আরবাজ মোল্লা, নদিয়া, আপনজন: ৮০ বছর বয়সেও খালি চোখে সরু সুতোর মাছ ধরার জাল তৈরি করে এখনো জীবন জীবিকা বৃদ্ধর। বয়সটা ৮০ বছর হলেও এখনো নেই চোখে চশমা, সংসার চালানোর তাগিদে একমাত্র পেশা মৎস্যজীবীর। সারাদিন নদীতে মাছ ধরে অবসর সময়ে সরু লাইলনের সুতো দিয়ে নিপুন কাজের সাথে এখনো তৈরি করে যাচ্ছেন মাছ ধরার জাল। আর তাতেই একমাত্র জীবন জীবিকা ৮০ বছর বয়সী সুবোধ সরকারের। শান্তিপুর ব্লকের বেলঘড়িয়া দুই নম্বর পঞ্চায়েতের গভরচর এলাকার নদী তীরবর্তী এলাকায় প্রায় দুই হাজার পরিবারের বসবাস। কমবেশি প্রত্যেকেই মৎস্যজীবীর কাজের সাথে যুক্ত। বলা যেতেই পারে ৮ থেকে ৮০ প্রত্যেকেই এই কাজ করেন। কেউ বাড়িতে বুনছেন মাছ ধরার জাল কেউ আবার নৌকা নিয়ে সারাদিন নদী থেকে মাছ ধরছেন,কিন্তু মাত্র ৮ বছর বয়সে পরিবারের দায়িত্ব মাথায় এসে বসে ৮০ বছর বয়সী সুবোধ সরকারের। তারপর থেকেই মৎস্যজীবীর কর্মজীবন শুরু, বাড়িতে রয়েছে নাতি-নাতনি দুই ছেলে,তবুও এখনো অনটন যায়নি সংসারে। বার্ধক্য জনিত কারণে এখন আর তিনি নদীতে মাছ ধরতে যেতে পারেন না।নদী তীরবর্তী জায়গায় ছাউনিতে বসে এখনো খালি চোখে বুনে চলেছেন জাল। ২৩ বছর বয়সী আনন্দ বিশ্বাস বলেন,তার বাবা ঠাকুর দাদার আমুল থেকে এই মাছ ধরার জাল তৈরির ব্যবসা,তাই অন্য কোন কাজের প্রতি আগ্রহ না বাড়িয়ে আনন্দ বিশ্বাস এই জাল তৈরির কাজে লিপ্ত হয়েছেন। জানান, শুধু নদিয়া নয় রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে এই মাছ ধরার জাল চলে যায়, পড়াশুনার প্রতি আগ্রহ থাকলেও আর্থিক অনটনের কারণে বেশি দূর এগিয়ে যেতে পারেননি। গ্রামের এক গৃহবধূ অনিতা বিশ্বাস
বলেন,নদী থেকে মাছ ধরায় এই গ্রামের বেশিরভাগ পরিবারের এখন জীবন জীবিকা। বছরে দুই একবার প্রাকৃতিক দুর্যোগ আসলে তখন অনেকটাই সমস্যায় পড়তে হয়, শুরু হয় নদীর পাড় ভাঙ্গন। নদীতে জল বেড়ে গেলে মৎস্যজীবীর কাজ বন্ধ থাকে বেশ কিছুদিন। সেই কারণে অনেকেই ভিন রাজ্যে কর্মসূত্রে চলে যায়। যদিও সুবোধ সরকার বলেন, রাজ্য সরকারের মৎস্যজীবীদের প্রকল্পগুলির মধ্যে অন্তর্ভুক্ত হওয়ায় আমাদের জীবন জীবিকা তার নির্ভর করে চলেছে।