আপনজন ডেস্ক: এদিন আইপিএল - ২০২০ এর অতি গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে দুবাই আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হয় কিংস ইলেভেন পাঞ্জাব ও সানরাইজার্স হায়দরাবাদ। ম্যাচ শুরুর আগে লীগ টেবিলের হায়দরাবাদের স্থান ছিল পঞ্চম এবং পাঞ্জাবের ষষ্ঠ। দুটি দলের পয়েন্ট ছিল ৮ করে। আইপিএল ২০২০ এর প্লে-অফের আশা জিইয়ে রাখার জন্য দুটি দলের কাছে এই ম্যাচের দুই পয়েন্ট অতি গুরুত্বপূর্ণ ছিল।
গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচটিতে টসে জিতে আগে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নেয় সানরাইজার্স হায়দরাবাদ অধিনায়ক ডেভিড ওয়ার্নার। টস হেরে ব্যাট করতে নেমে দলীয় ৩৭ রানের মাথায় ১৪ বলে ১৭ রান করে করে আউট হয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরেন মনদীপ সিং। এম্যাচে মায়াঙ্ক আগরওয়ালের পরিবর্তে কিংস ইলেভেন পাঞ্জাবের প্রথম একাদশে জায়গা হয় মনদীপ সিং-এর।
পাওয়ার প্লে-তে পাঞ্জাব এক উইকেট হারিয়ে ৪৭ রান করলেও এরপরে রানের গতি মন্থর হয়ে পড়ে পাঞ্জাবের। হায়দরাবাদের শক্ত বোলিং লাইপ আপের সামনে হাত হাত খুলতেই পারেননি ফর্মে থাকা ক্রিস গেইল, কেএল রাহুল, নিকোলাস পুরাণরা। ইনিংসে ১০ ওভারে শেষ বলে ২০ বলে ২০ রান করে আউট হয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরেন ক্রিস গেইল। পরের ওভারে রাশিদ খানের প্রথম বলেই আউট হন পাঞ্জাব অধিনায়ক কেএল রাহুল। এম্যাচে ২৭ বলে ২৭ রান করেন কেএল রাহুল। ২ চার ও একটি ছক্কা হাঁকান রাহুল।
রাহুল আউট হওয়ার অল্প কিছুক্ষন পড়েই আউট হয়ে মাঠ ছাড়েন গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। পরপর গেইল, রাহুল, ম্যাক্সওয়েলের উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় পাঞ্জাব। এই চাপের প্রভাব দেখা যায় পাঞ্জাবের ইনিংসের শেষ ওভার গুলোতে। চার নম্বরে ব্যাট করতে নেমে ইনিংসে শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকেন নিকোলাস পুরান। তবে পুরানকে হাত খুলতে দেননি হায়দরাবাদের বোলাররা। এম্যাচে ২৮ বলে মাত্র ৩০ রান করেন নিকোলাস পুরান।
শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ১২৬ রান তুলে কিংস ইলেভেন পাঞ্জাব।হায়দরাবাদের বোলারদের মধ্যে এম্যাচে সব চেয়ে সফল হন রাশিদ খান। বল হাতে আরো এক বার ভেলকি দেখান এই আফগান লেগ স্পিনার। ৪ ওভার বল করে মাত্র ১৪ রান দিয়ে দুটি উইকেট নেয় রাশিদ খান। এছাড়া দুটি করে উইকেট নেন সন্দীপ শর্মা ও জেসন হোল্ডার। এই ম্যাচে দুটি উইকেট নেওয়ার সুবাদে আইপিএলে ১০০ উইকেটের মালিক হলেন সন্দীপ শর্মা।
১২৭ রানের ছোটো টার্গেট তাড়া করতে নেমে পাওয়ার প্লে-তেই ঝড় তোলেন সানরাইজার্স হায়দরাবাদের অধিনায়ক ডেভিড ওয়ার্নার এবং তার যথাযথ সঙ্গ দেয় ব্রিটিশ উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান জনি বেয়ারস্টো। কোনো উইকেট না হারিয়ে পাওয়ার প্লে-তে ৫২ রান তুলে হায়দরাবাদ। পাওয়ার প্লে শেষ হতেই ইনিংসে সপ্তম ওভারে দ্বিতীয় বলে আউট হয়ে মাঠ ছাড়েন ডেভিড ওয়ার্নার। এম্যাচে ২০ বলে ৩৫ রান করেন ওয়ার্নার। তিন টি চার ও ২ টি ছক্কা হাঁকান তিনি। ওয়ার্নার আউট হওয়ার পরের ওভারেই আউট হয়ে প্যাভিলিয়ন ফিরেন জনি বেয়ারস্টো ( ২০ বলে ১৯ রান)। এদিন হায়দরাবাদ হয়ে তিন নম্বরে ব্যাট করতে নামেন আব্দুল সামাদ, বেয়ারস্টো আউট হওয়ার এর অল্প কিছুক্ষন পরে তিনিও আউট হয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরেন।
ছোটো টার্গেট তাড়া করতে নেমে পাওয়ার প্লে-তে দুর্দান্ত ভাবে শুরু করলেও পাওয়ার প্লে শেষ হতেই পর পর উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় হায়দরাবাদ। এই চাপের মুখ থেকে দলকে বার করে জয়ের দোরগোড়ায় নিয়ে যান মনীশ পান্ডে ও বিজয় শঙ্কর, তাদের দুইজনের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ ৩৩ রানের প্যার্টনারসিপ গড়ে উঠে। এক সময়ে মনে হচ্ছিল আগের ম্যাচের মতো এই ম্যাচেও এই দুই জনেই হায়দরাবাদের হয়ে ম্যাচ ফিনিস করে মাঠ ছাড়বেন।
দলীয় ১০০ রানের মাথায় তুলে মারতে গিয়ে বাউন্ডারির ধারে ক্যাচ হয়ে মাঠ ছাড়তে হয় মনীশ পান্ডেকে। গত ম্যাচের নায়ক মনীশ পান্ডে এদিন ২৯ বল খেলে মাত্র ১৫ রান করেন। এর কিছুক্ষণ পর বিজয় শঙ্কর ২৭ বলে ২৬ রানের গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস খেলে আউট হয়ে মাঠ ছাড়েন। এরপরে পর পর উইকেট হারাতে থাকে হায়দরাবাদ শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ইনিংসে ১ বল বাকি থাকতেই ১১৪ রানে অল আউট হয়ে যায় সানরাইজার্স হায়দরাবাদ। ফলে ১২ রানে ম্যাচটি নিজেদের নামে করেন পাঞ্জাব, এই ম্যাচ থেকে দুই পয়েন্ট নিয়ে প্লে-অফের আশা জিইয়ে রাখলো পাঞ্জাব।
কিংস ইলেভেন পাঞ্জাবের হয়ে দুর্দান্ত বোলিং করেন তরুন অর্শদীপ সিং ও অভিজ্ঞ ব্রিটিশ পেসার ক্রিস জর্ডন। দুজনেই তিনটি করে উইকেট। এছাড়া একটি করে উইকেট নেন মুরুগান অশ্বিন, রবি বিষ্ণোই এবং মহম্মদ শামি।
মাত্র ১৭ রান দিয়ে তিনটি উইকেট নিয়ে ম্যাচের সেরা ক্রিকেটার নির্বাচিত হয়েছেন ক্রিস জর্ডন।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct