বাবলু হাসান লস্কর, কুলতলি: স্বাস্থ্যের অধিকার নাগরিকের মৌলিক অধিকার। এই অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলছেন পিছিয়ে পড়া তফসিলি কুলতলি বিধানসভার মানুষজন। শহর থেকে পঞ্চাশ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত সুন্দরবনের প্রবেশ দ্বার কুলতলি ব্লক।এই ব্লকের অধিন মৈপিট কোষ্টাল থানার ভূবেনেশ্বরী প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র টি দীর্ঘদিন বেহাল অবস্থায়, অপর দিকে গোপালগঞ্জ অঞ্চলের কৈখালী রামকৃষ্ণ সহায়ক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র টি,কোটি কোটি টাকা খরচ করে নির্মাণ করা হলেও আজ তার চারি দিকে ঘাসের ও নোংরা স্তুপ এর উপর দাড়িয়ে আছে। কোথাও বা রিপেয়ারিং অভাবে তা খসে খসে ঝরে পড়ছে। ডাক্তার বাবু নার্স ফার্মাসিস্ট সবই খাতা কলমে থাকলেও দেখা পাওয়া দুষ্কর।অধিকাংশ চিকিৎসা সরঞ্জাম- যন্ত্রাংশ নষ্ট হয়ে গেছে কিম্বা হাসপাতাল থেকে খোওয়া গেছে। অপরদিকে দেউলবাড়ী দেবীপুরের কাঁটামারী প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র টি নবরূপে সজ্জিত হলেও সেখানে ডাক্তারবাবুদের দেখা মেলা ভার। এলাকার মানুষ জন দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন জায়গায় দরবার করলেও প্রাথমিক পরিষেবা টুকু সঠিক ভাবে পাওয়া সম্ভব হচ্ছেনা এই মুহূর্তে। মৈপিঠ কোস্টাল থানার গঙ্গার ঘাট সংলগ্ন এলাকার মানুষজন প্রাথমিক চিকিৎসার জন্যে আসতে হয় প্রায় ৩৩ কিলোমিটারের অধিক পথ পরিক্রম করে কুলতলির জয়নগর গ্রামীণ হাসপাতালে। আর সেখানে স্পেশালিস্ট গাইনি চিকিৎসক না থাকায় অধিকাংশ গর্ভবতী মাকে প্রসবের জন্য জেলা হাসপাতালে স্থানান্তরিত করতে হয়। জয়নগর গ্রামীণ হাসপাতালে নরমাল ডেলিভারি হলেও সিজারের জন্য জেলা হাসপাতালে গর্ভবতী মায়েদের পাঠিয়ে দেয়, এতে গর্ভবতী মায়ের অবস্থার অবনতি হলে পরিবারের লোকজন নিকটবর্তী বেসরকারি নার্সিং হোম গুলিতে ভর্তি করে।আর সেই সুবাদে তারা ঐ সমস্ত গর্ভবতী কিংবা প্রসূতি মায়েদের কাছ থেকে ব্যাপক অঙ্কের টাকা আদায় করে। জয়নগর গ্রামীণ হাসপাতাল যেখানে প্রতিদিন তিন শতাধিক বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে আসে, সেখানে একটি মাত্র ডাক্তারের কাছ থেকে পরিষেবা নিতে হয়। অপরদিকে তড়িঘড়ি জরুরী চিকিৎসা নিতে নুন আনতে পান্তা ফুরানো দারিদ্র সীমার নিচে বসবাসকারী পরিবার গুলির কাছে নার্সিংহোমের মালিক চাপিয়ে দেয় অধিক পরিমাণে টাকার বোঝা। নার্সিংহোমের বিল মেটাতে জমিজমা সোনা গয়না এমনকি অধিক চড়া সুদে টাকা ধারে নিতে হয় তাদের। কাছাকাছি সরকারী স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ঠিক মতো পরিষেবা না পাওয়া সুন্দরবনের প্রত্যন্ত এলাকার সাপে কামড়ানো রুগি,বাঘে আক্রান্ত রুগী খুবই অল্প সময়েই চিকিৎসা করা দরকার তা না হলে বিপদ বাড়ে মৃত্যু পর্যন্ত ঘটতে পারে। কারন জয়নগর রুরাল হাসপাতালে যেতে রেতে রুগীর মরণাপন্ন অবস্থা হয়ে যায়। মানুষের স্বাস্থ্যের মৌলিক অধিকার অথচ সুন্দরবন বাসী বঞ্চিত হচ্ছে স্বাস্থ্যের বেহাল দশা জন্যে। মানবাধিকার সংগঠন এপিডিআর সহ গণসংগঠন গুলি দাবি জানায়
অবিলম্বে কুলতলিতে মডেল হাসপাতাল চালু হউক এমনই প্রত্যাশা দিন গুনছে কুলতলিবাসী।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct