আপনজন ডেস্ক: করোনা আবহে এবং বহু রাজ্যে বন্যার পরিস্থিতির মধ্যেই কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে NEET এবং JEE পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে পরীক্ষা গ্রহনের সিদ্ধান্ত কতটা যুক্তিযুক্ত সেই প্রশ্ন উঠেছে বিভিন্ন মহলে। ছাত্র সংগঠন স্টুডেন্টস ইসলামিক অর্গানাইজেশন অফ ইন্ডিয়া, পশ্চিমবঙ্গ শাখার পক্ষ থেকে কেন্দ্রীয় সরকারের এই সিদ্ধান্তের সমালোচনা করা হয়। সংগঠন মনে করে, বর্তমান করোনা ও বন্যার প্রকোপের মুখে পড়ুয়াদের পরীক্ষা দিতে বাধ্য করা সম্পূর্ণ অমানবিক সিদ্ধান্ত। পরীক্ষা গ্রহণের এই সিদ্ধান্ত তাই পুনর্বিবেচনার দাবি জানায় সংগঠন।
NEET এবং JEE পরীক্ষা গ্রহণের সরকারি সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার দাবিতে ধর্মতলায় আয়োজিত প্রতিবাদ কর্মসূচীতে সংগঠনের রাজ্য সভাপতি ওসমান বক্তব্য রাখতে গিয়ে বলেন, "বর্তমানে আমাদের দেশে করোনা মহামারি এবং বন্যার ভয়াবহতা অতিক্রম করছে। এই সময়ে NEET এবং JEE পরীক্ষা নেওয়ার মাধ্যমে কেন্দ্রীয় সরকার লক্ষ লক্ষ পড়ুয়াদের জীবনকে বিপদগ্রস্ত করছে।" তিনি আরও বলেন, "আমাদের রাজ্যসহ সারা দেশে এখনও যাতায়াত ব্যবস্থা স্বাভাবিক নয়। রাস্তায় পর্যাপ্ত পরিমানে যানবাহন নেই। সুতরাং পড়ুয়া এবং অভিভাবকদের চরম দুর্ভোগের মধ্যে পড়তে হবে।" সংগঠনের পক্ষ থেকে সারা রাজ্য জুড়ে চলমান শিক্ষা অভিযান উপলক্ষ্যে বারো দফা দাবি নিয়ে এই প্রতিবাদ কর্মসূচী নেওয়া হয়। ওসমান গনি বলেন, "আমরা জাতীয় শিক্ষা নীতি সহ আরও এগারোটি দাবি সরকারের সামনে পেশ করতে চাই। জাতীয় শিক্ষা নীতির পুনর্মূল্যায়নের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, "জাতীয় শিক্ষা নীতির মাধ্যমে সরকার শিক্ষা ব্যবস্থার গৈরিকীকরণ, কেন্দ্রীকরণ এবং বানিজ্যিকীকরণ করতে চাইছে।" রাজ্য সভাপতি ওসমান গনি রাজ্যের আপামর ছাত্র-যুবকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিক্ষা অভিযান সফল করার আহ্বান জানান।
শিক্ষা আন্দোলনের দাবী সমূহঃ-
১) কেন্দ্রীয় সরকারকে JEE এবং NEET পরীক্ষা গ্রহণের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করতে হবে।
২) জাতীয় শিক্ষা নীতি-২০২০ পুনর্মূল্যায়ন করতে হবে।
৩) বর্তমান পরিস্থিতিকে সামনে রেখে বিকল্প শিক্ষণ পদ্ধতির প্রচলন করতে হবে।
৪) স্কুলছুট নিয়ন্ত্রনে গঠনমূলক পরিকল্পনা ও প্রকল্প তৈরি করতে হবে।
৫) মুর্শিদাবাদ বিশ্ববিদ্যালয় সহ অন্যান্য ঘোষিত বিশ্ববিদ্যালয়গুলি অবিলম্বে বাস্তবায়ন করতে হবে।
৬) স্কুল ও কলেজের লাগামহীন ফী নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।
৭) SSC ও প্রাইমারিসহ অন্যান্য চাকরির পরীক্ষাগুলিতে দ্রুত নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে।
৮) মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশনের (MSC) নিয়োগ প্রক্রিয়া দুর্নীতিমুক্ত ও দ্রুত সম্পন্ন করতে হবে।
৯) ঐতিহাসিক হুগলি মাদ্রাসাকে আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আওতায় কলেজ হিসাবে ঘোষণা করতে হবে।
১০) মিল্লি আল-আমীন কলেজের মাইনোরিটি স্ট্যাটাস অবিলম্বে ফিরিয়ে দিতে হবে।
১১) কলকাতা ইউনানি মেডিকেল কলেজ এন্ড হসপিটালকে আইন মেনে সরকারি আওতাভুক্ত করতে হবে।
১২) পূর্ব ভারতে ইসলামী শিক্ষার স্বপ্নের প্রতিষ্ঠান আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ইসলামী শিক্ষার প্রস্তাবিত পাঠক্রমগুলির সম্পূর্ণ বাস্তবায়ন করতে হবে।
১৩) চাকরির ক্ষেত্রে শূন্যপদ পূরণের জন্য নিয়মিত পরীক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে এবং বেকারত্ব দূরীকরণে যোগ্যতানুযায়ী উপযুক্ত কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে।d
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct