আপনজন ডেস্ক: উত্তরপ্রদেশের মাদ্রাসায় পড়াশুনার আগে জাতীয় সঙ্গীত এখন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। উত্তরপ্রদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড কাউন্সিল এ নিয়ে এক সার্কুলার জারি করেছে। এই আদেশ সমস্ত স্বীকৃত, অনুদানপ্রাপ্ত এবং অ-সহায়ক মাদ্রাসার জন্য প্রযোজ্য হবে। ওই সার্কুলারে বলা হয়েছে ক্লাস শুরুর আগে সকালের প্রার্থনার সময় জাতীয় সঙ্গীত বাজানো হবে। রমজান ও ঈদের ছুটি শেষে বৃহস্পতিবার থেকে সব মাদ্রাসা খুলেছে। ১৪ মে থেকে মাদ্রাসায় বোর্ড পরীক্ষা শুরু হচ্ছে। এই সার্কুলার জারি নিয়ে লখনউয়ের দারুল উলুম ফারাঙ্গি মাহালির মুখপাত্র মাওলানা সুফিয়ান নিজামি বলেছেন,‘মাদ্রাসায় জাতীয় সঙ্গীত বাধ্যতামূলক করতে কোনও আপত্তি নেই, তবে মাদ্রাসাগুলিকে বারবার টার্গেট করা হচ্ছে। এই আদেশের ফলে একটাই প্রশ্ন জাগে যে, মাদ্রাসায় জাতীয় সঙ্গীত নেই, পড়াশুনাও নেই। অথচ, প্রতিটি মাদ্রাসায় স্বাধীনতা দিবস কিংবা প্রজাতন্ত্র দিবসে জাতীয় সঙ্গীত গাওয়া হয়।
এ বিষয়ে ইউপির সংখ্যালঘু কল্যাণ মন্ত্রী দানিশ আজাদ বলেন, ‘মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা যখন জাতীয় সঙ্গীত গাইবে, তখন তারা সমাজের মূল্যবোধও জানবে। মাদ্রাসা শিক্ষার উন্নয়নে সরকার কাজ করে যাচ্ছে। এখন মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা গণিত, বিজ্ঞান, কম্পিউটারের পাশাপাশি শাস্ত্রও পড়বে। বেরেলিতে তানজিম উলেমা-ই-ইসলামের জাতীয় সাধারণ সম্পাদক মাওলানা শাহাবুদ্দিন রিজভী বলেছেন ২৬ জানুয়ারি এবং ১৫ আগস্টের মতো বিশেষ অনুষ্ঠানে জাতীয় সংগীত বাজানো হয়। কিন্তু প্রতিদিন তা বাস্তবায়ন করা উচিত নয়। তারপরও আমরা কিছু মনে করি না। আমরা পড়ব, সরকার যদি মনে করে এভাবে দেশের প্রতি ভালোবাসা প্রকাশ পায় তাহলে আমাদের আপত্তি নেই। শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মাদারিস আরাবমান খান বলেন, এতদিন মাদ্রাসাগুলোতে সাধারণত হামদ (আল্লাহর প্রশংসা) ও সালাম (মুহাম্মাদকে সালাম) ক্লাস শুরুর আগে পাঠ করা হতো। কোথাও কোথাও জাতীয় সংগীতও গাওয়া হয়েছিল, তবে এটি বাধ্যতামূলক ছিল না। এখন এটি বাধ্যতামূলক করা হল বর্তমানে, উত্তর প্রদেশে মোট ১৬,৪৬১ টি মাদ্রাসা রয়েছে এবং এর মধ্যে ৫৬০ টি সরকারি অনুদান পায়।
গত ২৪ মার্চ ইউপি মাদ্রাসা শিক্ষা পরিষদের সভায় মাদ্রাসায় জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের সিদ্ধান্ত হয়। এটি বৃহস্পতিবার রেজিস্ট্রার ইন্সপেক্টর এসএন পান্ডে প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছিলেন যে, ২০২২-২৩ সেশনের জন্য স্কুল খোলার পরেই জাতীয় সংগীত পরিচালনা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। মাদ্রাসা বোর্ডের পরীক্ষা শুরু হলে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে।ইউপি মাদ্রাসা বোর্ড পরীক্ষা ১৪ থেকে ২৩ মে অনুষ্ঠিত হবে। লখনউয়ের জেলা সংখ্যালঘু কল্যাণ আধিকারিক জগমোহনের তরফে সমস্ত মাদ্রাসায় পরীক্ষার কর্মসূচি পাঠানো হয়েছে। এতে পরীক্ষার নিয়ম মেনে চলার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
পরীক্ষায় অংশ নেবে এক লাখ ৬২ হাজারের বেশি শিক্ষার্থী , এবার বার্ষিক পরীক্ষায় নিবন্ধন করেছেন এক লাখ ৬২ হাজার ৬৩১ জন শিক্ষার্থী। মাধ্যমিক শ্রেণির পরীক্ষায় শ্রেণিভিত্তিক সর্বোচ্চ ৯১ হাজার ৪৬৭ জন শিক্ষার্থী নিবন্ধন করেছেন। একই সময়ে সিনিয়র মাধ্যমিকে ২৫ হাজার ৯২১ জন, কামিল প্রথম বর্ষে ১৩ হাজার ১৬১ জন শিক্ষার্থী নিবন্ধন করেছেন।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct