আজ পৃথিবীর দিকে তাকালে মনে হয়, বিশ্ব একটি মানবিক আর্থ-সামাজিক ব্যবস্থা প্রত্যাশা করছে। পৃথিবীতে শান্তি-শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে হলে ঘরে ঘরে, দেশে দেশে, মানুষের কান্না থামাতে গেলে অবশ্যই মানুষকে মানবিক হতে হবে। মানুষ যদি মানবিক না হয়, তাহলে মানুষের পৃথিবী কখনোই সুন্দর ও শান্তিময় হবে না। এই পৃথিবী আমাদের, আমাদের পৃথিবীকে বাসযোগ্য রাখার দায়িত্ব আমাদেরই নিতে হবে। সাম্প্রদায়িকতাবাদ, সন্ত্রাসবাদ, জঙ্গিবাদ, সাম্রাজ্যবাদসহ সব উগ্রপন্থীকে নিশ্চিহ্ন করে পৃথিবীতে শান্তি বজায় রাখতে হবে। বিশ্বজুড়ে নানা অরাজকতা পরিস্থিতি নিয়ে বিশ্লেষণ করেছেন মোনায়েম সরকার ।
পৃথিবী নিজের নিয়মেই পরিবর্তনশীল। মানুষ সেই পরিবর্তন কিছুতেই রোধ করতে পারে না। বিংশ শতাব্দীতে মানুষ চাঁদ-মঙ্গলসহ অন্যান্য গ্রহ-নক্ষত্রের পাশাপাশি মহাবিশ্বের অনেক কিছুই জয় করেছে; কিন্তু প্রকৃতিকে জয় করতে পারেনি। মানুষ ভূমিকম্প, সুনামি, জলোচ্ছ্বাস ও দাবানলের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ এখনো নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হয়নি। মানুষ চেষ্টা করছে এসব নিয়ন্ত্রণ করতে। কবে এসব তার করতলগত হবে, তা ভবিষ্যৎই জানে। আজ পৃথিবীর দিকে তাকালে মনে হয়, বিশ্ব একটি মানবিক আর্থ-সামাজিক ব্যবস্থা প্রত্যাশা করছে। পৃথিবীতে শান্তি-শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে হলে ঘরে ঘরে, দেশে দেশে, মানুষের কান্না থামাতে গেলে অবশ্যই মানুষকে মানবিক হতে হবে। মানুষ যদি মানবিক না হয়, তাহলে মানুষের পৃথিবী কখনোই সুন্দর ও শান্তিময় হবে না। এই পৃথিবী আমাদের, আমাদের পৃথিবীকে বাসযোগ্য রাখার দায়িত্ব আমাদেরই নিতে হবে। সন্ত্রাসবাদ, জঙ্গিবাদ, সাম্রাজ্যবাদসহ সব উগ্রপন্থীকে নিশ্চিহ্ন করে পৃথিবীতে শান্তি বজায় রাখতে হবে। আজ আমরা পৃথিবীর দেশে দেশে কিছু উপদ্রব দেখতে পাচ্ছি। আমরা দেখছি, একটি সম্প্রদায় আরেকটি সম্প্রদায়কে নিশ্চিহ্ন করার জন্য তৎপর হয়ে উঠছে; সংখ্যালঘু নৃগোষ্ঠীকে দমনপীড়ন ও হত্যা করছে সংখ্যাগুরুরা। ধর্মীয় উগ্রবাদীদের কর্মকাণ্ড দেখে আজ সংগত কারণেই মনে প্রশ্ন জাগছে, আমরা কি তাহলে আবার পেছনে ফিরে যাচ্ছি?
আজ আমরা প্রাচ্য-প্রতীচ্য যেদিকেই তাকাই না কেন, সবখানেই মানুষের হাহাকার দেখছি। দিশেহারা মানুষের মিছিল দিন দিন দীর্ঘ হচ্ছে। ক্ষমতাশালীদের প্রতাপে ভেঙে পড়ছে প্রাচীন ঐতিহ্য ও সভ্যতা। মানুষ তার স্বভূমি থেকে হচ্ছে বাস্তুচ্যুত। প্রতিদিনই কোনো না কোনো দেশে আগুন জ্বলে উঠছে। শান্তির পরিবর্তে মানুষ ভোগ করছে মনুষ্যসৃষ্ট ও প্রাকৃতিক শাস্তি। এটা তো হওয়ার কথা ছিল না। তবু হচ্ছে। আমরা কি পারি না সম্মিলিত প্রচেষ্টায় সুন্দর দিন আনতে? মানুষের প্রয়োজনেই মানুষকে সুন্দর ও শান্তির পথ বেছে নিতে হবে। কল্যাণের দায়িত্ব নিতে হবে মানুষকেই। বিগত শতাব্দীতে আমরা দুটি বিশ্বযুদ্ধ প্রত্যক্ষ করেছি। সেই দুটি বিশ্বযুদ্ধে মানবসম্পদ ও প্রাকৃতিক সম্পদের ক্ষয়ক্ষতির কথা নিশ্চয়ই আমাদের স্মরণে আছে। আজ যদি তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ সংঘটিত হয় এবং পারমাণবিক ও জীবাণু অস্ত্রসমৃদ্ধ দেশ সেই যুদ্ধে অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে, তাহলে পৃথিবী মুহূর্তের মধ্যেই ধ্বংস হয়ে যাবে। কিছুতেই আমরা আমাদের পৃথিবীকে ধ্বংস হতে দিতে পারি না। বিজ্ঞান-প্রযুক্তির উৎকর্ষের পাশাপাশি মানবিকবোধ জাগ্রত করতে মানুষকে আরও সচেষ্ট হতে হবে। অশুভ শক্তির পতন ঘটিয়ে পৃথিবীকে বাসযোগ্য করে যাওয়ার অঙ্গীকারে আজ আমাদের সবাইকে আবদ্ধ হতে হবে। তাহলেই মুক্তি মিলবে মানুষের। বর্তমান পৃথিবী এখন একটা নতুন আর্থ-সামাজিক ব্যবস্থার জন্য উন্মুখ হয়ে আছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এককেন্দ্রিক বিশ্বব্যবস্থা কখনো সফল হবে না। সিআইএ, পেন্টাগন, ন্যাটোর সব প্রচেষ্টা আফগানিস্তান, ইরাক, ইরান, সিরিয়াসহ মধ্যপ্রাচ্যের সব দেশে ব্যর্থ হয়েছে। তাদের সৃষ্ট তালেবান, আল কায়দা, আইএসের সঙ্গে আবার তাদেরই যুদ্ধ করতে হচ্ছে। সারা বিশ্বের মানুষ আজ মানবিক বিশ্বব্যবস্থা কামনা করছে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct