আপনজন ডেস্ক: রাষ্ট্রসংঘ স্বীকৃত শিক্ষা-গবেষণা কেন্দ্র ইনস্টিটিউট অফ অবজেকটিভ স্টাডিস বা আইওএস-এর কলকাতা চ্যাপটার শনিবার এক সিম্পোজিয়ামের আয়োজন করে। ইলিয়ট রোডে অবস্থিত আইওএস-এর সভাঘরে এদিন রাজ্যের বিশিষ্ট আলেম-এ দ্বীন ও আলিয়া মাদ্রাসার প্রাক্তন অধ্যাপক মাওলানা আবু সালমা শফি আহমেদ (রহ.)-এর জীবন সম্পর্কে বিশেষ আলোকপাত করা হয় ওই সিম্পোজিয়ামে।
এদিনের সিম্পোজিয়ামে সভাপতিত্ব করেন আইওএস-এর চেয়ারম্যান ড. মনজুর আলম। জুম-এর মাধ্যমে তিনি শ্রোতাদের উদ্দেশে বলেন, প্রবীণরা যেভাবে শিক্ষার জন্য কাজ করেছেন ধর্মীয় ও বিজ্ঞানের প্রসারে তা যেন আমরা উত্তরাধিকার হিসেবে আরও এগিযে নিয়ে যেতে পারি। তিনি বলেন, বিশ্বায়নের যুগে জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে অনেক চ্যালেঞ্জ রয়েছে। এই সময় আমরা এগিয়ে যেতে চাইলে আধুনিক চাহিদা পূরণের সঙ্গে প্রবীণ বুজুর্গদের জীবনী থেকেও শিক্ষা নিতে হবে। তিনি বলেন, মাওলানা আবু সালমা শফী আহমদের জীবদ্দশায় লিখিত মূল্যবান পুস্তকগুলি বাংলা ভাষায় অনুবাদ করে পিডিএফ ফর্ম্যাটে ইন্টারনেটে আপলোড করতে হবে।
মাওলানা আবু সালমা শফি আহমদের সুপুত্র মওলানা তালহা বিন আবু সালমা তাঁর পিতার জীবন ও সেবার বিষয়টি তুলে ধরে বলেন, আলিয়া মাদ্রাসার গুরুত্বপূর্ণ পদে আসীন থাকার পরেও মাওলানার মধ্যে যে সরলতা ও নম্রতা ছিল তা অবাক করার মতো। তিনি এতটাই কঠোর পরিশ্রমের নিদর্শন ছিলেন যে তিনি তাঁর বইয়ের একটি বান্ডিল কাঁধে তুলে নিতে দ্বিধাবোধ করেননি।
তালহা নি'মাত নাদভী জুম-এর দ্বারা তাঁর জীবন ও খিদমতের বিষয়ে মন্তব্য করে বলেন, তার বিভিন্ন গ্রন্থে সমাজের সংস্কারের ধারণাটি সর্বদা বিদ্যমান ছিল।
আহমদ আলী কাসমি বলেন, তার লেখাগুলি আকর্ষণীয় ও সাহিত্যি স্বাদ এবং বৌদ্ধিক অন্তর্দৃষ্টিতে পরিপূর্ণ ছিল। এগুলি এতই মূল্যবান যে পাঠক ক্লান্ত না হয়েই পড়তেন।
আফতাব আলম নাদভী আলোকপাত করেন, মাওলানা আবু সালমা শফী আহমদ আলেমদের দৃষ্টিতে একজন বিশিষ্ট ধর্মীয় শিক্ষাবিদ ছিলেন। মাওলানার দ্বীনি ও সামাজিক খিদমত সমগ্র ভারতুজড়ে ছড়িয়ে পড়েছিল। এই কারণে তাঁর মৃত্যুকালে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বিশিষ্ট আলেমগণ এবং মারকাজী প্রতিষ্ঠান থেকে সমবেদনা জানানো হয়।
আবদুস সুবহান নাদভী মাওলানার প্রতিষ্ঠিত সংস্থা "ইদারায়ে তারজুমা ও তালিফ" বিষয়ে সংক্ষিপ্ত পরিচিতি প্রদান করে বলেন, এই ইনস্টিটিউটটি ৪২ বছরের যাত্রায় এ পর্যন্ত ৮২ টি বই প্রকাশ করেছে।
অনুষ্ঠানের সূচনা কালে জিব্রিল ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের প্রধান ও পরিচালক ড. সাবাহ ইসমাইল নাদভী বলেন, বাংলার উলামায়ে কেরামদের ধর্মীয় খেদমত ও সেবার বিষয়ে সিম্পোজিয়াম আইওএস কলকাতা চ্যাপটারের এটি খুবই দারুণ সিদ্ধান্ত। এর দ্বারা আমরা আমাদের বুজুর্গদের দ্বীনি, শিক্ষা ও সামাজসেবার বিষয়ে অবগত ও পরিচিত হয়ে উপকৃত হওয়ার সুযোগ পাবো। আইওএস কলকাতা চ্যাপ্টারের কো-অর্ডিনেটর (সমন্বয়কারী) আবদুল বাসিত ইসমাইল বলেন, আইওএস একটি এমন গবেষণা প্রতিষ্ঠান, যার গবেষণা এবং উপকরণগুলি ভারত সরকারের পক্ষে সংখ্যালঘুদের কল্যাণে কর্ম পরিকল্পনা গ্রহণ করা সহজ করে তোলে। হাজী ইকবাল মোস্তফা এবং মুখতার আলী এই উপলক্ষে মাওলানা মরহুমের সাথে তাঁদের ব্যক্তিগত সম্পর্কের কথা প্রকাশ করেছেন। নুর মুহাম্মাদ নাদভীর উপস্থিতিতে অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন মেহতাব আলম নাদভী এবং আফনান আখজার কৃতজ্ঞতা প্রকাশের সাথে অনুষ্ঠানটি শেষ করেন।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct