সুব্রত রায়, কলকাতা, আপনজন: বাংলায় পা রাখতে চলেছেন দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। আসছেন দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহও। আর এই দুই মহারথীর সঙ্গে সন্মুখ সাক্ষাতের সম্ভাবনা রয়েছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়েরও। নানা ইস্যুতে কেন্দ্র-রাজ্য বিরোধ যখন নতুন করে মাথাচাড়া দিচ্ছে ঠিক তখনই কেন্দ্র ও রাজ্যের শীর্ষ নেতৃত্বের এই সাক্ষাৎ রাজ্য ও জাতীয় স্তরের রাজনীতিতে কোন বার্তা দেয় এখন সেদিকেই সকলে তাকিয়ে আছেন। বাম ও কংগ্রেস অবশ্য গোটা ঘটনাটিকে ‘সেটিং’ হিসাবে তুলে ধরছেন। তাঁদের দাবি, বাংলায় এখন দুর্নীতিকাণ্ডে যেভাবে রাজ্য সরকার কোনঠাসা হয়ে গিয়েছে তা থেকে বার হতেই মুখ্যমন্ত্রী নিজেই প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে সবকিছু সেটিং করতে চাইছেন। যদিও তৃণমূলের তরফে সেই দাবি উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।জানা গিয়েছে, আগামী মাসে অর্থাৎ নভেম্বরে বাংলায় পা রাখতে চলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। ‘নমামি গঙ্গে’ কর্মসূচি উপলক্ষে মোদির কলকাতায় আসার কথা নভেম্বরের শেষে। সেই অনুষ্ঠানে থাকার কথা রয়েছে মুখ্যমন্ত্রীরও। এর আগে দিল্লিতে মোদি-মমতা বৈঠকের পরেই রাজনৈতিক মহলে বিভিন্ন রকম চর্চা চলেছিল। তার পরে সম্ভবত এটিই হবে তাঁদের দু’জনের মুখোমুখি সাক্ষাৎ। তবে সেই ঘটনার অনেকটা আগে আগামী ৫ নভেম্বর বাংলায় আসছেন দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। ওইদিন তিনি পূর্বাঞ্চল পরিষদের চেয়ারম্যান হিসেবে একটি বৈঠকে যোগ দিতে কলকাতায় আসছেন। ওই বৈঠকে পরিষদের ভাইস চেয়ারপার্সন হিসেবে থাকবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে ওই দু’জনের দেখা হওয়া ছাড়াও বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নিতীশ কুমারের সঙ্গেও মমতার দেখাসাক্ষাতের সম্ভাবনা রয়েছে। তবে ঠিক তার তিন দিন আগে চেন্নাইয়ে একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে যাচ্ছেন মমতা। বাংলার অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত রাজ্যপাল লা গণেশনের একটি পারিবারিক অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ রক্ষা করতে যাবেন মমতা। ২ তারিখ তিনি চেন্নাই যাচ্ছেন। সেদিনই আবার তাঁর তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্ট্যালিনের সঙ্গে দেখা করার কথা আছে।
তবে এখন সবাই বেশি আগ্রহী কলকাতার বুকে মোদি-মমতার সাক্ষাৎ নিয়ে। এর আগে দিল্লিতে মমতার সঙ্গে মোদির যে বৈঠক হয়েছিল তা সরকারি ভাবে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর আনুষ্ঠানিক সাক্ষাৎ হলেও দু’জনের একান্তেও কথা হয়েছিল। তার পরিপ্রেক্ষিতেই কংগ্রেস ও বামেরা বিজেপি-তৃণমূল ‘সেটিং’-এর তত্ত্ব সামনে নিয়ে এসেছিল। কিন্তু আপাত ভাবে কলকাতায় প্রধানমন্ত্রীর এই কর্মসূচিটি একেবারেই সরকারি। ফলে সেখানে সরাসরি রাজনীতির কথা উঠে আসার সম্ভাবনা কম। তা ছাড়া এখনও পর্যন্ত তাঁদের আলাদা করে কোনও বৈঠক বা আলোচনার কথাও জানা যায়নি। ফলে রাজ্যে ‘নমামি গঙ্গে’ প্রকল্পের সূত্র ধরে সরকারি কাজ রূপায়ণের বিষয়ে তাঁরা কী বলেন, রাজনৈতিক মহলের তা নিয়ে কৌতূহল তৈরি হয়েছে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct