সঞ্জীব মল্লিক, বাঁকুড়া, আপনজন: বাঁকুড়া গ্রামে পাইপ লাইন বসেছে, আছে একাধিক নলকূপও। তবু গ্রামের মানুষের পানীয় জল ও রান্নার জলের চাহিদা মেটাতে একমাত্র ভরসা দেড় কিলোমিটার দূরের ডাংরা নদীতে বয়ে যাওয়া জল ।
গ্রামের মেঠো রাস্তা। সেই রাস্তা দিয়ে প্রবল রৌদ্রে মাথায় হাঁড়ি কলসি নিয়ে দেড় কিলোমিটার দুরের নদী থেকে লাইন দিয়ে জল বয়ে নিয়ে যাচ্ছে গ্রামের মহিলারা। না। এই ছবি রাজস্থানের কোনো গ্রামের নয়। এই ছবি এ রাজ্যের এমন এক জেলার যে জেলায় শুধুমাত্র পরিস্রুত পানীয় জল বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে খরচ হয়েছে কয়েকশো কোটি টাকা।
বাঁকুড়ার ছাতনা ব্লকের একেবারে সীমানাবর্তী গ্রাম গুনিয়াদা। গ্রামে সব মিলিয়ে বসবাস ২৬ টি আদিবাসী পরিবারের। গ্রামের মানুষের পানীয় জলের চাহিদা পূরণের জন্য সাকূল্যে দুটি নলকূপ বসানো হয়। কিন্তু দুটি নলকূপের জল এতটাই দূষিত যে তা ব্যবহারের অযোগ্য। বাঁকুড়া জেলা জুড়ে কয়েকশো কোটি টাকা খরচ করে গ্রামে গ্রামে নলবাহিত পানীয় জল সরবরাহের প্রকল্প রূপায়িত হলে গুনিয়াদা গ্রামেও পৌঁছায় জল সরবরাহের পাইপ লাইন। বাড়ি বাড়ি বসানো হয় কলও। মাঝে কয়েকটা বছর কেটে গেলেও সেই নল দিয়ে মাসে দশে জল পড়ে। নল দিয়ে যেদিন জল আসে সেদিন কোনো বাড়িতে এক বালতি জল পড়ে কোনোদিন আবার সেটুকুও মেলেনা। অগত্যা গ্রামের তীব্র জল সঙ্কট মেটানোর ক্ষেত্রে একমাত্র ভরসা দেড় কিলোমিটার দূর দিয়ে বয়ে যাওয়া ডাংরা নদীর জল। প্রবল গ্রীষ্মে চড়া রোদে মাথায় হাড়ি কলসি নিয়ে সেই ডাংরা নদীর বয়ে যাওয়া জল সংগ্রহ করে বাড়িতে নিয়ে এসে জলের চাহিদা পূরণই দস্তুর বাঁকুড়ার ছাতনা ব্লকের প্রান্তিক এই গুনিয়াদা গ্রামের মানুষের। কোটি কোটি টাকা খরচ করে জল প্রকল্প তৈরীর পরেও বাঁকুড়া জেলার প্রান্তিক এই গ্রামের পানীয় জল সরবরাহের কেন এমন হাল? স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্ব এর জন্য দূষেছে রাজ্যের শাসক দলকে। তৃনমূল নেতৃত্ব তথা স্থানীয় পঞ্চায়েত সমিতির দাবী গ্রামে পানীয় জলের তেমন সঙ্কট নেই। গ্রামবাসীরা নাটক করছে।
ছবি: চিরঞ্জিত বিশ্বাস
All Rights Reserved © Copyright 2025 | Design & Developed by Webguys Direct