আপনজন ডেস্ক: ‘লোকসভা নির্বাচনের আগে রাজ্যে কর্মসংস্থান নিয়ে বড় ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। হুগলির আরামবাগে প্রশাসনিক সভায় সোমবার মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্যে সরকারি চাকরিতে প্রায় পাঁচ লক্ষ শূন্যপদ রয়েছে। এই ৫ লক্ষের মধ্যে ১ লক্ষ শূন্যপদ শিক্ষকদের জন্য। আর পুলিশে ৬০ হাজার। রাজ্য সরকার এই বিপুল সংখ্যক শূন্য পদে নিয়োগ করবে বলে ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এই বিপুল সংখ্যাক নিয়োগ হলে রাজ্যের বেকার ছেলেমেয়েরা চাকরি পাবেন। ইতিমধ্যেই সব দফতরের বিভাগীয় প্রধানের সঙ্গে বৈঠক করেন রাজ্যের মুখ্যসচিব ভগবতীপ্রসাদ গোপালিকা। সেই বৈঠকে নির্দেশ দেওয়া হয়, দফতর অনুযায়ী কোথায় কত শূন্যপদ আছে তার হিসাব দিতে। তারপরই সোমবার এই নিয়োগের কথা ঘোষণা করেলেন। অন্যদিকে, অভিনেতা সাংসদ দীপক অধিকারী ওরফে দেব তার স্বপ্নের ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান আদায় করে ছাড়লেন রাজ্য সরকারের কাছ থেকে। ঘাটালের ভূমিপুত্র দেবের স্বপ্ন ছিল প্রতি বছর বনা্য থেকে বাঁচতে ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান। এ নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে বার বারে দরবার করেছেন। কিন্তু সেই আর্জি বিফলে গিয়েছে। সেই আফসোসের কথা সাংসদে তার ভাষণে নিজেই জানিয়েছেন দেব। তার সেই আফসোস মিটিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কেন্দ্রীয় সরকারের কাছ থেকে দেব ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান আদায় করতে না পারায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আরামবাগে প্রশাসনিক সভায় দেবকে সঙ্গে নিয়ে জানিয়ে দিলেন, রাজ্য সরকার ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান বাস্তবায়িত করবে।
কেন্দ্রীয় সরকার ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান না করায় অনেকটা অভিমানে রাজনীতি থেকে দূরে থাকার জল্পনা উসকে দিয়েছিলেন দেব। কিন্তু অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠকের পর মত পাল্টান দেব। সোমবার ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান আদায় করার দিনে দেব জানিয়ে দিলেন, আগামী লোকসভা নির্বাচনে তিনি ঘাটাল থেকেই ফের লড়বেন। মুখ্যমন্ত্রীর সামনে দেব বলেন, দশ বছর ধরে কেন্দ্রীয় সরকারকে বিশ্বাস করেছিলাম । কিন্তু হয়নি। এখন দিদি একমাত্র ভরসা। এই ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান স্বপ্ন থাকবে না। সত্যি হতে চলেছে।’ তবে, মুখ্যমন্ত্রী নিজেই স্বীকার করেছেন তিনি সাংসদ দেবের আবদার মেটাতেই ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান বাস্তবায়িত করবেন। এ বিষয়ে দেবকে পাশে নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বলেন, এবার চন্দ্রকোনা-ঘাটাল, আমি যদি না বলি দেব আমার সঙ্গে ঝগড়া করবে। ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানের কথা দেব আমাকে বলেছে। আমি ইতিমধ্যেই আলোচনা করে নিয়েছি আমার মুখ্যসচিব (বিপি গোপালিকা) এবং আমাদের সেচ সচিব প্রভাত মিশ্রর সঙ্গে। আগেও কপালেশ্বরী-কেলেঘাই আমরা করে দিয়েছি । ফলে মেদিনীপুরের অনেক মানুষ বন্যার হাত থেকে বেঁচেছে। মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান আমরা তৈরি করছি। ১৭ লক্ষ মানুষ উপকৃত হবেন। আর ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান, আরও যে ১ হাজার আড়াইশো কোটি টাকা লাগবে বলেছি । এগুলো পর্যায়ক্রমে করা হবে। তাতে তিন-চার বছর সময় লাগবে। সেই সঙ্গে মমতা বলেন, দেব যখন আমার কাছে আবদার করেছে। দিদি ভাইকে তো ফেরাতে পারে না। তাই কেন্দ্রের উপর ভরসা করে বসে না থেকে, কবে দিল্লি দেবে, তার পরে হবে । তা চিন্তা না করে, আমি নির্দেশ দিচ্ছি তিন-চার বছরের মধ্যে ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান বাস্তবায়িত হবে। উচ্ছ্বসিত দেব বলেন, আমি রাজনীতিতে এসছিলাম দিদির হাত ধরে। এই দলে থেকে গেলাম দিদির হাত ধরেই। আমার দেখা শ্রেষ্ঠ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়। আমি ঘাটালের মানুষের জন্য ফিরলাম। ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান অবশেষে বাস্তবায়িত হবে।
All Rights Reserved © Copyright 2025 | Design & Developed by Webguys Direct