আপনজন ডেস্ক: উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের খাস তালুক গোরক্ষপুরের গোরক্ষনাথ মঠ ও মন্দির লাগোয়া এলাকা এবার সংখ্যালঘু মুক্ত করতে উঠেপড়ে লেগেছে যোগী সরকার। ‘নিরাপত্তা’ নিশ্চিত করার যুক্তি দেখিয়ে গোরক্ষনাথ মঠ ও মন্দির লাগোয়া ১১টি মুসলিম পরিবারকে বাড়ি ও সম্পত্তি খালি করার নোটিশ পাঠিয়েছে। জেলা প্রশাসন চাপ সৃষ্টি করে এই পরিবারগুলোকে চুক্তিপত্রে সই করিয়েছে বলে অভিযোগে উঠেছে।
সরকারি সূত্রে খবর, ইতিমধ্যেই ১০টি পরিবার গত ২ মে চুক্তিপত্রে সই করতে বাধ্য হয়। তবে বেঁকে বসেছে একটি পরিবার। যদিও এবিষয়ে গোরক্ষপুরের জেলাশাসক বীজেন্দ্র পান্ডিয়া বলেন, কাউকেই জোর করে চুক্তিপত্রে সই করানো হয়নি। চাইলেই তারা এই চুক্তি থেকে সরে দাঁড়াতে পারেন। তবে চুক্তিপত্র মেনে সম্পত্তি খালি করলে কয়েক কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দেয়া হবে বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে।
প্রশাসন সূত্রে দাবি করা হচ্ছে, মন্দিরের ‘নিরাপত্তা’ রক্ষায় নতুন একটি পুলিস পোস্ট তৈরির সিদ্ধান্ত হয়েছে। সেই সূত্রেই মন্দিরের উত্তর-পূর্ব দিকে সদর এলাকার ১১টি পরিবারকে বাড়ি খালি করে উঠে যাওয়ার এই নোটিশ দেয়া হয়েছে। গোরক্ষনাথ মঠ ও মন্দির লাগোয়া এলাকায় গুটিকযেক মাত্র সংখ্যালঘু পরিবার বাস করে। এই এলাকার বেশিরভাগ বাসিন্দাই হিন্দু সম্প্রদায়ের। অথচ, সেই সব পরবিারের মধ্যে কাউকে উচ্ছেদের নোটিশ দেওয়া হয়নি। উত্তরপ্রদেশের সরকারের কাছে মনে হযেছে নিরাপত্তার জন্য বিপদ হযে উঠেতে পারে শুধু মুসলিম পরিবারগুলোই। তাইম বাস্তব ব্যাপার হল কোনও গোরক্ষনাথ মঠ ও মন্দির লাগোয়া কোনও হিন্দু পরিবরাকে উচ্ছেদের নোটিশ দেওয়া না হলেও যে ১১টি পরিবারকে নোটিম দেওযা হয়েছে তাদের সবাই কিন্তু সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ভুক্ত।
এর ফলে তৈরি হয়েছে জোর বিতর্ক। উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, গোরক্ষনাথ মঠ ও মন্দিরের প্রধান হলেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। প্রশাসনের বিরুদ্ধে চাপ তৈরির অভিযোগ উঠলেও এবিষয়ে প্রকাশ্যে মুখ খুলতে নারাজ বেশিরভাগ পরিবারই। তবে এবিষয়ে মুখ খুলেছেন জাভেদ আখতার নামে এক ব্যক্তি। তার বক্তব্য, সরকারের চাপের মুখে পড়েই চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর করতে বাধ্য হয়েছি। বাকিরাও একই কারণে সম্পত্তি ছেড়ে উঠে যেতে রাজি হয়েছেন। রেলের অবসরপ্রাপ্ত ইঞ্জিনিয়ার আখতার বলেন, মন্দিরের ‘নিরাপত্তা’র অছিলায় আমাদের সম্পত্তি কেড়ে নেয়া হচ্ছে। ১০০ বছরেরও বেশি সময় ধরে এখানে আমাদের বসবাস। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় আগে থেকেই এই এলাকায় দু’টি থানা রয়েছে। এখানে আমাদের বসবাসের সঙ্গে মন্দিরের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার সম্পর্ক কী?
অন্যদিকে, দিল্লি ভি্িত্ক এক নিউজ পোর্টালের সাংবাদিক মাসিউজ্জামান জাতীয় মানবাধিকার কমিশনে অভিযোগ জানিয়েছেন, গোরক্ষপুরের জেলাশাসক তাকে হুমকি দিচ্ছেন যদি গোরক্ষনাথ মঠ ও মন্দির লাগোয়া এলাকায় সংখ্যালঘুদের উচ্ছেদের খবর করা হয় তাহলে তাকে এনএসএ আইনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct