আপনজন ডেস্ক: পঞ্চায়েত নির্বাচনের মনোয়ন ঘিরে রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় সংঘর্ষ ও বিরোধীদের মনোনয়নে বাধা দেওয়ার বিরুদ্ধে মামলা হয় কলকাতা হাইকোর্টে। সেই মামলায় হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানমের ডিভিশন বেঞ্চ প্রথমে সাতটি জেলার স্পর্শকাতর এলাকায় কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে পঞ্চায়েত ভোট করাতে নির্দেশ দিয়েছিল রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে। কিন্তু কোথায় কোথায় কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়োগ হবে তা নিয়ে কমিশন কোনো সপস্ট জবাব দিতে না পারায় হাইকোর্ট পঞ্চায়েত নির্বাচনে সব জেলায় ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করার নির্দেশ দেয় কমিশনকে। কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানমের ডিভিশন বেঞ্চের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে শনিবার সুপ্রিম কোর্টে গেল রাজ্য নির্বাচন কমিশন ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নেতৃত্বাধীন সরকার। যদিও বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রাজ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিনহা বলেছিলেন তিনি কলকাতা হাইকোর্টের আদেশ মেনে চলবেন। আগের অবস্থান থেকে ইউ-টার্ন নিয়ে অবশেষে সুপ্রিম কোর্টে গেলেন হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে। এ নিয়ে পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরী বলেন, সম্ভবত বৃহস্পতিবার রাজীব সিনহা বলেছিলেন তিনি কলকাতা হাইকোর্টের আদেশ মেনে চলবেন। কারণ ততক্ষণে মুখ্যমন্ত্রীর অফিস থেকে কোনও স্পষ্ট নির্দেশ তার কাছে আসেনি। এখন নির্দেশনা আসায় তিনি ইউ-টার্ন নিয়েছেন। কলকাতা হাইকোর্টের বিরোধী দলগুলির যুক্তি গ্রহণ করেছে। তাই রাজ্য সরকার ও রাজ্য নির্বাচন কমিশন সশস্ত্র বাহিনী মোতায়েন বন্ধ করার জন্য শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হচ্ছে। আগেই মালদা (দক্ষিণ) আসনের কংগ্রেস সাংসদ আবু হাসেম চৌধুরীও একই বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টে ক্যাভিয়েট দায়ের করেছিলেন। ক্যাভিয়েট করেন শুভেন্দু অধিকারীও। সিপিআই (এম) কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী বলেন, রাজ্য নির্বাচন কমিশনারের কার্যালয় কেবল রাজ্য সচিবালয়ের বর্ধিত শাখা হিসাবে কাজ করছে। তিনি বলেন, স্বাধীন সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরিবর্তে রাজীব সিনহা রাজ্য সরকার ও ক্ষমতাসীন দলের ইচ্ছানুযায়ী কাজ করছেন। এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে কোনও আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেওয়া হয়নি। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রাজ্য মন্ত্রিসভার এক সদস্য সংবাদ সংস্থা আইএনএসকে জানিয়েছেন, নিয়ম অনুযায়ী, রাজ্য নির্বাচন কমিশনের উচিত রাজ্য সরকারের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করা। এই মামলায় কলকাতা হাইকোর্ট রাজ্য সরকারকে উপেক্ষা করে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে। সম্ভবত সেই কারণেই কমিশন ও রাজ্য সরকার সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে।
All Rights Reserved © Copyright 2025 | Design & Developed by Webguys Direct