সাদ্দাম হোসেন, আলিপুরদুয়ার: রবিবার পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি দাবি করেন, কেন্দ্র যদি রাজ্যের পাওনা পরিশোধ করত, তাহলে তাঁর সরকার আরও বেশি মানুষকে সমাজকল্যাণমূলক প্রকল্পের আওতায় আনতে পারত।
আলিপুরদুয়ারে এক জনসভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে মমতা বলেন, তার সরকার চা বাগানের শ্রমিক, আদিবাসী, শ্রমিক সহ সমাজের সব স্তরের মানুষের পাশে রয়েছে।
তিনি বলেন, “আমি সবসময় আমার প্রতিশ্রুতি রক্ষা করি, বিজেপি সমস্ত বন্ধ চা বাগান পুনরায় চালু করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। আমরা যদি আমাদের পাওনা পেতাম তবে আমি আরও বেশি মানুষকে সামাজিক প্রকল্পের প্রস্তাব দিতে পারতাম।
মুখ্যমন্ত্রী ৯৩ কোটি টাকার ৭০টি প্রকল্পেরও ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, ‘আমি কয়েকজন সাংসদের সঙ্গে দিল্লিতে থাকব। বকেয়া টাকা পরিশোধের জন্য আমি ১৮ থেকে ২০ ডিসেম্বরের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের সময় চেয়েছি। মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, এমজিএনআরইজিএ-র আওতায় ১০০ দিনের কাজ, আবাসন এবং জিএসটি সংগ্রহে রাজ্যের অংশ সহ বিভিন্ন অ্যাকাউন্টে পশ্চিমবঙ্গের বকেয়া বকেয়া রয়েছে।কেন্দ্রের কাছ থেকে মোট বকেয়া পরিমাণ ১.১৫ লক্ষ কোটি টাকা। একশো দিনের কাজের টাকা দিচ্ছে না কেন্দ্রীয় সরকার ৷ বাংলার বাড়ি তৈরি করা হচ্ছিল, সেটাও বন্ধ করে দিয়েছে ৷ এ রাজ্য থেকে কেন্দ্রীয় সরকার জিএসটি তুলে নিয়ে যাচ্ছে কেন্দ্র ৷ কিন্তু আমাদের শেয়ার দিচ্ছে না ৷ আমাদের বহু প্রকল্প আটকে আছে। এই বকেয়া আদায়ের জন্য তিনি প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন জানাবেন ৷ তিনি আরও জানান, ১৮থেকে ২০ ডিসেম্বরের মধ্যে তারিখের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য সময় চাওয়া হয়েছে। সঙ্গে দলের সাংসদরাও থাকবেন তার সঙ্গে সাক্ষাতের সময়। আশা করি প্রধানমন্ত্রী আমাকে সময় দেবেন ৷ তার কাছে গিয়ে বলব, হয় বাংলার বকেয়া টাকা দিন নয়তো গদি ছাড়ুন ৷ বিদায় নিন ৷ বিজেপির বিরুদ্ধে ফের মিথ্যা প্রতিশ্রুতির অভিযোগ তুলে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বিজেপি লোকসভা নির্বাচনের আগে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, ১৫ লক্ষ টাকা করে অ্যাকাউন্টে দেবে। কিন্তু দেয়নি। কোভিডের সময় রেশনে চাল দেওয়া বন্ধ করে দেয় কেন্দ্র। কিন্তু রাজ্য সরকার তা বন্ধ করেনি। কারণ আমিচাই সবাই ভালো থাকুক। এ দিন আলিপুরদুয়ারের প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী জানান, কৃষক বন্ধু প্রকল্পে আগামী ১২ ডিসেম্বর রাজ্যের প্রায় েএক কোটি ২০ লক্ষ কৃষক ভাতা পাবেন ৷ এর মধ্যে আলিপুরদুয়ারের ৯০ হাজার কৃষক রয়েছেন ৷ তাদের প্রত্যেকের অ্যাকাউন্টে পাঁচ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে।
মমতা আলিপুরদুয়ারে পানীয় জলের সমস্যাও দ্রুত মেটাতে সরকার বিশেষ উদ্যোগী হবে বলে জানান। তিনি বলেন, আলিপুরদুয়ার জেলায় পানীয় জলের সমস্যা মেটাতে ৪৩ হাজার পরিবারকে পানীয় জলের সংযোগ দেওয়া হয়েছে। ভবিষ্যতে আরও লক্ষাধিক পরিবারকে জলের সংযোগ দেওয়া হবে। মমতা দাবি করেন, আমরা কাজ করি আর বিজেপি নাম কামায় । দালালি করে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এতিন বলেন, তার সরকার সমস্ত চা বাগানের শ্রমিকদের জমির পাট্টা দেবে এবং বাড়ি নির্মাণের জন্য তাদের প্রত্যেককে ১.২ লক্ষ টাকা দেবে। এসটি সার্টিফিকেট, বিশুদ্ধ পানীয় জল এবং সামাজিক প্রকল্পগুলিতে অ্যাক্সেস সম্পর্কিত আদিবাসীদের উদ্বেগগুলি সমাধানের আশ্বাসও দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি আরও বলেন, উপজাতিদের জন্য সামাজিক কল্যাণমূলক কর্মসূচি প্রদানের সুবিধার্থে বিশেষ শিবির স্থাপন করা হবে। রবিবার আলিপুরদুয়ারে সরকারি অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী আদিবাসীদের শংসাপত্র প্রদানে সরীকরণের ঘোষণা দেন। পরিবারের কারও একজনের শংসাপত্র থাকলে সেটি নিয়ে দুয়ারে সরকার শিবিরে গিয়ে আবেদন করলেই হাতে হাতে মিলবে শংসাপত্র। আদিবাসীদের জন্য বরাদ্দ সব সরকারি সুযোগ সুবিধে পাবেন ৷ এ ব্যাপারে রাজ্যের মুখ্যসচিব ও সব জেলাশাসককে নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী ৷ সেই সঙ্গে তিনি বলেন, চা বাগানে ক্রেশ, স্বাস্থ্যকেন্দ্র, পাট্টা দেওয়া হচ্ছে । আলিপুরদুয়ারকে নতুন জেলা করার পাশাাপশি আলিপুরদুয়ারের বিশ্ববিদ্যালয়, ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ আমরা করেছি। তফসিলি ও আদিবাসীদের মধ্যে যারা বাইরে পড়তে চান, তাদের ঋণ দিচ্ছি।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct