সারিউল ইসলাম, মুর্শিদাবাদ, আপনজন: “ভোটে হেরেছি, এক্স হয়েছি, জেড হয়ে যায়নি। কংগ্রেস হারলেও হারিয়ে যায়নি।” সভামঞ্চ দাঁড়িয়ে কার্যত এই মন্তব্যই করলেন বহরমপুরের প্রাক্তন সাংসদ তথা কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য অধীর রঞ্জন চৌধুরী। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় জিয়াগঞ্জে কংগ্রেসের কর্মীসভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে অধীর চৌধুরী বক্তব্য রাখতে গিয়ে বলেন, “আমার ফিরে আসা নয়, কংগ্রেসের ফিরে আসা দরকার। কংগ্রেস হারলেও, হারিয়ে যায় না। কংগ্রেস বেঁচে থাকে মানুষের ভাবনায়। আজ যে আছে, কাল সে থাকবে না।” অধীরের এহেন মন্তব্য তাঁর কংগ্রেসে থাকারই ইঙ্গত। কারণ, বহুবার সামাজিক মাধ্যমে এবং রাজনৈতিক ময়দানে অধীরের বিজেপিতে যোগ দেওয়ার গল্পের রটনা ছড়িয়েছে। সেই রটনা মিথ্যে প্রমাণ করতেই অধীরের এই মন্তব্য। বক্তব্য রাখতে গিয়ে অধীর চৌধুরী আরও বলেন, “প্রায় ৭০ শতাংশ সংখ্যালঘু অধ্যুষিত মুর্শিদাবাদ থেকে আমি সাংসদ নির্বাচিত হয়েছিলাম। এমনকি জঙ্গিপুর মহকুমা যেখানে প্রায় ৮০ শতাংশ সংখ্যালঘুদের বসবাস, সেখান থেকে প্রণব মুখার্জি সাংসদ নির্বাচিত হন। কারণ কংগ্রেস ধর্ম, দল-মত নির্বিশেষে মানুষের হয়ে কাজ করায় বিশ্বাসী। সেই কারণে মুসলিম প্রার্থীদের পরাজিত করে কংগ্রেসের হিন্দু প্রার্থীদের নির্বাচনে জয়ী করেছিল জেলার মানুষ। আমি ধর্মনিরপেক্ষতা কোন বইতে নয় বরং মুর্শিদাবাদ জেলার কাছে শিখেছি।” অধীর আক্ষেপ করে বলেন, “আমি হিন্দুও হলাম না, আবার মুসলিমও না। মানুষ হয়ে থাকতে গিয়ে বিভাজনের রাজনীতিতে পড়ে হেরে গেলাম।”
সামশেরগঞ্জে দাঙ্গা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এতদিন আমরা হিন্দু-মুসলিম বুঝিনি। একদল রাজনৈতিক নেতা ভোটের জন্য আমাদের মাঝে বিভাজন করছে। আমরা বিভাজনের রাজনীতি মানি না। বক্তব্য শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে অধীর বলেন, উপরাষ্ট্রপতি যে মন্তব্য করেছেন তা সংবিধানবিরোধী। ভারতবর্ষে বিচার ব্যবস্থা আছে, সংবিধান আছে। তাঁর কথা মানি না। এদিন কর্মীদের উদ্বুদ্ধ করতে জিয়াগঞ্জ থেকে শুরু হওয়া তাঁর রাজনৈতিক জীবনের বর্ণনা দেন অধীর চৌধুরী।
All Rights Reserved © Copyright 2025 | Design & Developed by Webguys Direct