আপনজন ডেস্ক: মায়ানমারে সুকির দল ক্ষমতায় আসার পর মায়ানমার থেকে শুরু হয় রোহিঙ্গা নিধনযজ্ঞ। বাংলাদেশসহ আশপাশের বেশ কয়েকটি দেশে পালিয়ে যায় এসব সংখ্যালঘু মুসলিমরা। তবে ক্ষমতায় থাকা ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসির কয়েকজন নেতাসহ সামরিক বাহিনীর হাতে দলের চেয়ারপারসন অং সান সু কি আটক হওয়ার পর রোহিঙ্গাদের উদ্দেশ করে মায়ানমারে সেনাবিরোধী জাতীয় ঐক্য সরকার বা ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্ট (এনইউজি) নামে একটি দল বলছে, সামরিক সরকারকে উৎখাত করে ক্ষমতায় যেতে পারলে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সসম্মানে ফিরিয়ে নিয়ে তাদের নাগরিকত্বের স্বীকৃতি দেওয়া হবে।
বৃহস্পতিবার টুইটারে দলটির পক্ষে রাতে তিন পাতার একটি বিবৃতি প্রকাশ করা হয়। সেখানে বাংলাদেশসহ প্রতিবেশী দেশগুলোতে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সসম্মানে দেশে ফিরিয়ে নিয়ে নাগরিকত্বের স্বীকৃতি দেওয়া হবে বলে ঘোষণা দেওয়া হয়। ওই বিবৃতিতে মায়ানমারে বিদ্যমান ১৯৮২ সালের বিতর্কিত নাগরিকত্ব আইন সংশোধন করে দেশে বা বিশ্বের যেকোনো স্থানে জন্ম নেওয়া মায়ানমার নাগরিকদের সন্তানদের পূর্ণ নাগরিকত্ব দানের অঙ্গীকার করেছে এনইউজি। তাই, রোহিঙ্গা সংখ্যালঘুদের ভবিষ্যত গণতান্ত্রিক মায়ানমারে নিপীড়িত মুসলিম সম্প্রদায়ের নাগরিকত্ব এবং প্রত্যাবাসন প্রতিশ্রুতি দিয়ে জান্তা উৎখাতের সহায়তা করার আহ্বান দেশটির ছায়া সরকার এনইউজি।
বিবৃতিতে এনইউজি বলেছে, আমরা রোহিঙ্গাদের সামরিক একনায়কতন্ত্রের বিরুদ্ধে এই আন্দলনে অংশ নিতে আমাদের এবং অন্যদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে কাজ করার আমন্ত্রণ জানাই। আরো বলা হয়, সু কির এনএলডি সরকার বৌদ্ধ সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশে জাতিগত গোষ্ঠীর সংবেদনশীলতার কারণে ‘রোহিঙ্গা’ শব্দটি এড়িয়ে গিয়েছিল, সংখ্যালঘু রাখাইনে বসবাসকারী মুসলমান হিসাবে উল্লেখ করতেন সু চি সরকারের নেতারা।
এনইউজির বিবৃতিতে আরো বলা হয়েছে, রোহিঙ্গাদের ওপর সামরিক বাহিনীর সহিংসতা ও চরম মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং গত কয়েক দশক ধরে রাখাইনে চলা সহিংসতায় লাখ লাখ মানুষ ঘরছাড়া হওয়ার বিষয়টি খুব ভালোভাবে বোঝে জাতীয় ঐক্য সরকার। আমরা এর জন্য গভীরভাব দুঃখিত। আজ সামরিক বাহিনীর নৃশংসতার শিকার মায়ানমারের সকল মানুষ রোহিঙ্গাদের দুর্দশার প্রতি সহানুভিূতিশীল। রোহিঙ্গাসহ মায়ানমারের সকল মানুষের ওপর সামরিক বাহিনী যেসব অপরাধ করেছে, আমরা তার ন্যায়বিচার ও জবাবদিহি চাইব। রোহিঙ্গা ও অন্যান্য সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে মায়ানমারে সংঘটিত অপরাধের বিষয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের এখতিয়ার প্রদানে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সুচি ও তার নেতাদের গ্রেপ্তারের পর সামরিক জান্তা সরকারে গেলে এনএলডির বেশিরভাগ রাজনীতিবিদ জাতীয় ঐক্য সরকার (এনইউজি) নাম দিয়ে এটিকেই মায়ানমারের বৈধ সরকার বলে দাবি করেন। দলটিকে ‘সন্ত্রাসী’ ঘোষণা দিয়ে মায়ানমার জান্তা বলেছে, এর সঙ্গে সম্পৃক্ততা রাখলে যে কেউই গ্রেপ্তার হতে পারে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct