আপনজন ডেস্ক: নির্বাচন কমিশন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের অঙ্গুলি হেলনে চলছে এই অভিযোগ তুলেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে সাম্প্রদায়িক মদতপুষ্টের অভিযোগ উঠল। সংখ্যালঘু অধ্যুষিত জেলা মুর্শিদাবাদের দুটি বিধানসভা কেন্দ্র জঙ্গিপুর ও সামশেরগঞ্জে প্রার্থীর করোনায় মৃত্যু হওয়ায় ভোট স্থগিত হয়ে গিয়েছিল। নির্বাচন কমিশন সেই দুটি বিধানসভা কেন্দ্রের নতুন কোটের দিন ঘোষণা করেছে। নির্বাচন কমিশন বিজ্ঞপ্তি জারি করে বলেছে, জঙ্গিপুর ও সামশেরগঞ্জে ভোটগ্রহণ হবে ১৩ মে। এই ১৩ মে মুসলিমদের সবচেয়ে বড় পবিত্র উৎসব ঈদুল ফিতর হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। চাঁদ ওঠার উপর নির্ভর করে ঈদ। তাই চলতি রমযান মাস যদি ২৯ দিনের হয় তাহলে, ঈদুল ফিতর হওয়ার কথা ১৩ মে। তাই চাঁদ ওঠার ভিত্তিতে ঈদ ১৩ মে হতে পারে। সেই দিন কি মুসলিমদের পক্ষে ভোট দিতে যাওয়া সম্ভব?
ইতিমধ্যে তাই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, হিন্দু সম্প্রদায়ের শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গা পুজোর দিন ভোট গ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নিতে পারত নির্বাচন কমিশন?
মুসলিমদের মধ্য থেকে প্রশ্ন তোলা হচ্ছে, সম্ভাব্য ঈদের দিন ভোট গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়ে নির্বাচন কমিশন বুঝিয়ে দিয়েছে তারা পক্ষপাতিত্ব করছে। কারণ, সবাই বিলক্ষণ জানে ঈদের দিন মুসলিমদের পক্ষে সবার ভোট দিতে যাওয়ার আগ্রহ কতটা থাকবে। তাই এই দিন যদি মুসলিমরা ভোট দিতে না যান তাহলে বিজেপির সহজে জিতে যাওয়ার সুযোগ থাকবে। সেই আশায় হয়তো রয়েছে বিজেপি।
অন্যদিকে, ঈদের দিন মুসলিমরা সকালে ঈদের নামায পড়তে যান। আর তারপর সম্প্রীতির এই উৎসবে জাতি ধর্ম নির্বিশেষে সিমাই, লাচ্চা খাওয়ায় মেতে থাকে। বহু হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষকে দেকা যায় মুসলিমদের বাড়িতে সিমাই, পায়েস খেতে যেত। তা এবার হিন্দুরা যাতে ভোটের চক্করে পড়ে মুসলিমদের বাড়িতে তাদের উৎসবে শামিল হতে না পারে তারই ষড়যন্ত্র ব্যতীত কিছু নহে। স্বভাবতই তাই দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে দূরত্ব সৃষ্টি করার উদ্দেশ্যে ঈদের দিন ভোট গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে মনে মুসলিমরা মনে করছে। যে কেন্দের সিংহভাগ মুসলিম বোটর সেখানে নিঃসন্দেহে তাদের শ্রেষ্ঠ উৎসবের দিন ভোটগ্রহণ প্রত্যাশিত নয়। নির্বাচন কমিশন সেটা হয়তো বুঝছেন না। পিছেনে তাই অন্য কোনও মাথা কাজ করার অভিযোগ উড়িয়ে দেওযা যায় না।
উল্লেখ্য, গত ১৫ এপ্রিল করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় সামশেরগঞ্জের কংগ্রেস প্রার্থী রেজাউল হকের। আর ১৬ এপ্রিল মৃত্যু হয় জঙ্গিপুরের সংযুক্ত মোর্চার আরএসপি প্রার্থী প্রদীপ নন্দীর। সে জন্যে ভোট স্থগিত হয়ে যায়। তাই সোমবার কমিশনের পক্ষ থেকে দুটি পৃথক বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়েছে, আগামী ১৩ মে ওই দুই কেন্দ্রে নির্বাচন। আর ভোটগণনা আগামী ১৮ মে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct