আপনজন ডেস্ক: ইসরাইলের চরম বর্বরতা দিন দিন বেড়েই চলছে অবরুদ্ধ গাজায়। ইতিহাসের নির্মম যুদ্ধগুলোকে হার মানছে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যপ্রাচ্যের সন্ত্রাসী রাষ্ট্র ইসরাইলের ভয়াল আগ্রাসন। অমানবীয় অত্যাচার প্রতিনিয়তই মনে করাচ্ছে পূর্বের কালো অধ্যায়। গাজার বর্তমান পরিস্থিতির ভয়াবহতা বারবার স্মরণ করাচ্ছে হিরোশিমার পারমাণবিক বিস্ফোরণকে। নির্বিচারে অসহায়-নিরস্ত্র মানুষদের হত্যায় হিরোশিমার চেয়েও বেশি বোমা নিক্ষিপ্ত হচ্ছে গাজায়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে কোণঠাসা মুহূর্তে জাপানের হিরোশিমা ও নাগাসাকিতে ১৫ হাজার টন ওজনের এটম বোমা ফেলেছিল যুক্তরাষ্ট্র। মুহূর্তে ঝলসে গিয়েছিল দুই শহরই। আজও সেই ক্ষত বয়ে বেড়াচ্ছে জাপান। ঠিক একই বর্বরতা গাজাতেও চালাচ্ছে ইসরাইল। মাত্র ২৭ দিনে ২৫ হাজার টন বোমা ফেলেছে। যা প্রায় দুটি পারমাণবিক বোমার সমান।
বৃহস্পতিবার সুইজারল্যান্ডভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা ‘ইউরো-মেডিটারেনিয়ান হিউম্যান রাইটস অবজারভেটরি’র এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।জাপানের হিরোশিমার আয়তন ৯০০ বর্গকিলোমিটার। অন্যদিকে গাজার আয়তন ৩৬৫ বর্গকিলোমিটারের বেশি নয়। অর্থাৎ গাজায় ফেলে দেওয়া বিস্ফোরকগুলোর শক্তি হিরোশিমার চেয়েও ভয়াবহ। ইসরাইলের শক্তিশালী ধ্বংসাত্মক বোমা ১৫০ থেকে ১,০০০ কিলোগ্রাম পর্যন্ত হয়ে থাকে। ইসরাইলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিবৃতি অনুযায়ী, শুধু গাজা শহরে দশ হাজারেরও বেশি বোমা ফেলা হয়েছে। নৃশংস হামলায় গাজা স্ট্রিপে আন্তর্জাতিকভাবে নিষিদ্ধ অস্ত্র ব্যবহার করছে বলেও অভিযোগ তুলেছে সংস্থাটি। এর মধ্যে রয়েছে ক্লাস্টার এবং ফসফরাস বোমা। গুরুতর এ বোমায় মানুষের শরীর মারাত্মভাবে পুড়ে যাচ্ছে। বোমায় আহত ব্যক্তিদের ত্বক গলে যায়। শরীরে অদ্ভুত ফোলাভাব এবং বিষক্রিয়া সৃষ্টি করে। অবশেষে মৃত্যুর দিকে নিয়ে যায়।ইউরো-মেড সংস্থাটি জোর দিয়ে বলেছে, ইসরাইলের ধ্বংসাত্মক নির্বিচার এবং অসামঞ্জস্যপূর্ণ আক্রমণগুলো যুদ্ধের আইন এবং মানবিক আইনকে লঙ্ঘন করে। সংস্থাটি ইসরাইলের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক তদন্ত কমিটি গঠনের আহ্বান জানিয়েছে।
All Rights Reserved © Copyright 2025 | Design & Developed by Webguys Direct