অমরজিৎ সিংহ রায়, বালুরঘাট, আপনজন: আর্থিক প্রতিকূলতাকে জয় করে প্রত্যন্ত গ্রামীণ এলাকা থেকে সরকারি মেডিকেল কলেজে ডাক্তারি পড়ার সুযোগ পেল বালা পুরের কৌশিক ঢালী। বাবা ভবেশ ঢালী। বালাপুর মোড়ে একটি সাইকেল মেরামতির দোকান চালান। পাশাপাশি সামান্য কৃষিকাজও করে থাকেন। আর্থিক সমস্যা থাকা সত্বেও কৌশিকের কাকু পরেশ ঢালী সর্বদা ওকে পড়াশুনাতে উৎসাহ ও অনুপ্রেরণা দিয়ে এসেছেন। কৌশিক পঞ্চম থেকে দশম শ্রেণী পর্যন্ত বালাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে সাফল্যের সাথে পড়াশোনা করে পরবর্তীতে বিজ্ঞান বিভাগ নিয়ে বালুরঘাট ললিত মোহন আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি হয়। নিপাট সহজ, সরল এবং মৃদু ভাষী কৌশিক বরাবরই স্কুলের সকল শিক্ষক-শিক্ষিকাদের কাছে খুবই প্রিয় এবং অনুগত। স্কুলে কৌশিকের এই সাফল্যে খুশির হাওয়া। প্রসঙ্গত নিট পরীক্ষায় সফল হয়ে কৌশিক উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ এবং হাসপাতালে এমবিবিএস পড়ার সুযোগ পেয়েছে। এই প্রসঙ্গে কৌশিকের কাকু পরের ঢালি বলেন, “ কৌশিকের একটা স্বপ্ন ছিল ডাক্তার হওয়ার। সেই স্বপ্ন বাস্তবায়িত হতে চলেছে। পরিবারের সকলে এবং এলাকার মানুষেরাও ওর এই সাফল্যে খুবই খুশী”। কৌশিক ওর এই সাফল্য সম্পকে জানায়, “ খুবই ভালো লাগছে। উচ্চ মাধ্যমিক পাস করার পর আমার কাকুই ডাক্তারি পড়বার বিষয়ে উৎসাহ দিয়েছিল। পাশাপাশি আমিও এই বিষয়ে অনেকটাই কৌতুহলী ছিলাম। মাঝে পোস্ট অফিসে চাকরীর সুযোগ পেলেও আমি আমার নির্দিষ্ট লক্ষ্যে স্থির ছিলাম”। এই বিষয়ে বালাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সুজিত বর্মন বলেন, “স্কুলের কাছে এই খবর অত্যন্ত গর্বের বিষয়। প্রত্যন্ত গ্রামীন এলাকা থেকে পড়াশোনা করে কৌশিক আজ যে ফল করলো, সেটা স্কুলের অন্যান্য ছাত্র-ছাত্রীদের কাছেও অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে। ওদের পড়াশুনাতে আরো উৎসাহিত ও আগ্রহী করে তুলবে”। বালাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক সজল মজুমদার জানান, “ কৌশিক স্কুলে নিয়মিত আসত। অত্যন্ত বিনয়ী, ভদ্র, মেধাবী ছাত্র ছিল। ওকে দেখে বোঝার উপায় ছিল না যে, ওর মধ্যে অসাধারণ প্রতিভা সুপ্ত অবস্থায় রয়েছে। ওর কঠিন অধ্যাবসায় এবং স্থির লক্ষ্য আজকে ওকে ডাক্তারী পড়ার সুযোগ করে দিয়েছে”।
All Rights Reserved © Copyright 2025 | Design & Developed by Webguys Direct