু।
All Rights Reserved © Copyright 2025 | Design & Developed by Webguys Direct