সঞ্জীব মল্লিক, বাঁকুড়া, আপনজন: বাঁকুড়া শহরের প্রাণকেন্দ্র মাচানতলা। সেই মাচানতলা বাজারের প্রশস্ত রাজপথ আজ কার্যত এঁদোগলি। রাস্তার দুপাশ জুড়ে গ্রীন সিটি প্রকল্পের ধংসাবশেষ। তারপরও রাস্তার যে টুকু অংশ রয়েছে তার একটা বড় অংশ হকারদের দখলে। ফলে যানজট বাঁকুড়া শহরের নিত্যদিনের ছবি। রাস্তা হকারমুক্ত করতে নেমে পুরসভার কর্তা থেকে প্রশাসনিক আধিকারিকদের কাছে উঠে এল পুরসভার সেই ব্যার্থতার ছবিটাই। রাজ্যের আর পাঁচটা শহরের মতো বাঁকুড়া শহরের বয়সও কয়েক’শ বছর। কিন্তু অন্যান্য পুরানো শহরগুলির তুলনায় বাঁকুড়া শহরের রাস্তাঘাট বেশ প্রশস্তই বলা চলে। কিন্তু সেই রাস্তাঘাট নিয়ে পুরসভার বারংবার গবেষণা কার্যত স্তব্ধ করে দিয়েছে বাঁকুড়া শহরের জনজীবনের গতিকে। আজ থেকে কয়েকবছর আগে পুরসভা ও প্রশাসনের তরফে বাঁকুড়ার মাচানতলা এলাকার রাস্তা হকার মুক্ত করে সেখানে রূপায়ন করা হয় গ্রীন সিটি প্রকল্পের। রাস্তার পিচের অংশ বাদ দিয়ে দুপাশের একটা বড় অংশ তারজালি দিয়ে ঘিরে সৌন্দর্যায়নের উদ্যেশ্যে লাগানো হয় বাহারি গাছ। কিন্তু ব্যাস ততদুরই। উপযুক্ত রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে সেই বাহারি গাছের আজ অবশিষ্ঠ প্রায় কিছুই নেই। রাস্তার দুদিকে তারজালি দেওয়া ঘেরা অংশে জমছে জঞ্জালের স্তুপ। যে হকারদের উচ্ছেদ করে পুনর্বাসন দেওয়া হয়েছিল শহরের ফাঁকা জায়গায় অবস্থিত কৃষক বাজারে সেখানে ব্যবসা না চালিয়ে হকাররা ফের ফিরে আসতে শুরু করে মাচানতলা এলাকায় রাস্তার দুধারে। গ্রীন সিটি প্রকল্পের তারজালির বেড়ার বাইরে কার্যত পিচ রাস্তার উপর পসরা সাজিয়ে বসেন তাঁরা। গত কয়েকবারের মতো বুধবার বাঁকুড়া সদর মহকুমা শাসক ও বাঁকুড়া সদর থানার পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে হকার উচ্ছেদে নেমে কার্যত ধাক্কা খেতে হল পুরসভাকেই রাস্তা হকার মুক্ত করার অভিযান লাগাতার চালানো হবে বলে প্রশাসনের তরফে হুঁশিয়ারি দেওয়া হলেও তাতে বিশেষ হেলদোল নেই হকারদের। হকারদের দাবী হকারদের দখলদারি নয়, পরিকল্পনার অভাবে কার্যত ব্যার্থ হওয়া গ্রীন সিটি প্রকল্পই শহরের যানজটের অন্যতম কারণ।
All Rights Reserved © Copyright 2025 | Design & Developed by Webguys Direct