সারিউল ইসলাম, মুর্শিদাবাদ, আপনজন: পরিবেশ বান্ধব তন্তু জাতীয় ফসল পাট। শিল্প বিপ্লবের সময় ফ্লাক্স এবং হেম্প এর স্থান দখলের পর পাটের যাত্রা শুরু হয়। বস্তা তৈরির ক্ষেত্রে পাট এখনও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। টেক্সটাইল বা প্রচলিত বয়নশিল্পে পাটের ব্যবহারের মধ্যে সুতা, পাকানো সুতা, বস্তা, চট, কার্পেট ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। কৃষি পণ্য এবং বিভিন্ন ধরনের শস্য বস্তাবন্দি করতে পাটের ব্যবহার করা হয়। ইদানিং পাটের জিনিসপত্র খুব কম দেখা গেলেও এখনো পর্যন্ত বিভিন্ন কাজে পাটের ব্যবহার যথেষ্ট রয়েছে। ব্যারাকপুর সহ আশেপাশের শিল্পাঞ্চল গুলিতে জুটমিলে পাটের চাহিদা যথেষ্ট। পাট উৎপাদনে ভারত বিশ্বে প্রথম স্থান দখল করে। তবে দেশে পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলা পাট উৎপাদনে যথেষ্ট সক্রিয় ভূমিকা পালন করে। মুর্শিদাবাদের পাট উন্নতমানের এবং সেই পাটের চাহিদা যথেষ্ট রয়েছে বাজারে। এ তো গেলোবাণিজ্যের কথা। কিন্তু, পাটের বীজ বপন থেকে পাটের আঁশ তোলা পর্যন্ত একজন কৃষকের রোজগার কত? খুবই নগণ্য। স্বাভাবিকভাবেই বলা যায় ৬ মাস হাড়ভাঙ্গা খাটুনির পর একজন কৃষক চার-হাজার টাকা লাভ করে পাট চাষ করে। এক বিঘা পাট চাষ করলে একজন কৃষক গড়ে চার কুইন্টাল পাট উৎপাদন করতে পারে। বর্তমানে পাটের মূল্য কুইন্টাল প্রতি কমতে কমতে ৭ হাজার থেকে চার-হাজার টাকাতে এসে দাঁড়িয়েছে। অর্থাৎ, একজন কৃষক ৬ মাস খাটুনির পর ১৬ হাজার টাকার পাট বিক্রি করে।
এবার আসি সেই কৃষকের খরচের গল্পেঃ
১) জমিতে লাঙল দেওয়া ৫০০ টাকা
২) বীজের মূল্য ৩০০ টাকা
৩) নিড়ানি বা আগাছা দমন ১০টা করে দুবার ২০ জন শ্রমিকের খরচ ২৫০ টাকা করে মোট ৫ হাজার টাকা।
৪) সেচ বা জলের জন্য দু-হাজার টাকা।
৫) পাট কাটার সময় শ্রমিকের খরচ ১২০০ টাকা
৬) জমি থেকে পুকুর বা নালাতে পাট পচানোর জন্য পরিবহন দু-হাজার টাকা
৭) সবশেষে, পাটের আঁশ ছাড়ানো তিন-হাজার টাকা।
অর্থাৎ, সব মিলিয়ে এক বিঘা পাট চাষ করতে একজন কৃষকের খরচ হয় ১২ হাজার টাকা। সেই পাট বিক্রি করার পর কৃষক হাতে পায় ১৬ হাজার টাকা। মানে ৬ মাস খাটুনির পর মাত্র চার হাজার টাকা লাভ হয়। সেই হিসেব মতো এক মাসে ৬৬৬ টাকা এবং প্রতিদিনের হিসেবে ২২ টাকা আয় হয় একজন কৃষকের। হিসেবটা খুব সোজা।ভোট আসে, ভোট যায়সরকার ক্ষীর খায়!ওঠে কখনো ইডি-সিবিআই এর ঢেউফসলের ন্যায্য মূল্য কৃষকের প্রাপ্য দাবি,সেই কথা বলে না কেউ!
All Rights Reserved © Copyright 2025 | Design & Developed by Webguys Direct