সেখ রিয়াজুদ্দিন ও আজিম সেখ, বোলপুর, আপনজন: তিন দিনের বীরভূম সফরের শেষ দিনে একগুচ্ছ প্রকল্পের উদ্বোধন করেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আজ বুধবার বোলপুর ডাকবাংলো মাঠে জেলার শীর্ষ প্রশাসনিক কর্তাদের উপস্থিতিতে একগুচ্ছ প্রকল্পের শিলান্যাসও করেন মুখ্যমন্ত্রী। বক্তব্যের সূচনাতেই বলেন এই মাটিতে জন্ম আমার। কবিগুরুকে প্রণাম জানিয়ে এবং রবীন্দ্র সঙ্গীতের কথায় বলেন- “গ্রাম ছাড়া ঐ রাঙামাটির পথ আমার মন ভুলায়রে” । এদিন একহাজার কোটি টাকার বেশি প্রকল্পের উদ্বোধন করেন। ময়ুরাক্ষী নদীর উপর নির্মিত সেতুটি সাহিত্যিক তারাশঙ্কর বন্দোপাধ্যায়ের নামানুসারে নামকরণ করা হয়। অনুরূপ নলহাটি সেতুটি মা নলাটেশ্বরী মন্দিরের নামানুসারে নামকরণ করা হয়।জেলায় বিভিন্ন উন্নয়ন মূলক কাজের খতিয়ান তুলে ধরা হয় মঞ্চ থেকে। জয়দেব ঘাট থেকে বর্ধমান যোগাযোগ ব্যবস্থা তথা সেতু নির্মাণের জন্য ১৬৫ কোটি টাকা বরাদ্দ রয়েছে। দুয়ারে সরকার প্রকল্পে তিন লক্ষ বাহাত্তর হাজার ক্যাম্প করা হয়েছে তার মধ্যে ছয় লক্ষ বিরাশি হাজার মানুষ পরিষেবা পেয়ে গেছে। বিশ্ববাংলা ইউনিভার্সিটি, ২৮টি কর্মতীর্থ হয়েছে। পাশাপাশি বক্রেশ্বর, পাথরচাপুড়ি, শ্মশান, জাহেরথান, কবরস্থান ইত্যাদির কাজ হয়েছে। তিনি আরো বলেন মেধাবী ছাত্র-ছাত্রী জন্য মেধাশ্রী, বিশ্বসেরা প্রকল্প কন্যাশ্রী লক্ষ্মী ভান্ডার, স্কলারশিপ ইত্যাদি বিভিন্ন প্রকল্প গুলো চালু হয়েছে এবং এগুলো চলতেই থাকবে বলে তিনি প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। এই মঞ্চে থেকেই তিনি দেউচা পাঁচামি কোল ব্লক এরিয়ার জমিদাতাদের গ্রুপ ডি কনস্টেবল পদের নিয়োগপত্র প্রদান করেন তিনি। জোর করে জমি অধিগ্রহণ করি না। দেওচা পাচামি কোলব্লক এলাকায় কয়েক লক্ষ ছেলে মেয়ের চাকরি হবে। এখানে মোট জমির তথা কয়লা খনির এলাকা ৩৩৭০ একর যারমধ্যে সরকারি এক হাজার একর জমি আছে,বাকি জমির মালিকরা ও জমি দিতে রাজি। দেওচা পাচামির প্রথম পর্যায়ের কাজ শেষ হয়ে গেছে। কোলব্লক ঘিরে চাকরি ঘর স্কুল কর্মসংস্থান থেকে শুরু করে সমস্ত কিছু হবে বলে মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা। ইতিমধ্যে জমি দাতাদের মধ্যে জুনিয়র কনস্টেবল, চতুর্থ শ্রেণীর চাকরি, সহায়ক ভাতা কতজন কি পাচ্ছে তার পরিসংখ্যান দেন।এই মঞ্চ থেকেই সরাসরি কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে একরাশ ক্ষোভ প্রকাশ করেন বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে। আইসিডিএস এর বরাদ্দ সম্পর্কে বলেন কেন্দ্র সরকার আগে ৯০ শতাংশ এবং রাজ্য সরকার দিত ১০ শতাংশ। বর্তমানে কেন্দ্র দিচ্ছে ৬০ শতাংশ এবং রাজ্য দিচ্ছে ৪০ শতাংশ। ১০০ দিনের কাজের টাকা কমিয়ে দিয়েছে। আমাদের টাকা তোমরা আটকে রাখতে পারো না। ১০০ দিনের কাজ করলে সময়মতো টাকা দিতে হবে।বিজেপি শুধু ভোটের সময় ভোট দাও ভোট দাও করে চিৎকার করে। গ্যাসের দাম, দ্রব্যমূল্য আকাশছোঁয়া। কোন কথা রাখতে পারেনি বিজেপি। প্রত্যেকের ব্যাঙ্কের পাশ বইতে পনেরো লক্ষ করে টাকা দেওয়ার কথা। দু কোটি চাকরির প্রতিশ্রুতি সব ভাঁওতা বরং ৪০ শতাংশ চাকরি কমে গেছে। শুধু সেন্ট্রাল টিম পাঠিয়ে দেয়। উত্তর প্রদেশে কতবার পাঠানো হয়েছে? ইডি, ইনকামট্যাক্স, সিবিআই দিয়ে আমাদের লোকদের ধরাচ্ছে, কোথাও এনআই এ ঢোকাচ্ছে। সত্যিকারের চোর ডাকাতদের ধরলে আপত্তি নেই। জিএসটি সম্পর্কে বলেন কেন্দ্র সমস্ত টাকা তুলে নেয় রাজ্য থেকে। পকেট মেরে নিজেদের পকেট ভর্তি করা হচ্ছে। বিজেপি কুৎসাকারী দল। আমাদের পাওনা দিতে হবে আমরা ভিক্ষে চাই না। আমাদের রাজ্যে এন আর সি করতে দেব না।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct