দেবাশীষ পাল, মালদা: ২৬ বছরের অতিথির মৃত্যুতে শোকের ছায়া মালদার ইংলিশ বাজার থানার যদুপুর গ্রামে। ধর্মীয় ভেদাভেদ ভুলে দুই সম্প্রদায়ের মানুষ এক সাথে অতিথির দেহের সৎকার্য করলেও এখন পর্যন্ত গ্রামের কোন মানুষের মন থেকে শোক যায়নি। ১৯৯৭ সালের কোন এক মাসে হঠাৎ দেখা যায় একজন ব্যক্তিকে মালদার ইংলিশ বাজার থানার যদুপুর গ্রামে। না বলতে পারে নিজের নাম, না বলতে পারে বাড়ির ঠিকানা। স্থানীয়রা একাধিকবার তার সঠিক পরিচয় জানার চেষ্টা করলেও সঠিক ঠিকানা না পাওয়ার জন্য সেই সময় থেকে জদুপুর গ্রামেই থেকে যায়। এরপর কয়েক মাস পর শুধু নিজের নাম বলতে পারে এবং তার নাম বলে দুর্গা, কথাবাত্রা হিন্দিতেই বলত। গ্রামের লোকেরা একটি ছোট্ট ঘর করে দেয়। সেখানেই তার আস্তানা গড়ে ওঠে। প্রতিদিন লোকের দেওয়া খাবার খেয়েই তার জীবনযাত্রা এগিয়ে চলে। দুর্গার স্বভাব চরিত্র ছিল স্বাভাবিক, জামাকাপড় থেকে চুল দাড়ি কাটা সম্পূর্ণ দায়িত্ব ছিল গ্রামের লোকজনের উপর।
হঠাৎ কয়েকদিন আগে অসুস্থ হওয়ার কারণে গ্রামবাসীর সহযোগিতায় মালদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে সেখানে চিকিৎসা চলাকালীন মৃত্যু হয়। এই খবর গ্রামে পৌঁছাতে শোকের ছায়া নেমে আসে। মৃতদেহ মালদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে গ্রামে নিয়ে যাওয়া হয় সেখানে মৃতদেহ দেখার ভিড় উপচে পড়ে।
গ্রামের হিন্দু মুসলমান উভয় সম্প্রদায় একত্রে হয়ে ভবঘুরে দুর্গার মৃতদেহ হিন্দু রীতিমতো দাহ করা হয় সদল্লাপুর মহাশ্মশানে। গ্রামের মানুষদের কথায় , পরবর্তীতে হিন্দু শাস্ত্রের মতেই শ্রদ্ধা অনুষ্ঠান উভয় সম্প্রদায় একত্রে মিলেই সৎকার হবে। সেখানে মুসলমানদের সাথে নিয়ে সম্প্রীতি নজির বহাল রাখা হবে বলে গ্রামবাসীরা জানান।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct