আপনজন ডেস্ক: সৌদি আরব সরকার পবিত্র জমজম কূপের ‘পানি’ বিমানে করে নিজেদের দেশে হাজিদের নিয়ে যাওয়ার উপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে এমন এক প্রচার বুধবার বিশ্বজুড়ে তোলপাড় করে দিয়েছে। উল্লেখ্য, পবিত্র কাবা ঘর থেকে মাত্র ২০ মিটার দূরে মসজিদুল হারামের ভিতর অবস্থিত পবিত্র জমজম কূপ। মুসলিমদের কাছে এই কূপ এবং এর পানি অতি পবিত্র। ইসলামের ইতিহাসের সঙ্গে এই কূপ ও এর পানির অকাট্য সম্পর্ক আছে। এর পানিকে মুসলিমরা অতি পবিত্র বলে বিশ্বাস করে পান করেন। পবিত্র হজের সময় এবং অন্যান্য সময় হজ বা উমরাহ করতে যাওয়া মুসলিমরা সঙ্গে করে নিয়ে আসেন এই পানি। কিন্তু সংবাদমাধ্যমগুলি প্রচার করে, সৌদি জেনারেল এভিয়েশন অথরিটি (এসজিএএ) এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানিয়েছে, সৌদি আরব সরকার আব-ই-জমজমের লাগেজে হজযাত্রীদের বহন নিষিদ্ধ করেছে। এয়ারলাইন কোম্পানিগুলোকে আব-ই-জমজম নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত কঠোরভাবে অনুসরণ করতে বলা হয়েছে। না হলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এর আগে প্রত্যেক হজযাত্রীকে ১০ লিটার আব-ই-জমজম আনার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল।
পরে সৌদি সরকার তা কমিয়ে ৫ লিটার করে। এখন তা আনা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। আরও বলা হয়, এতে বলা হয়েছে যে বিমানবন্দর থেকে ছাড়ার সময় ভক্ত এবং যাত্রীরা তাদের চেক-ইন লাগেজে এই পবিত্র জল বহন করতে পারবেন না।এই প্রচারে সারা বিশ্ব জুড়ে মুসলিমদের মধ্যে এর প্রভাব পড়তে শুরু করে। কারণ, পবিত্র হজ যাত্রা শেষে হাজিরা জমজম কূপের ‘পানি’ নিজেদের দেশে নিয়ে যান। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে জমজমরে ‘পানি’ বহন নিষিদ্ধের ঘটনায় ‘আপনজন’ হাতে পায় সৌদি বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ, জেনারেল অথরিটি ফর সিভিল এভিয়েশন (জিজিএসিএ) কর্তৃক জারি করা একটি হজ নির্দেশাবলীর মূল বিজ্ঞপ্তি। ওই বিজ্ঝপ্তির ১১ নম্বর পৃষ্ঠায় ‘সাধারণ নিয়মাবলি ও শর্ত’ শীর্ষক শিরোনামে ৬.৯ নম্বর অনুচ্ছেদে জমজমের পানি বহন সম্পর্কিত নির্দেশাবলির কথা উল্লেখ করা হয়েছে। আর সেটাইরই ভুল ব্যাখ্যা করা হয়েছে। ওই্ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, জিজিএসিএ কর্তৃপক্ষ স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেছে যে জমজমের পানি হজযাত্রীদের “অনুমোদিত পরিমাণ” বহন করার অনুমতি দেওয়া হবে।বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “হজ ও উপমরাহ মন্ত্রণালয়ের বৈদ্যুতিন সেবার উপর ভিত্তি করে অনুমোদিত পরিমাণ এবং পবিত্র মসজিদের তত্ত্বাবধায়কের জমজম প্রকল্প দ্বারা উৎপাদিত পরিমাণ ব্যতীত জমজম থেকে জল বহন করা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, ‘জমজমের পানির কন্টেইনারটি অবশ্যই বিমানবন্দরে প্যাকিং কোম্পানির দ্বারা সঠিকভাবে মোড়ানো উচিত।ফেরিতে জমজমের রসদ নিশ্চিত করতে কর্তৃপক্ষ সব এয়ারলাইন্সকে নির্দেশ দিয়ে বলেছে, হজের মৌসুম শেষ না হওয়া পর্যন্ত বিমানবন্দরে পবিত্র পানি রাখা যাবে না।হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয়ের মতে, যাত্রীরা কেবলমাত্র জমজমের পানির পাঁচ লিটারের একটি ক্ষেত্রে ক্রয় ও পরীক্ষা করতে পারবেন, যা সৌদি বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ কর্তৃক প্রদত্ত উৎপাদিত প্যাকেজিংয়ে প্যাকেজ করা আবশ্যক। আসলে হজ ও উপমরাহ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদিত জমজম পানি ছাড়া বাইরে থেকে কেনা কোনও জমজম পানি বিমানে করে দেশে নিয়ে যাওয়া যাবে না, সেই নির্দেশকেই জমজমরে পানি বহন নিষিদ্ধ বলে প্রচার চালানো হয়েছে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct