নিজস্ব প্রতিবেদক, কলকাতা, আপনজন: বুধবার এসএসসির তরফে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় অযোগ্য চাকরিপ্রার্থীদের পুনর্বহালের আবেদন প্রত্যাহার করার অনুমতি চাওয়া হয় কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে । তবে সব দিক খতিয়ে না দেখে আবেদনপত্র প্রত্যাহার করার অনুমতি দিতে চাননি বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। এদিন আবেদন প্রত্যাহার বিষয়টি নিয়ে স্কুল সার্ভিস কমিশনের তীব্র সমালোচনা করে বিচারপতি এজলাসে জানান , -’ স্কুল সার্ভিস কমিশনকে সামনে রেখে নেপথ্যে কেউ কেউ অযোগ্যদের চাকরি বাঁচাতে চাইছেন’। রাজ্যের কিছু ‘দালাল’ মুখপাত্র এবং মন্ত্রীর প্রতিও ক্ষোভপ্রকাশ করেন বিচারপতি । তিনি বলেন, - ‘আমি কিছু দালাল, যারা মুখপাত্র বলে পরিচিত এবং কিছু মন্ত্রীর নাম বলতে পারি, যাঁরা প্রকাশ্যে বলেছেন কারও চাকরি যাবে না।’ আদালত সুত্রে প্রকাশ, গত ২৭ সেপ্টেম্বর এই আবেদনপত্রগুলি দাখিল করেছিল স্কুল সার্ভিস কমিশন। বুধবার মামলার শুনানি পর্বে বিচারপতি জানান -’ এগুলি বেনামী আবেদন। কমিশনকে সামনে রেখে কেউ কেউ খেলছেন’। এর পরই স্কুল সার্ভিস কমিশনের আইনজীবী কে বিচারপতি বলেন, -’ আপনাদের আবেদনে আপনারা লিখেছেন যে, পদচ্যুত শিক্ষকরা ২ থেকে ৪ বছর চাকরি করছেন এবং এদের বিরুদ্ধে কেউ কোনও অভিযোগ দায়ের করেননি। আপনি কি জানেন এই অভিযোগ জানানোর কোনও সংস্থান আছে কি না ? যদি না থাকে, তা হলে কোথায় অভিযোগ জানানো যাবে?’ যদিও স্কুল সার্ভিস কমিশনের আইনজীবী বলেন, ‘আদালতের সামনে যা তথ্য বা নথি পেশ করা হবে, আইনজীবী হিসাবে তার দায়িত্ব আমার।’ তবে এই বক্তব্যে সন্তুষ্ট হয়নি।আদালত। বিচারপতি এদিন নির্দেশ দেন, -’ আবেদনপত্র দাখিল করার সময় যে ফাইল তৈরি হয়েছিল, সেই ফাইল আদালতে পেশ করতে হবে’। পাশাপাশি তিনি জানিয়েদেন অতিরিক্ত শূন্যপদ তৈরির মাধ্যমে অযোগ্যদের চাকরি পেতে তিনি দেবেন না। বুধবার বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, -’ কার নির্দেশে অযোগ্যদের জন্য শূন্যপদ তৈরি করতে চেয়ে আদালতে আবেদন করেছিল স্কুল সার্ভিস কমিশন? কে করল এই বেনামী আবেদন? এটা কার মস্তিষ্কপ্রসূত? আমি তাঁর নাম জানতে চাই। এ ব্যাপারে সিবিআই আজ থেকেই তদন্ত করবে’।এদিন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় এও বলেন, - ‘আমি কিছু দালাল, যাঁরা নিজেদের মুখপাত্র বলছেন, আর কিছু মন্ত্রীর নাম জানি। যাঁরা প্রকাশ্যে বলছেন, কারও চাকরি যাবে না’। দুর্নীতির বিরুদ্ধে যখন এই আদালত লড়াই করছে, তখন আদালত জানতে চাইছে কার নির্দেশে অযোগ্যদের চাকরি দেওয়ার কথা বলা হচ্ছে’।এভাবে ক্ষোভ জানানোর পর বিচারপতি অভিজিত্ গঙ্গোপাধ্যায় নির্দেশ দেন যে, আজ অর্থাৎ বৃহস্পতিবার শিক্ষা সচিব মণীশ জৈনকে আদালতে আসতে হবে। এখন দেখার আজ অর্থাৎ বৃহস্পতিবার কলকাতা হাইকোর্টে শিক্ষা সচিব কি বলেন?
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct