নিজস্ব প্রতিনিধি, কোলাঘাট, আপনজন: দ্রিশানী মাজী। ওর বয়স এখন সবে চার বছর । বয়সের কমতিতে এখনো স্কুলেই ভর্তি হতে পারেনি।মাত্র চোদ্দ সেকেন্ডে প্রায় এক নিঃশ্বাসে, চোখ বেঁধে ভারতবর্ষের আঠাশটি রাজ্যের নাম বলে ইন্ডিয়া বুক অফ রেকর্ডস -র পাতায় জায়গা করে নিল। কেবল মূদ্রাক্ষরেই প্রদান করে নেওয়া নয়, ওই সংস্থার পক্ষ হতে দ্রিশানীর গলায় পরিয়ে দেওয়া হয়েছে সুদৃশ্য পদকও ব্যাজ। ওই ছোট্ট হাতেই তুলে দেওয়া হয়েছে শংসাপত্র, কলম,সাথে প্রায় আড়াই কেজি ওজনের ভারি তথ্য সমৃদ্ধ ইন্ডিয়া বুক অফ রেকর্ডস র মাদার বুক। যা অন্তত চার বছরের দ্রিশানীর পক্ষে বহন করা সম্ভব নয়। দ্রিশানী চোখ বেঁধে এক মিনিটে বলতে পারে প্রায় একশটি দেশের রাজধানীর নাম আরো অনেক কিছু। এই বয়সে ছোট্ট শিশুটির স্মরণশক্তি দেখে পাড়া প্রতিবেশী সহ সবাই অবাক এবং মুগ্ধ। বাবা গনেশ মাজী দিন আনে দিন খায়। শ্রমজীবী মানুষ। বাড়ি কোলাঘাটের আঁড়র গ্রামে। সংসারে একটু সহায়তা পেতে দুবেলাই প্রাথমিক স্তরের ছোটদের টিউশনি পড়াতেন মা মানসী।জন্মের পর থেকেই দুজনের সংসারে দুধের শিশুকে কোলে নিয়ে বা পাশে শুইয়ে রেখে টিউশনি পড়ানো চালিয়ে গেছেন মা মানসী।এর মধ্যেই নিহিত আছে এই বিস্ময় শিশুর বিরল প্রতিভার মূল ভিত্তি।দ্রিশানীর বয়স যখন আড়াই ছাড়িয়ে তিন বছরের দিকে তখন থেকেই অবাক কান্ড ঘটতে থাকে। মা যখন ক্লাস থ্রি-ফোরের ছেলেদের পড়াচ্ছেন, সেই পড়া শুনে এবং দেখে দ্রিশানী গড়গড় করে অবলীলায় সব উত্তর ও মুখস্থ বলে দিত।এত ছোট বয়সে ওর এই স্মরণশক্তি দেখে ওর মা বিশেষ প্রশিক্ষণ বা অনুশীলন শুরু করে। কোলাঘাটের এক তথ্যমিত্র কেন্দের ব্যবসায়ী গনেশ দাস সব দেখে ওর এই প্রতিভা নিষ্ঠাসহকারে যথাস্থানে পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করে। তারপরই ছোট্ট শিশুটি ইন্ডিয়া বুক অফ রেকর্ডসে নিজের নাম তুলে এবং পুরস্কার জিতে কেবল আড়ঁর গ্রাম , নিজের বাবা মা ই নয় , সারা কোলাঘাটকেই গর্বিত করেছে বলা যায়। আগামী শিক্ষাবর্ষে ই ও স্কুলে ভর্তি হবে। প্রতিবেশীরা সবাই ওর উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ কামনা করছে।কোলাঘাটের স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান সংকেত হতে ওকে হাতভর্তি রকমারি চকলেট ,ক্যাডবেরি দিয়ে উৎসাহ দেওয়া হয়।
All Rights Reserved © Copyright 2025 | Design & Developed by Webguys Direct