আপনজন ডেস্ক: দিল্লি ও হরিদ্বারের সাম্প্রতিক দুটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানে ‘জাতিগত নিধনের’ আহ্বানের বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি এনভি রামানাকে চিঠি লিখে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা জানালেন সুপ্রিম কোর্টের ছিয়াত্তর জন আইনজীবী। যারা এই আহ্বান জানিয়েছিলেন তাদের একটি তালিকার নিজেদের নাম উল্লেখ করে আইনজীবীরা লেখেন, ‘পুলিশের পদক্ষেপের অনুপস্থিতিতে এই ধরনের ঘটনা প্রতিরোধ করার জন্য জরুরি হস্তক্ষেপ প্রয়োজন।’
হরিদ্বার এবং দিল্লির ধর্মীয় কনক্লেভের দিকে ইঙ্গিত করে দুষ্মন্ত দাভে, প্রশান্ত ভূষণ এবং বৃন্দা গ্রোভার, সালমান খুরশিদ এবং পাটনা হাইকোর্টের প্রাক্তন বিচারক অঞ্জনা প্রকাশ সহ বিশিষ্ট আইনজীবীদের স্বাক্ষরিত চিঠিটিতে লেখা হয়, উপরোক্ত ঘটনা এবং এর সময় দেওয়া বক্তৃতাগুলি কেবল ঘৃণামূলক বক্তৃতা নয় বরং একটি সমগ্র সম্প্রদায়কে হত্যার জন্য উন্মুক্ত আহ্বানের সমান। চিঠিতে বলা হয়েছে, এই বক্তৃতা কেবল আমাদের দেশের ঐক্য ও অখণ্ডতার জন্য নয়, লক্ষ লক্ষ মুসলিম নাগরিকের জীবনকেও বিপন্ন করে তুলবে। গণহত্যা এবং মুসলমানদের বিরুদ্ধে অস্ত্র ব্যবহারের উন্মুক্ত আহ্বানের কারণে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ক্ষোভ ও নিন্দার পর হরিদ্বারের ঘটনার চার দিন পর একটি পুলিশ মামলা দায়ের করা হয়, যেখানে মাত্র একজনের নাম উল্লেখ করা হয়। পরে আরও দুটি নাম যুক্ত করা হয় - ধর্ম দাস এবং একজন সাধ্বী অন্নপূর্ণা।
একটি ভিডিওতে ‘সাধ্বী অন্নপূর্ণা’- যাকে পূর্বে পূজা শকুন পাণ্ডে বলা হত তাকে বলতে শোনা যায়, ‘আপনি যদি তাদেরকে শেষ করতে চান, তবে তাদের হত্যা করুন... আমাদের ১০০ জন সৈন্য দরকার যারা জেতার জন্যতাদের ২০ লক্ষকে হত্যা করতে পারে’।
যারা এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল এবং ঘৃণামূলক বক্তৃতা দিয়েছিল তারা দাবি করেছে তারা কোনও ভুল করেনি।
হিন্দু রক্ষা সেনার প্রবোধানন্দ গিরি যাকে উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ ও উত্তরাখণ্ডের পুষ্কর ধামি সহ বিজেপি নেতাদের সাথে প্রায়শই ছবি তুলতে দেখা যায় তিনি যা বলেছেন তাতে তিনি ‘লজ্জিত নন’। এনডিটিভিকে তিনি বলেন, ‘আমি পুলিশকে ভয় পাই না। আমি আমার বক্তব্যের সমর্থনেই আছি।
সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচারিত একটি ভিডিওতে তাকে বলতে শোনা যায়, ‘মায়ানমারের মতো আমাদের পুলিশ, আমাদের রাজনীতিবিদ, আমাদের সেনাবাহিনী এবং প্রত্যেক হিন্দুকে অবশ্যই অস্ত্র তুলে নিয়ে সাফাই অভিযান (জাতিগত নিধন) করতে হবে। অন্য কোনও বিকল্প অবশিষ্ট নেই।’
উল্লেখ্য, পূর্ববর্তী ঘৃণামূলক বক্তৃতার ক্ষেত্রে আইপিসির ১৫৩, ১৫৩এ, ১৫৩বি, ২৯৫এ, ৫০৪, ৫০৬, ১২০বি, ৩৪ এর বিধানঅনুযায়ী কোন কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। সুতরাং, এই ধরনের ঘটনা গুলি প্রতিরোধ করার জন্য জরুরি বিচারিক হস্তক্ষেপ প্রয়োজন যা দিনের আদেশ হয়ে উঠেছে বলে মনে করেন আবেদনকারী আইনজীবীরা। আরও উল্লেখ করেছে যে এটির উপর বেশ কয়েকটি আবেদন দায়ের করা হয়েছে এবং আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। আইনজীবীরা আর্জি জানান, আমরা আপনারকে চিঠি লিখছি রাষ্ট্রের বিচার বিভাগীয় শাখার প্রধান হিসাবে আপনার পক্ষ থেকে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আশায়।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct