সুব্রত রায়, কলকাতা: সবচেয়ে বড় ধর্ম মানব ধর্ম। বরণীয়দের আদর্শকে পাথেয় করা চলার কথা বুধবার কলকাতার আউটরাম ঘাট থেকে বললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সঙ্গে তুলে ধরলেন রাজ্য সরকারের সাফল্য। শ্রীশ্রী রামকৃষ্ণ পরমহংস দেব, স্বামী বিবেকানন্দ, নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু, রামমোহন রায় থেকে রবি ঠাকুর, নজরুল ইসলামের মত বরেণ্যদের নাম করে এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, সবচেয়ে বড় ধর্ম মানব ধর্ম। তারপরেই পূণ্যার্থীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, সাবধানতার সঙ্গে এবং ধীরে ধীরে গঙ্গাসাগর যাত্রার জন্য। আগুন এবং জলের ঝুঁকি নিয়েও সাবধান করেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই সঙ্গে তাঁর সাবধান বার্তা- প্ররোচনায় পা দেবেন না। তাড়াহুড়ো করবেন না। ধৈর্য ধরুন। এদিন তিনি সতর্ক করেন ভুয়ো খবর সম্পর্কেও। বলেন, বাংলার দুর্নাম হতে দেওয়া যাবে না। পর্যাপ্ত পুলিশ, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন, বিপর্যয় মোবাবিলা বাহিনী, হোমগার্ড, স্থানীয় বাসিন্দারা এই সময় কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করেন। সকলকে এদিন ধন্যবাদ জানান মুখ্যমন্ত্রী।
গঙ্গাসাগরে ৩টি হেলিপ্যাড, গেস্ট হাউস, ফায়ার ব্রিগেড, হাসপাতাল, আলো, সহায়তা কেন্দ্র, ১২০০ বায়ো টয়লেট, তাঁবু, হোগলাপাতার বাড়ি, মেলার জন্য সাজানো সহ যাবতীয় ব্যবস্থার পুঙ্খানুপুঙ্খ তথ্য তুলে ধরেন তিনি। তাঁর বক্তব্যে এবারে বারে বারে শোনা যায় বাংলার ৫ মন্দিরের কথা। উল্লেখ্য, গঙ্গাসাগরে গিয়ে কপিলমুনির আশ্রম, পুণ্যস্নানের পাশাপাশি এবারের অন্যতম দ্রষ্টব্য ‘বাংলার পাঁচ মন্দির’। এদিন তিনি বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগে গঙ্গাসাগরের অবস্থা বেহাল হয়ে পড়েছিল। রাজ্য সরকার উদ্যোগ নিয়ে এই পরিস্থিতির উন্নয়ন করেছে। এই প্রসঙ্গেই বলেন, নতুন করে কপিলমুনির আশ্রম তৈরি করার কথা।
তাঁর বক্তব্যে উঠে আসে তীর্থযাত্রীদের কর মকুবের ‘ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত’ গ্রহণ এবং বাস্তবায়নের কথাও। মেলার দিনগুলিতে মেলায় আগত সকলের জন্য ৫ লক্ষ টাকার বিমার কথাও মনে করিয়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী। এরপরেই বলেন, কুম্ভ মেলা যাবতীয় সাহায্য পায় কেন্দ্রের তবে বাংলার গঙ্গাসাগর মেলার ভার কেন্দ্র বহন করে না, সমস্ত ভার গ্রহণ করেছে রাজ্য। বলেন, অথচ কুম্ভ মেলা যাতায়াত করা যায় ট্রেনেও। গঙ্গাসাগর মেলার পৌঁছতে গেলে তা জল পেরিয়ে অতি সাবধানে যেতে হয়। যারা ইচ্ছে থাকলেও পূণ্যস্নানে যেতে পারছেন না বা কপিলমুনির আশ্রমে পুজো দিতে পারছেন না তাঁদের উদ্দেশ্যে মুখ্যমন্ত্রীর বার্তা, ‘ই স্নান, অনলাইন জল ও প্রসাদের ব্যবস্থা আছে’। এদিন উন্নয়নের খতিয়ান তুলে ধরে অত্যাধুনিক, ঐতিহাসিক এবং ঐতিহ্যের কথা বলতে গিয়ে নবান্ন, বিশ্বমেলা প্রাঙ্গণ, আলিপুর মিউজিয়াম, দিঘা সহ বিভিন্ন উদাহরণ দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর বক্তব্যে উঠে আসে, আড়াইশো কোটি টাকার স্কাইওয়াক প্রসঙ্গ। স্বামী বিবেকানন্দ থেকে ভগিনী নিবেদিতার স্মৃতি বিজড়িত বাড়ি অধিগ্রহণ, সংস্কারের তথ্য তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘সবকিছুই রাজনীতির জন্য নয়’।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct